বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৭

উদ্ভিদ জগতের বকচ্ছপ বা কিমেরা (ভেরিগেটেড গাছ) ঃ-


.
ইদানিং বেশ কিছুদিন ধরে দেখছি ভেরিগেটেড গাছের খুব চাহিদা।এই ভেরিগেটেড সম্পর্কে আলোচনার জন্যই এ প্রবন্ধের অবতারনা।
ছেলেবেলায় শুনেছি অগ্নি উদ্গীরণকারী প্রাণী কিমেরা-র গল্প। গ্রীক পুরাণের এক দানব প্রানী এই কিমেরা যার মুখ সিংহের, দেহ ছাগলের আর লেজ সাপের মতো।
ছেলেবেলায় সুকমার রায় এর 'আবোল তাবোল' হাতে পেতেই পড়ে ফেললাম বকচ্ছপ,হাতিমি ও অন্যান্য অদ্ভুত প্রাণিদের কথা।
ট্যাঁশ্ গরু গরু নয়, আসলেতে পাখি সে;
যার খুশি দেখে এস হারুদের আফিসে।
চোখ দুটি ঢুলু ঢুলু, মুখখান মস্ত,
ফিট্‌ফাট্ কালোচুলে টেরিকাটা চোস্ত।
তিন-বাঁকা শিং তার ল্যাজখানি প্যাঁচান-
একটুকু ছোঁও যদি, বাপরে কি চ্যাঁচান!
লট্খটে হাড়গোড় খট্‌খট্ ন'ড়ে যায়,
ধম্‌কালে ল্যাগ্‌ব্যাগ চমকিয়ে প'ড়ে যায়।
বর্ণিতে রূপ গুণ সাধ্য কি কবিতার,
চেহারার কি বাহার- ঐ দেখ ছবি তার।
ট্যাঁশ্ গরু খাবি খায় ঠ্যাস্ দিয়ে দেয়ালে,
মাঝে মাঝে কেঁদে ফেলে না জানি কি খেয়ালে ;
মাঝে মাঝে তেড়ে ওঠে, মাঝে মাঝে রেগে যায়,
মাঝে মাঝে কুপোকাৎ দাঁতে দাঁত লেগে যায়।
খায় না সে দানাপানি- ঘাস পাতা বিচালি
খায় না সে ছোলা ছাতু ময়দা কি পিঠালি;
রুচি নাই আমিষেতে, রুচি নাই পায়েসে
সাবানের সুপ আর মোমবাতি খায় সে।
আর কিছু খেলে তার কাশি ওঠে খক্‌খক্,
সারা গায়ে ঘিন্ ঘিন্ ঠ্যাং কাঁপে ঠক্‌ঠক্।
একদিন খেয়েছিল ন্যাকড়ার ফালি সে-
তিন মাস আধমরা শুয়েছিল বালিশে।
কারো যদি শখ্ থাকে ট্যাঁশ গরু কিনতে ,
সস্তায় দিতে পারি,দেখ ভেবে চিন্তে।'
মনে আছে ,এই ছড়া পরেই বাবার কাছে বায়না ধরেছিলাম,ট্যাঁস গরু কিনে দেবার জন্য । 'হারু কাকু' আপিস নিশ্চয়ই বাবার আপিসের কাছাকাছি ই হবে , অন্তত সেখানে গিয়ে ট্যাঁস গরুটা দেখে আসার খুব ই ইচ্ছে ছিল ।😀😁😁
আজ এই প্রবন্ধ লিখতে বসে একা একাই হাসছি সেদিনের কথা ভেবে ।
এই গল্পের আসল উদ্দেশ্য হল, উদ্ভিদ জগতের সাথে এই কিমেরার এক সাদৃশ্য তৈরি করা। একটি কিমেরা-প্রাণি যেমন কয়েকটি ভিন্ন প্রাণির দেহের সমন্বয়ে তৈরি, একটি কিমেরা-গাছও তেমনি দুই বা ততোধিক ভিন্ন টিস্যু দিয়ে গঠিত। যে কারণে আমরা দেখতে পাই একই প্রজাতির গাছের পাতায় নিরেট সবুজের পরিবর্তে এক ভিন্ন রূপ, যাতে দেখা যায় শাদা-হলুদ আর সবুজের অদ্ভুত মিশ্রণ।
বাগান ছাড়াও শহুরে রাস্তার আয়ল্যান্ডে আমাদের চোখে পড়ে এ ধরনের কিমেরা গাছ বিশেষ করে বেনজামিনা বট আর টগর। এদের আমরা সাধারণভাবে ইংরাজিতে বলি ভেরিয়েগেটেড প্ল্যান্ট (Variegated Plant) আর বাংলায় বলি বিচিত্র গাছ যেমন, বিচিত্র বকুল। প্রকৃত প্রস্তাবে এগুলো কিমেরা গাছ। এদের অধিকাংশেরই কিনারা থাকে শাদা আর ভেতরটা সবুজ। কিন্তু কখনো এমন কিছু পাতাও দেখা যায় যা ঠিক এর উলটো, কিনারা সবুজ আর ভেতরটা শাদা। মজার ব্যাপার হল, একই প্রজাতির একটি গাছে এমন দু-ধরনের পত্র-বৈচিত্রই দেখতে পাওয়া যায়, শাদার ভেতরে সবুজ এবং সবুজের ভেতরে শাদা। এর নাম জাপানি টাকু। এক সময় এই ক্ষুদ্র গাছের কাণ্ড থেকে তৈরি হত উল জড়ানো টাকু যে কারণে এই নাম। নিচে জাপানি টাকু-র বিচিত্র প্রজাতির দুটি ছবি দেয়া গেল।
একটি শাদা-সবুজ বিচিত্র পাতার নক্সা কেমন হবে তা নির্ভর করে কোথায় কোন অঞ্চল থেকে এর মিউটেশান হয়েছে বা সহজ ভাষায় বলা যায়, কোষ-রূপান্তর ঘটেছে। গাছের ওপরের দিকের বৃদ্ধি হয় গাছের ডগায় যেখানে থাকে ভাজক-কলা, যা খুব দ্রুত কোষ বিভাজন করে গাছকে বড় করে তোলে। এসব ভাজক-কলার বাইরের স্তরের কোষগুলি পাতার উপরিভাগ আর কিনারা নির্মানের জন্যে দায়ী, আর ভেতরের দিকের কোষ পাতার বাকি অংশের জন্যে। যদি বাইরের কোষে মিউটেশান হয় তাহলে কিনারা হবে ক্লোরোফিলশূন্য শাদা, আর ভেতরটা হবে সবুজ, ক্লোরোফিলময়। আর ভেতরের কোষে রূপান্তর হলে কিনারা হবে সবুজ, আর ভেতরটা শাদা। এই বৈচিত্র যে কেবল পাতায় থাকতে পারে তা নয়, কাণ্ডেও দেখা যেতে পারে এর প্রভাব, যেমন বিচিত্র ইক্ষু। কালে কস্মিনে ফলে বা হঠাৎ বীজেও দেখা যেতে পারে এই বিচিত্রতা।
কিন্তু কিমেরাসম্ভূত শুধু শাদা বা হলুদ রঙের জন্যে পত্র-বৈচিত্র নয়, বিস্তৃত চিন্তায় আরো কিছু কারণেও বৈচিত্র দেখা দিতে পারে গাছে। এলুমিনাম প্ল্যান্টের পাতার ওপরে একটু ফুলো দেখা যায়। এর কারণ সবুজ ক্লোরোফিল-এর ওপরে একটি স্বচ্ছ স্তর থাকে যার ভেতরে থাকে বায়ুস্তর। এই বাইরের স্তরের ওপর সূর্যের আলো পড়লে তা প্রতিফলিত আর প্রতিসরিত হয়ে রূপালি রঙ ধারণ করে। পাতায় রূপালি রঙ তৈরি হবার জন্যে অবশ্য আরো কারণ থাকতে পারে যেমন, ইন্ডোর পান্ডা প্ল্যান্টের পাতায় সূক্ষ্ম এবং স্বচ্ছ রোম থাকে যার ওপর রোদের আলো পড়লে রূপালি রঙ ঝিকমিক করে ওঠে। কলেরেডো স্প্রুস-এর পাতা রূপালি দেখায় কারণ সূঁচের মতো সরু পাতার গায়ে মোম জড়ানো থাকে এদের। তবে যে কারণেই পাতাকে রূপালি দেখাক না কেন, গাছের পাতার ভেতরে এমনিতে কিন্তু কোনো রূপালি রঙ মজুদ থাকে না। পাতায় অন্যান্য যে সব রঙ থাকে তার ভেতরে আছে এন্থোসায়ানিন, ক্যারোটিনয়েড, জ্যান্থোফিল ইত্যাদি। এক ধরণের খলিফা গাছ বা Acalypha-র শাদা অংশের ওপরে লাল-গোলাপি এন্থোসায়ানিন রঙ বিস্তৃত হয়ে পড়লে শাদা অংশ গোলাপি দেখায় আর সবুজ অংশ দেখা যায় মেরুন রঙের। রঙিন বৈচিত্রের একটি সুন্দর উদাহরণ হল বেগোনিয়া যার রোমশ হুল থেকে বিচিত্র রঙ দেখা দেয়।
গাছের শাদা অংশের ওপর হলুদ জ্যান্থোফিল রঙ থাকে এক ধরনের প্রতিরক্ষার জন্যে কারণ শাদা অঙ্গ সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে নষ্ট হতে পারে। জ্যান্থোফিল কোষে কিছুটা আলোকরশ্মি শোষিত হয় বলে সালোকসংশ্লেষণ হয়। আউটডোরে যেসব ভেরিয়েগেটা গাছ দেখা যায়, যেমন বিচিত্র মন্দিরা তাদের শিরা-উপশিরার শাদা অংশের জায়গায় হলুদ রঙ দেখা যায়। উদ্ভিদের সামগ্রিক রঙ-বৈচিত্রের কথা ভাবলে বিচিত্র উদ্ভিদজগতকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, এলবিনো বৈচিত্র এবং রঙিন বৈচিত্র। মূলত সবুজকণাশূন্য এলবিনোর সঙ্গেই সম্পর্ক আলোচিত কিমেরা গাছের, রঙিনের সঙ্গে নয়।
একটি অদ্ভুত ব্যাপার হল, রোগের কারণেও কিন্তু অনেক সময় গাছে ভেরিয়েগেশন দেখা দিতে পারে। এতে অনেক ক্ষেত্রে গাছের কোনো ক্ষতিও তেমন চোখে পড়ে না। ১৭ দশ শতকে টিউলিপ-এর একটি প্রজাতির জন্যে লোকজন পাগল ছিল যা মূলত ছিল একপ্রকার মোজেইক ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত গাছ। ঢাকার রাস্তায় আয়ল্যান্ডে আমি কিছু টগর গাছ দেখেছি যা সুস্থ টগরের মতো নয় কিন্তু সহজে বোঝার উপায় নেই সেগুলি রোগগ্রস্ত। ইসরাইলে টগর গাছে এক ধরনের টোবামোভাইরাস দেখা দিয়েছিলো এক যুগ আগে। ভয় হয় সেই রোগ আবার ছড়িয়ে পড়ছে না কি আমাদের টগরে, সিলেটে যার আদুরে নাম দুধফুল। আমাদের দেশের শিমের পাতাও এমন ‘বিন ইয়েলো মোজেইক ভাইরাস’-এ আক্রান্ত হয় কখনো যার বিস্তার ঘটে এফিডের মাধ্যমে। এতে পাতার অঞ্চল এমন সমানভাবে ভেরিয়েগেটা হয় যে মনে হয় ভিন্ন কোনো প্রজাতি বা উপপ্রজাতির গাছ। আমরা আর কি বলবো, এই ভুল করেছেন আমেরিকার খ্যাতনামা ট্যাক্সোনমিস্টরাও, তারাও মোজেইক ভাইরাসে আক্রান্ত গাছকে ভেবেছেন নতুন কোনো কাল্টিভার বা আবাদ করা শস্য।
যে সব গাছের পাতা বিচিত্র হয়, মূলত শাদা এলবিনো অংশের কারণে, সেসব গাছ স্বভাবতই কিছুটা দুর্বল হয়, কারণ শাদা অংশে ক্লোরোফিলের অভাবে খাদ্য উৎপন্ন হয় না। পুষ্টির অভাবে এসব গাছ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং গাছে ফুলও ধরে কম। এ ধরনের গাছ বেশিরভাগ দেখা যায় ইনডোরে যেখানে আউটডোরের তীব্র সূর্যালোকে শাদা অংশ জ্বলে যাবার সম্ভাবনা থাকে না। মূলত সারা পৃথিবীতে ইন্ডোরের অধিকাংশ গাছ এসেছে আমাজনের বর্ষাবন থেকে। বড় বড় কাছের ক্যানপিতে ঢাকা থাকে বলে এই বনের মেঝেতে গুল্ম বা ক্ষূপ জাতীয় গাছের ভাগ্যে আলোক জোটে খুবই কম। তাই উত্তরাধিকার সূত্রেই স্বল্পালোকে অভ্যস্ত এসব গাছ ইনডোরেই ভাল থাকে বেশি। কখনো কখনো দেখা যায় টবে বা মাটিতে ধবধবে শাদা এলবিনো চারা গজায়, কিন্তু ক্লোরোফিল না থাকার কারণে শেকড়ের মজুদ খাবার শেষ হলেই এই গাছ মরে যায়। তবে একটা ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম বেশ চাক্ষুষ। ক্যালিফোর্নিয়ার রেডউড-এর জঙ্গলে বেশ কিছু বিশাল আকারের শাদা এলবিনো গাছ দেখা যায়, যার ভেতর ক্লোরোফিলের লেশমাত্র নেই। অথচ সবুজ বনানীতে বরফের মতো শাদা এই পরমাশ্চর্য মহীরুহ বেঁচে থাকে শতবর্ষব্যাপী। এরা খাদ্য সংগ্রহ করে অন্য গাছের শেকড় থেকে যারা মাটিতে প্রোথিত একই শেকড় থেকে জন্মানো সহোদর।
কিমেরা বৈচিত্রের গাছ যেমন ফাইকাস বেনজামিনা রূপ বদলাতে পারে কিন্তু কাঠামোগত বিচিত্র গাছগুলি তা পারে না যেমন, এলুমিনাম প্ল্যান্ট। সূর্যের আলো বেশি হলে এরা অধিক বিচিত্র হয়ে যেতে পারে আর কম হলে স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের জন্যে শাদা থেকে ধীরে ধীরে সবুজও হয়ে যেতে পারে। শুধু আলোক নয়, যারা শখের বাগান করেন বা ব্যবসায়িক ভিত্তিতে নার্সারি করেন তাদের এ ধরনের আরো কিছু বিষয় জানা থাকলে ভেরিয়েগেটা উদ্ভিদের চারা তৈরি এবং লালনপালনে কিছু সহায়তা হতে পারে।

যেহেতু কিমেরা উদ্ভিদে দুই ধরনের টিস্যু থাকতে হয়, এলবিনো ও সবুজ, তাই বীজ বা শেকড় থেকে চারা তৈরি করলে তা বিচিত্র স্বভাবটা পায় না। শেকড় ও বীজ থেকে মাত্র এক প্রকারের টিস্যু উৎপন্ন হয়, রূপান্তরিত টিস্যু ব্যতিরেকে, তাই গাছের পাতা সবুজ হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। অতএব এ ক্ষেত্রে ভেজিটেটিভ প্রোপাগেশান বা ভেষজ বিস্তারণ-ই ভাল। বিচিত্র অংশের কাণ্ড এবং কক্ষমুকুলেও পাওয়া যায় দু’ধরণের টিস্যু।

হলুদ ব্যান্ডের স্যানসেভিয়েরা বা স্নেক প্ল্যান্টের পাতার গোড়ার দিকে চারা গজায়, ঠিক মাঝখান থেকে যা থাকে ব্যান্ডের সবুজ অংশে। তাই সেখান থেকে চারা নিয়ে বড় করলে তাতে হলুদ ব্যান্ড হবার সম্ভাবনা নেই, চারা করতে হবে রানার (Runner) বা সাকার (Sucker) থেকে।

নাইট্রোজেন সারের পরিমাণ শূন্য করে অথবা খুব কমিয়ে ফেলতে হবে, কারণ এর জন্যে ক্লোরোফিলগুলি সংখ্যায় বাড়তে থাকে এবং পুষ্ট হয়। নাইট্রোজেন সার ব্যাক্টেরিয়ার কারণে গাছের ব্যবহার উপযোগী হয় এবং মাটির একটা বিশেষ pH ভ্যালুতে এই ব্যাক্টেরিয়া বেশি কার্যকর হয়। অতএব সুবিধা থাকলে pH বা অম্লাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে ভালো হয়।

বিচিত্র গাছের যে অংশের পাতা পরিপূর্ণ এলবিনো হয়ে গেছে সেখান থেকে বা যেখানে পরিপূর্ণ সবুজ সেখান থেকে চারা করার জন্যে স্টেম কাটিং সংগ্রহ করলে ভেরিয়েগেটা হবার সম্ভাবনা বিরল হবে। বুগেনভিলিয়ার ক্ষেত্রে সম্মীলিত শাদা-লাল কাণ্ডের কাটিং নিতে হবে। বিচিত্র গাছের কোনো অংশে সবুজায়ন শুরু হলে সেই অংশ কেটে ফেলা ভাল, তাতে গাছের সবুজ হবার প্রবণতা বন্ধ করা যাবে।
প্রবন্ধ উপযোগী কিছু বিচিত্র গাছের নাম...
Ficus benjamina starlight, Ficus benjamina microcarpas, Euonymus japonica, Tabernaemontana divaricata, Hedera helix- English Ivy, Agave americana, Syngonium podoophyllum, Codaeum variegatum, Pilea cadierei, Colocasia esculenta, Erythrina variegata, Acalypha wilkesiana, Alocasia amazonica, Sansevieria trifascata
ছবিগুলি আমাদের ওঙ্কার ধামের ভেরিগেটেড গাছের --
স্নেক প্ল্যান্ট- Sansevieria trifascata হলুদ ব্যান্ড, মাঝখানে সবুজ 

তথ্য সহায়তা: মান্যবুরেশু ভাত্রিপ্রতিম অধ্যাপক অনির্বাণ মিত্র ও জায়েদ ফরিদ।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন