শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৭

'দারুণ অগ্নিবাণে রে   হৃদয় তৃষায় হানে রে॥
     রজনী নিদ্রাহীন,   দীর্ঘ দগ্ধ দিন
              আরাম নাহি যে জানে রে॥
     শুষ্ক কাননশাখে   ক্লান্ত কপোত ডাকে
              করুণ কাতর গানে রে॥
ভয় নাহি, ভয় নাহি।   গগনে রয়েছি চাহি।
     জানি ঝঞ্ঝার বেশে   দিবে দেখা তুমি এসে
              একদা তাপিত প্রাণে রে॥'   ----- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর                                                                             

সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৭

সূর্যমুখী





এক দুপুর তোমার অলংকার হতে চায়,
আঁকতে চায় আলো আঁধারের ছবি তোমার অতুল্য মায়ায়,
তুমি কি সেই প্রহর কেটে রওশনের ছোঁয়া নেবে?
তুমি কি এই রোদ্র ঢেউয়ে স্নান করবে?
কত আর কিরন কাঁদন,
কত আর চিকন বেদন,
বাঁধন বেঁধে আর ও চোখে লুকোচুরি জল রেখো না,
তুমি যে দিকেই চোখ রাখো ঝরনা দেখো না।
শোনো হে সূর্যমুখী,
আবার সোনালী ছোঁয়া রূপকৌটো আঁখিতে সুরমা এঁকো,
যেন এক দুপুর রোদ এসে থেমে যায় পলক শেষে,
ঝলকে কথা বলবে কী?
বলোনা সূর্যমুখী। -------- আশরাফুন নাহার


সূর্যমুখী একধরণের একবর্ষী ফুলগাছ। সূর্যমুখী গাছ লম্বায় ৩ মিটার (৯.৮ ফু) হয়ে থাকে, ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত হয়। এই ফুল দেখতে কিছুটা সূর্যের মত এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে এর এরূপ নামকরণ।
এর বীজ হাঁস মুরগির খাদ্যরূপে ও তেলের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই বীজ যন্ত্রে মাড়াই করে তেল বের করা হয় ৷ তেলের উৎস হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সূর্যমুখীর ব্যাপক চাষ হয়। সমভুমি এলাকায় শীত ও বসন্তকালে, উঁচু লালমাটি এলাকায় বর্ষাকালে ও সমুদ্রকুলবর্তী এলাকায় শীতকালীন শস্য হিসাবে চাষ করা হয়।
সূর্যমুখীর তেল ঘিয়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা বনস্পতি তেল নামে পরিচিত। এই তেল অন্যান্য রান্নার তেল হতে ভাল এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত কম। এছাড়া এতে ভিটামিন এ, ডি ও ই রয়েছে।
 এর রূপে রয়েছে চোখ জুড়ানো ভালোলাগা …..  প্রতিটি ফুল সূর্যের দিকে তাকিয়ে, কোনটি যেন গ্রীবা উঁচিয়ে, কোনটি উঁকি মেরে, কোনটি ঘাড় ফিরিয়ে দেখছে প্রিয়তমকে। হলুদ আর হলুদ, সূর্যমুখী রঙ দেখে মনে হয় কেউ এসে  রঙ ছিটিয়ে দিয়েছে। সূর্যমুখী ফুলের চাষ লাভজনক একটি লাভজনক প্রকল্প হিসেবে এখন গণ্য করা হয়। যদি কোনো প্রাকৃতিক কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তাই, অনেকই সূর্যমুখী ফুলের চাষের দিকে ঝুঁকেছে। আগে সূর্যমুখীর চাষ খুব একটা জনপ্রিয় ছিল না। এখন রবি মৌসুমে নভেম্বর থেকে মধ্য ডিসেম্বর পর্যন্ত সূর্যমুখী চাষ করলে ভাল ফলন হয়। তা ছাড়া এপ্রিল-মে মাসে এবং আগষ্ট-সেপ্টেম্বর মাসেও ভাল ফলন পাওয়া যায়। অতিবৃষ্টি সূর্যমুখী চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। অলটারনেরিয়া লিফ ব্রাইট নামক এক ধরনের রোগ এই ফসলের অনেকসময় ক্ষতি করে থাকে। সাধারণত সূর্যমুখী রোগ-বালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয়। সেই দিক থেকে সূর্যমুখী চাষ ঝুঁকিপূর্ণ নয়, লাভজনক। সূর্যমুখী ফুলের বড় শত্রু টিয়া পাখি, পরিপক্ক বীজ খেয়ে একেবারে শেষ করে ফেলে। তাই, পাখির আক্রমণ থেকে ফুলকে রক্ষার জন্য সতর্ক থাকতে হয়।


"জানে সূর্যরে পাবেনা
তবু অবুঝ সূর্যমুখী
চেয়ে চেয়ে দেখে তার দেবতারে
দেখিয়াই সে যে সুখি"