শুক্রবার, ২৬ মে, ২০১৭

লতানে ফুলগাছ

  ছেলেবেলা থেকে  লতানো গাছের প্রতি আমার আলাদা একটু ভালোলাগা আছে , কারণটা ঠিক জানিনা । ফুলভারে সজ্জিত লতানো গাছকে কেমন যেন আদুরে মনে হয় ।

বাড়ির প্রবেশদ্বারে জনপ্রিয় বাগানবিলাস আর মাধবীলতা। সামনের খোলা জায়গার জন্য বেলি, হাসনাহেনা, গন্ধরাজ, জুঁই আর দোলনচাঁপা। নগরে কম দেখা গেলেও গ্রামের দিকে বাড়ির সদর দরজায় এখনো দেখা যায় বাগানবিলাস, নীল অপরাজিতাসহ বেশ কিছু দেশি লতানো ফুল গাছ।

বারান্দা থেকে লতানো গাছ বাড়ির গা বেয়ে নেমে এলে ভীষণ সুন্দর দেখায়। বারান্দা থেকে নামিয়ে দেয়ার জন্য লতানো গাছ হিসেবে লাগাতে পারেন অপরাজিতা ফুল। বাগানবিলাস এবং মাধবীলতাও পুরো বাড়িকে ফুলে ফুলে ভরিয়ে আকর্ষণীয় করে তোলে।  লতানো সুনির্দিষ্ট গন্ধবাহী লতানো গাছ চার পাশের সমগ্র পরিবেশটাকে পাল্টে দিয়ে এক অভূতপূর্ব মায়াবী পরিবেশ সৃষ্টি করে। কখনো জনালার পাশে বেড়ে ওঠা লতানো গাছ চমৎকার এক আলো আঁধারী এক পরিবেশ এনে দেয়।
লতানো উদ্ভিদের যে অপার সৌন্দর্য রয়েছে কেবল চোখ মেলে তাকালেই তা বোঝা যায় না। এর মনোহরা রূপকে বুঝতে হলে সৌন্দর্য্য পিপাসু মনটাকে যে সেভাবে তৈরি করতে হয়। একটি বাগানের রূপই পাল্টে দিতে পারে এসব গাছের সুষ্ঠু ব্যবহার।

 

কোন কোন লতানো গাছ আসলে এদের লতানো স্বভাবের কারণেই বেশ নান্দনিক শোভা সৃষ্টি করে। ফুল সৃষ্টি না করলেও এদের আবেদন কোন কিছু কম নয়। অনেক লতানো গাছই আবার ফুলধারী। লতানো উদ্ভিদ প্রায় সবই দীর্ঘজীবী। তবে এরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফুল ধারণ করে বছরের বিশেষ বিশেষ ঋতুতে। তবে হ্যা, শুধু বাগান করেলই চলবে না, প্রতিদিন নিয়ম করে যত্ন নিন, দেখবেন লতানো গাছ বেয়ে চুঁয়ে পরবে অদ্ভুদ এক শীতল আনন্দ l

সোমবার, ২২ মে, ২০১৭

শেতাম্বরী কুড়চি


"কশ্চিত্ কান্তাবিরহগুরুণা স্বাধিকারাত্প্রমত্তঃ
শাপেনাস্তঙ্গমিতমহিমা বর্ষভোগ্যেণ ভর্তুঃ .
যক্ষশ্চক্রে জনকতনযাস্নানপুণ্যোদকেষু
স্নিগ্ধচ্ছাযাতরুষু বসতিং রামগির্যাশ্রমেষু ..
তস্মিন্নদ্রৌ কতিচিদবলাবিপ্রযুক্তঃ স কামী
নীত্বা মাসান্ কনকবলযভ্রংশরিক্তপ্রকোষ্ঠঃ .
আষাঢস্য প্র(শ)থমদিবসে মেঘমাশ্লিষ্টসানুং
বপ্রক্রীডাপরিণতগজপ্রেক্ষণীযং দদর্শ ..
তস্য স্থিত্বা কথমপি পুরঃ কৌতুকাধানহেতোঃ
অন্তর্বাষ্পশ্চিরমনুচরো রাজরাজস্য দধ্যৌ .
মেঘালোকে ভবতি সুখিনোঽপ্যন্যথাবৃত্তি চেতঃ
কণ্ঠাশ্লেষপ্রণযিনি জনে কিং পুনর্দূরসংস্থে ..
প্রত্যাসন্নে নভসি দযিতাজীবিতালম্বনার্থী
জীমূতেন স্বকুশলমযীং হরযিষ্যন্ প্রবৃত্তিম্ .
স প্রত্যগ্রৈঃ কুটজকুসুমৈঃ কল্পিতার্ঘায তস্মৈ
প্রীতঃ প্রীতিপ্রমুখবচনং স্বাগতং ব্যাজহার .. " মেঘদুতম ( Meghaduuta
Kalidasa’s Cloud Messenger)
হিমালয় পর্বতের মানস সরোবরের সন্নিকটে অলকাপুরী নামে এক মনোরম রাজ্য ছিল। তার অধিপতি কুবের। এদের বলা হতো দেবতা [আসলে মানুষ]। স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সুখী। সেই কুবের রাজার এক কর্মচারী যক্ষ একদিন বাগান পাহারার কাজে অবহেলা করেছিল। সেই অপরাধে তাকে এক বছরের জন্য নির্বাসন দিয়ে পাঠিয়ে দিল বিন্ধ্য পর্বতের রামগিরিতে। ওদিকে ঘরে, একাকিনী প্রিয়া। নির্বাসনে আট মাস কোনোমতে কেটে গেল। এসে গেছে বর্ষা। মৌসুমি মেঘ চলেছে উত্তর দিকে হিমালয়ে। অমনি যক্ষ ঠিক করল মেঘকে দূত করে খবর পাঠাবে প্রিয়তমার কাছে। তখন, হাজার দেড়েক বছর আগে ডাক বিভাগ ছিল না। মেঘ ছাড়া কে খবর নিয়ে যেতে পারবে? যক্ষ তাই বসন্ত-গ্রীষ্মে ফোটা কুর্চি ফুল দুই হাতে নিয়ে মেঘকে 'মোহন, প্রীতিময় বচনে' জানাল তার দুঃখের কথা। এই নিয়ে কালিদাস লিখেছেন 'মেঘদূত' নামক বিখ্যাত কাব্য। গ্রীষ্ম-বর্ষার এত ফুল থাকতে কুর্চি ফুল কেন বেছে নিলেন কালিদাস বা তাঁর নায়ক যক্ষ নামক সাধারণ মানুষটি! বিরহী যক্ষ নবীন মেঘ দেখে বলছে...............

'কেমনে প্রিয়তমা রাখবে প্রাণ তার অদূরে উদ্যত শ্রাবণে যদি-না জলধরে বাহন করে আমি পাঠাই মঙ্গল-বার্তা? যক্ষ অতএব কুড়চি ফুল দিয়ে সাজিয়ে প্রণয়ের অর্ঘ্য স্বাগত-সম্ভাষ জানালে মেঘবরে মোহন, প্রীতিময় বচনে।'
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ও কুড়চির সৌন্দর্যে মোহিত হয়েছিলেন , তিনি তাঁর বনবানী গ্রন্থে লিখেছিলেন.................. " অনেককাল পূর্বে শিলাইদহ থেকে কলকাতায় আসছিলেম। কুষ্টিয়া স্টেশনঘরের পিছনের দেয়ালঘেঁষা এক কুরচিগাছ চোখে পড়ল । সমস্ত গাছটি ফুলের ঐশ্বর্যে মহিমান্বিত। চারি দিকে হাটবাজার ; এক দিকে রেলের লাইন , অন্য দিকে গোরুর গাড়ির ভিড় , বাতাস ধুলোয় নিবিড়। এমন অজায়গায় পি.ডব্লু.ডি-র স্বরচিত প্রাচীরের গায়ে ঠেস দিয়ে এই একটি কুরচিগাছ তার সমস্ত শক্তিতে বসন্তের জয়ঘোষণা করছে— উপেক্ষিত বসন্তের প্রতি তার অভিবাদন সমস্ত হট্টগোলের উপরে যাতে ছাড়িয়ে ওঠে এই যেন তার প্রাণপণ চেষ্টা । কুরচির সঙ্গে এই আমার প্রথম পরিচয়।


ভ্রমর একদা ছিল পদ্মবনপ্রিয় ,
ছিল প্রীতি কুমুদিনী পানে ।
সহসা বিদেশে আসি , হায় , আজ কি ও
কূটজেও বহু বলি মানে!
পদ্মফুলে কে না মুগ্ধ? কিন্তু কুরচিতে? ভ্রমর নাকি পদ্ম ভুলে কুরচির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল। সে অপরাধের খাড়া পড়ল কুরচির উপর। অপরাধ তার আরও ছিল বৈ কি! চিরবসন্ত-স্বর্গে মহেন্দ্রের নন্দনকাননে শ্বেতশুভ্র ফুলের প্রতীক ছিল কুরচি। ইন্দ্রাণীর কবরী সজ্জায় সে অপরিহার্য, পারিজাতমঞ্জরির লীলাসঙ্গীও। “পুর্ণিমার অমল চন্দনে” চর্চিত কুরচি আন্দোলিত হত নৃত্যরতা অপ্সরীর মণিবন্ধে। তাকে কিনা এক বেদেনি চুরি করে নিয়ে এল ধূলার ধরায়, আর নাম ভাড়িয়ে লুকিয়ে রাখল ঘরের কানাচে!
শ্বেতভুজা ভারতীয় বীণা এই আভিজাত্যহীনা, নামের গৌরবহারা কুরচিকে অলংকারঝংকারিত কাব্যের মন্দিরে অভ্যর্থনা করে নি। শুভদৃষ্টি ঘটে নি, ঔদাস্যে অবহেলায় তাই কুণ্ঠিতা কুরচি। সে লজ্জায় বিমূঢ় রবীন্দ্রনাথ,
“আমি কবি লজ্জা পাই কবির অন্যায় অবিচারে
হে সুন্দরী। শাস্ত্রদৃষ্টি দিয়ে তারা দেখেছে তোমারে,
রসদৃষ্টি দিয়ে নহে;”
হায়! এ জগতে শাস্ত্রদৃষ্টি কতই না অনাচার ঘটায় ! বেদেনির স্পর্শ কি তবে কুরচিকে অস্পৃশ্য করেছিল? মূল্যহীন তাঁর কাছে রসদৃষ্টি, পোয়েটিক জাস্টিস! কিন্তু কবি সদম্ভে ঘোষণা করেন তাঁর অবস্থান। তাঁর পক্ষপাত কুরচির প্রতিই,
— সংস্কৃত শ্লোকের অনুবাদ
কুরচি , তোমার লাগি পদ্মেরে ভুলেছে অন্যমনা
যে ভ্রমর , শুনি নাকি তারে কবি করেছে ভর্ৎসনা ।
আমি সেই ভ্রমরের দলে । তুমি আভিজাত্যহীনা ,
নামের গৌরবহারা ; শ্বেতভুজা ভারতীয় বীণা
তোমারে করে নি অভ্যর্থনা অলংকারঝংকারিত
কাব্যের মন্দিরে । তবু সেথা তব স্থান অবারিত ,
বিশ্বলক্ষ্মী করেছেন আ মন্ত্রণ যে প্রাঙ্গণতলে
প্রসাদচিহ্নিত তাঁর নিত্যকার অতিথির দলে ।
আমি কবি লজ্জা পাই কবির অন্যায় অবিচারে
হে সুন্দরী । শাস্ত্রদৃষ্টি দিয়ে তারা দেখেছে তোমারে ,
রসদৃষ্টি দিয়ে নহে ; শুভদৃষ্টি কোনো সুলগনে
ঘটিতে পারে নি তাই , ঔদাস্যের মোহ-আবরণে
রহিলে কুণ্ঠিত হয়ে ।
তোমারে দেখেছি সেই কবে
নগরে হাটের ধারে জনতার নিত্যকলরবে ,
ইঁটকাঠপাথরের শাসনের সংকীর্ণ আড়ালে ,
প্রাচীরের বহিঃপ্রান্তে। সূর্যপানে চাহিয়া দাঁড়ালে
সকরুণ অভিমানে; সহসা পড়েছে যেন মনে
একদিন ছিলে যবে মহেন্দ্রের নন্দনকাননে
পারিজাতমঞ্জরির লীলার সঙ্গিনীরূপ ধরি
চিরবসন্তের স্বর্গে, ইন্দ্রাণীর সাজাতে কবরী;
অপ্সরীর নৃত্যলোল মণিবন্ধে কঙ্কণবন্ধনে
পেতে দোল তালে তালে; পুর্ণিমার অমল চন্দনে
মাখা হয়ে নিঃশ্বসিতে চন্দ্রমার বক্ষোহার-'পরে।
অদুরে কঙ্কররুক্ষ লৌহপথে কঠোর ঘর্ঘরে
চলেছে আগ্নেয়রথ, পণ্যভারে কম্পিত ধরায়
ঔদ্ধত্য বিস্তারি বেগে; কটাক্ষে কেহ না ফিরে চায়
অর্থমূল্যহীন তোমা-পানে, হে তুমি দেবের প্রিয়া,
স্বর্গের দুলালী। যবে নাটমন্দিরের পথ দিয়া
বেসুর অসুর চলে, সেইক্ষণে তুমি একাকিনী
দক্ষিণবায়ুর ছন্দে বাজায়েছ সুগন্ধ-কিঙ্কিণী
বসন্তবন্দনানৃত্যে-- অবজ্ঞিয়া অন্ধ অবজ্ঞারে,
ঐশ্বর্যের ছদ্মবেশী ধূলির দুঃসহ অহংকারে
হানিয়া মধুর হাস্য; শাখায় শাখায় উচ্ছ্বসিত
ক্লান্তিহীন সৌন্দর্যের আত্মহারা অজস্র অমৃত
করেছে নিঃশব্দ নিবেদন।.........

মোর মুগ্ধ চিত্তময়
সেইদিন অকস্মাৎ আমার প্রথম পরিচয়
তোমা-সাথে। অনাদৃত বসন্তের আবাহন গীতে
প্রণমিয়া উপেক্ষিতা, শুভক্ষণে কৃতজ্ঞ এ চিতে
পদার্পিলে অক্ষয় গৌরবে। সেইক্ষণে জানিলাম,
হে আত্মবিস্মৃত তুমি, ধরাতলে সত্য তব নাম
সকলেই ভুলে গেছে , সে নাম প্রকাশ নাহি পায়
চিকিৎসাশাস্ত্রের গ্রন্থে, পণ্ডিতের পুঁথির পাতায়;
গ্রামের গাথার ছন্দে সে নাম হয় নি আজও লেখা,
গানে পায় নাই সুর। সে নাম কেবল জানে একা
আকাশের সূর্যদেব, তিনি তাঁর আলোকবীণায়
সে নামে ঝংকার দেন, সেই সুর ধুলিরে চিনায়
অপূর্ব ঐশ্বর্য তার; সে সুরে গোপন বার্তা জানি
সন্ধানী বসন্ত হাসে। স্বর্গ হতে চুরি করে আনি
এ ধরা, বেদের মেয়ে, তোরে রাখে কুটির-কানাচে
কটুনামে লুকাইয়া, হঠাৎ পড়িস ধরা পাছে।
পণ্যের কর্কশধ্বনি এ নামে কদর্য আবরণ
রচিয়াছে; তাই তোরে দেবী ভারতীর পদ্মবন
মানে নি স্বজাতি বলে, ছন্দ তোরে করে পরিহার--
তা বলে হবে কি ক্ষুণ্ন কিছুমাত্র তোর শুচিতার।
সূর্যের আলোর ভাষা আমি কবি কিছু কিছু চিনি,
কুরচি, পড়েছ ধরা, তুমিই রবির আদরিণী।"
“নগরে হাটের ধারে, জনতার নিত্যকলরবে,
ইঁটকাঠপাথরের শাসনের সংকীর্ণ আড়ালে,
প্রাচীরের বহিঃপ্রান্তে।”
যার অঢেল উপস্থিতি, তাকে নিশ্চয়সকলেই ভোলে নি।”জনতার নিত্যকলরবে” কুরচি ঠিকই আছে আপন মহিমায়। তাই থাক না কিছু ভুলভাল কাব্যকৃতিতে! কতটুকু ক্ষতিতাতে? মূলবাণী পেয়ে গেছি রবীন্দ্রনাথেই। দেবী ভারতীর পদ্মবন স্বজাতি বলে না মানুক, ছন্দ তাকে যতই পরিহার করুক তাতে কুরচির শুচিতা কিছুমাত্র ক্ষুণ্ন হয় নি। দেবের প্রিয়া, স্বর্গের দুলালী কুরচিকে ঠিকই চিনেছেন সূর্যদেব। কবি তাই নিশ্চিন্ত হন,
“সূর্যের আলোর ভাষা আমি কবি কিছু কিছু চিনি,
কুরচি, পড়েছ ধরা, তুমিই রবির আদরিণী।”
এখানে আবার দেখি সূর্যদেব আর কবি রবি একাকার! কার আদরিণী কুরচি? শুধুই সূর্যদেব রবির, না-কি কবিরও যার নাম রবি?
ভারতবর্ষের আদি নিবাসী কুরচি মাঝারি  আকৃতির বৃক্ষ। কাণ্ড সরল, বাকল অমসৃণ ও হালকা ধূসর রঙের। অজস্র ঊর্ধ্বমুখী শাখায় এলোমেলো। পাতা লম্ব-ডিম্বাকৃতির, মসৃণ এবং উভয়ের বিপরীত দিকে সমভাবে বিন্যস্ত থাকে। শীতে পত্রহীন হয়, ফাল্গুনের শেষভাগে দুয়েক স্তবক ফুল ফুটতে শুরু করে।

ফুল, বাকল ও ফল আমাশয়ের ওষুধ। তাছাড়া ফুল রক্তদোষে, পাতা বাত ও ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসে, বীজ অর্শ্ব ও একজিমায় উপকারী। সর্পদংশন এবং বিছার কামড়েও এ গাছের বাকল ব্যবহার করা হতো। নরম কাঠ থেকে পুতুল ও খেলনা তৈরি হয়।
কুরচির অন্যান্য নাম- কুটজ, ইন্দ্রযব, ইন্দ্রজৌ, বৎসক, কলিঙ্গ, প্রাবৃষ্য, শত্রুপাদপ, সংগ্রাহী, পান্ডুরদ্রুম, মহাগন্ধ, ইংরেজিতে Bitter Oleander, Easter Tree।
আকৃতিতে কামিনীর সাথে বেশ মিল, বর্ণেও। তবু কামিনীর সলাজ ঝরে পড়ার সাথে কুরচির বেমিল নজর কাড়ে। বসন্তে সে প্রস্ফূটনে মাতে, থাকে সমস্ত গ্রীষ্মব্যাপী, বর্ষণসিক্ত হয়ে তার প্রস্ফুটনে যতি। প্রথম পর্বে, বসন্তে শুধুই তুষারধবল কুরচিতে মোড়া নিষ্পত্র তরুটি। দিন যত দীর্ঘতর হয়, উত্তাপ যত বাড়ে, গ্রীষ্মের আগমনে সবুজ পাতা আর সাদা ফুলে লুকোচুরির মনোহরণ দৃশ্য যে দেখে সেই মজে। এদেশে এমন শ্বেত, তুষারধবল ফুলের অক্লান্ত দীর্ঘস্থায়ী প্রস্ফূটনের বন্যা বেশি নেই। কুরচি তাই আমাদের প্রিয় ফুলের তালিকাশীর্ষে স্থান পেতেই পারে।
আমাদের ওঙ্কার ধামের প্রথম কুড়চি গাছটি আমার মায়ের লাগানো , গ্রীষ্মের সন্ধ্যায় কামিনী ও কুড়চির সুগন্ধি যুগলবন্দী প্রান ভরিয়ে দেয় .........
বসন্তে নিষ্পত্র তরুজুড়ে বরফশুভ্র এমন অনিন্দ্য সুন্দর পুষ্প এ বাংলায় দ্বিতীয়টি নেই।এমন তুষারধবল, প্রস্ফূটনে ক্লান্তিহীন কুরচিকে আমরা আমাদের নাগরিক জীবনে আনন্দের উৎসে পরিণত করতে পারি। আমাদের উদ্যান চর্চায় কেন তবে কুরচি অবহেলিত থাকবে? আসুন, সবাই মিলে এই অপরূপ শ্বেতশুভ্র পুষ্পে ভরে তুলি আমাদের স্বপ্নের বাড়ি,স্বপ্নের নগর,...............

শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৭

'দারুণ অগ্নিবাণে রে   হৃদয় তৃষায় হানে রে॥
     রজনী নিদ্রাহীন,   দীর্ঘ দগ্ধ দিন
              আরাম নাহি যে জানে রে॥
     শুষ্ক কাননশাখে   ক্লান্ত কপোত ডাকে
              করুণ কাতর গানে রে॥
ভয় নাহি, ভয় নাহি।   গগনে রয়েছি চাহি।
     জানি ঝঞ্ঝার বেশে   দিবে দেখা তুমি এসে
              একদা তাপিত প্রাণে রে॥'   ----- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর                                                                             

সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৭

সূর্যমুখী





এক দুপুর তোমার অলংকার হতে চায়,
আঁকতে চায় আলো আঁধারের ছবি তোমার অতুল্য মায়ায়,
তুমি কি সেই প্রহর কেটে রওশনের ছোঁয়া নেবে?
তুমি কি এই রোদ্র ঢেউয়ে স্নান করবে?
কত আর কিরন কাঁদন,
কত আর চিকন বেদন,
বাঁধন বেঁধে আর ও চোখে লুকোচুরি জল রেখো না,
তুমি যে দিকেই চোখ রাখো ঝরনা দেখো না।
শোনো হে সূর্যমুখী,
আবার সোনালী ছোঁয়া রূপকৌটো আঁখিতে সুরমা এঁকো,
যেন এক দুপুর রোদ এসে থেমে যায় পলক শেষে,
ঝলকে কথা বলবে কী?
বলোনা সূর্যমুখী। -------- আশরাফুন নাহার


সূর্যমুখী একধরণের একবর্ষী ফুলগাছ। সূর্যমুখী গাছ লম্বায় ৩ মিটার (৯.৮ ফু) হয়ে থাকে, ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত হয়। এই ফুল দেখতে কিছুটা সূর্যের মত এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে এর এরূপ নামকরণ।
এর বীজ হাঁস মুরগির খাদ্যরূপে ও তেলের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই বীজ যন্ত্রে মাড়াই করে তেল বের করা হয় ৷ তেলের উৎস হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সূর্যমুখীর ব্যাপক চাষ হয়। সমভুমি এলাকায় শীত ও বসন্তকালে, উঁচু লালমাটি এলাকায় বর্ষাকালে ও সমুদ্রকুলবর্তী এলাকায় শীতকালীন শস্য হিসাবে চাষ করা হয়।
সূর্যমুখীর তেল ঘিয়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা বনস্পতি তেল নামে পরিচিত। এই তেল অন্যান্য রান্নার তেল হতে ভাল এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত কম। এছাড়া এতে ভিটামিন এ, ডি ও ই রয়েছে।
 এর রূপে রয়েছে চোখ জুড়ানো ভালোলাগা …..  প্রতিটি ফুল সূর্যের দিকে তাকিয়ে, কোনটি যেন গ্রীবা উঁচিয়ে, কোনটি উঁকি মেরে, কোনটি ঘাড় ফিরিয়ে দেখছে প্রিয়তমকে। হলুদ আর হলুদ, সূর্যমুখী রঙ দেখে মনে হয় কেউ এসে  রঙ ছিটিয়ে দিয়েছে। সূর্যমুখী ফুলের চাষ লাভজনক একটি লাভজনক প্রকল্প হিসেবে এখন গণ্য করা হয়। যদি কোনো প্রাকৃতিক কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তাই, অনেকই সূর্যমুখী ফুলের চাষের দিকে ঝুঁকেছে। আগে সূর্যমুখীর চাষ খুব একটা জনপ্রিয় ছিল না। এখন রবি মৌসুমে নভেম্বর থেকে মধ্য ডিসেম্বর পর্যন্ত সূর্যমুখী চাষ করলে ভাল ফলন হয়। তা ছাড়া এপ্রিল-মে মাসে এবং আগষ্ট-সেপ্টেম্বর মাসেও ভাল ফলন পাওয়া যায়। অতিবৃষ্টি সূর্যমুখী চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। অলটারনেরিয়া লিফ ব্রাইট নামক এক ধরনের রোগ এই ফসলের অনেকসময় ক্ষতি করে থাকে। সাধারণত সূর্যমুখী রোগ-বালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয়। সেই দিক থেকে সূর্যমুখী চাষ ঝুঁকিপূর্ণ নয়, লাভজনক। সূর্যমুখী ফুলের বড় শত্রু টিয়া পাখি, পরিপক্ক বীজ খেয়ে একেবারে শেষ করে ফেলে। তাই, পাখির আক্রমণ থেকে ফুলকে রক্ষার জন্য সতর্ক থাকতে হয়।


"জানে সূর্যরে পাবেনা
তবু অবুঝ সূর্যমুখী
চেয়ে চেয়ে দেখে তার দেবতারে
দেখিয়াই সে যে সুখি"

রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

গাছগাছালি মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। শুধু মানুষই নয়, গাছপালা ছাড়া কোনো প্রাণীই জীবন ধারণ করতে পারবে না। বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বেড়ে পরিবেশের ভারসাম্য হারিয়ে যাওয়ার পেছনে প্রধানত দায়ী বৃক্ষহীনতা। দিন দিন কমে যাচ্ছে গাছের সংখ্যা। গাছপালার স্বল্পতার কারণে ভূপৃষ্ঠে কার্বন-ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ভয়াবহভাবে বেড়ে যাচ্ছে। গাছগাছালির উপকারের কোনো শেষ নেই। একটি গাছ বছরে প্রায় ১৩ কেজি কার্বন-ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে।
ইসলাম ধর্মে গাছ ঃ- মানুষের জীবন-সংশ্লিষ্ট প্রকৃতিগত ধর্ম ইসলামও বৃক্ষরোপণ এবং পরিচর্যার প্রতি জোরালো তাগিদ করেছে। বৃক্ষরোপণকে ইসলামে ইবাদত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। যে গাছ লাগাবে এবং তা পরিচর্যা করবে, সে অনবরত পুণ্য পেতে থাকবে। মহানবী (সা.) বৃক্ষের শোভামণ্ডিত সুশোভিত পরিবেশ ভালোবাসতেন। তিনি ছিলেন প্রকৃত অর্থে একজন বৃক্ষপ্রেমী। জীবনে বহুসংখ্যক গাছ তিনি নিজ হাতে রোপণ করেছেন। অসংখ্য হাদিসে তিনি বৃক্ষরোপণে উদ্বুদ্ধ করেছেন তাঁর অনুসারীদের। বৃক্ষরোপণকারী মরে যাওয়ার পরও এর সওয়াব অনবরত পেতে থাকবে। সওয়াবের উদ্দেশে কোনো গাছের চারা রোপণ করলে যতদিন গাছটি থেকে উপকৃত হওয়া যাবে ততদিনই এর সওয়াব রোপণকারী পাবেন। ইসলামের আলোকে বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা করা ইবাদতেরও একটি অংশ। নিজ হাতে বৃক্ষরোপণ করা রাসুলের সুন্নত। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তুমি যদি নিশ্চিতভাবে জান কিয়ামত এসে গেছে, তবুও তোমার হাতে কোনো গাছের চারা থাকলে তা রোপণ করবে।’ এ হাদিস থেকেই বোঝা যায় ইসলাম বৃক্ষরোপণকে কত গুরুত্ব দিয়েছে। বৃক্ষরোপণ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি তা পরিচর্যা করাও অপরিহার্য। এ জন্য ইসলামে বৃক্ষের পরিচর্যার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। গাছ লাগিয়েই দায়িত্ব শেষ নয়; বরং এর যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে পুষ্প-পল্লবে বিকশিত হওয়ার সব ব্যবস্থা করতে হবে। আপনার যতেœ যদি একটি বৃক্ষ ফুলে-ফলে সুশোভিত হয়, পথিক এর ছায়ায় বসে, পশু-পাখি বিশ্রামের সুযোগ পায়, ফুল-ফল খেয়ে উপকৃত হয় এরা সবাই আপনার জন্য দোয়া করবে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ইসলাম কাউকে গাছ কেটে ফেলার অনুমতি দেয় না। এক কথায় গাছের ক্ষতি হতে পারে, এমন কোনো কর্মকাণ্ডই ইসলাম সমর্থন করে না। গাছপালা আল্লাহর অন্যতম সেরা দান। বৃক্ষরোপণ ও তা পরিচর্যা করা মুসলমানদের ধর্মীয় দায়িত্ব। এ জন্য সবার উচিত ব্যাপক বনায়নের মাধ্যমে সবুজাভ প্রকৃতিকে মানুষের বাসযোগ্য করে তোলা।
হিন্দুধর্মে গাছ ঃ-সনাতন ধর্মে গাছ উপাস্য। বর্তমানের মতো প্রাচীন বাংলায়ও নারীদের মধ্যে ভোরে উঠে তুলসি, শেওড়া ও বটগাছ পূজার প্রচলন ছিল। গ্রাম-দেবতার সাথে গাছ পূজার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। একেকটি গ্রামে যে গাছের নিচে আঞ্চলিক দেবতার পূজা হতো কোনো কোনো সময় সেই গাছটিরও পূজা করা হতো। ভারতবর্ষের এমন অনেক স্থান রয়েছে যেখানে বট-পাকুড় কিংবা প্রাচীন গাছকে ভক্তিভরে পূজা করা হয়। সিঁদুর পড়ায় নানা ধরনের মানত করে। সূতা বাঁধে মনের ইচ্ছা পূরণ হওয়ার জন্য।
প্রাচীনকালে পুকুর খনন, পানীয় জলের জন্য কূপ খনন ও গাছ রোপণ ধর্মীয় কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। ধারণা করা হতো গাছ হচ্ছে ঈশ্বরের আশ্রয়স্থল। বট ও পাকুড় গাছ লাগালে পুণ্য হয়। পিপল গাছকে প্রজাপতির আশ্রয়স্থল বলা হতো। আমগাছকে পঞ্চপাল্লাভা বলা হতো। আগনীপুরাণে একটি বৃক্ষকে ১০ জন পুত্রের সমান বলে অভিহিত করা হয়েছে।
সনাতন ধর্মবলম্বীদের তুলসি, কদম, নিম, বেল, চন্দন, তমালসহ নানা গাছের ওপর দুর্বলতা রয়েছে। এ সব গাছকে তারা শ্রদ্ধা করেন। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন মন্দিরগুলোর পাশে এসব গাছের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে তুলসিকে সীতাস্বরূপা, স্কন্দপুরাণে লক্ষ্মীস্বরূপা, চরকসংহিতায় বিষ্ণুর মতো ভূমি, পরিবেশ ও আমাদের রক্ষাকারী বলে বিষ্ণুপ্রিয়া, ঋগ্বেদে কল্যাণী বলা হয়েছে। স্বয়ং ভগবান বিষ্ণু তুলসিদেবীকে পবিত্রা বৃন্দা বলে আখ্যায়িত করে এর সেবা করতে বলেছেন। তাই হাজার হাজার বছর ধরে সাধারণত কৃষ্ণ ও রাধা তুলসি এই দুই ধরনের তুলসি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে পূজিত হয়ে আসছে। সংরক্ষিত হয়ে আসছে।
“না পুড়াইও রাধা-অঙ্গ,
না ভাসাইও জলে,
মরিলে তুলিয়া রেখো
তমালেরই ডালে।”
রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের সুখ-দুঃখের সাথী ছিল তমাল গাছ। রাধা এবং কৃষ্ণ অনেক অনুযোগ, অভিযোগ, ভালোবাসার কথা এই তমাল গাছের কাছে বলেছেন। এই কারণে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তমাল গাছকে পবিত্র গাছ হিসেবে মনে করে থাকে।
বরষার কদম গাছও শ্রীকৃষ্ণের অন্যতম সঙ্গী ছিল। বৃন্দাবনে কদম গাছের নিচে বসে কৃষ্ণ বাঁশিতে রাধাকে ডাকতেন। তাই এ গাছের কদর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে কম নয়।
শাস্ত্রীয় মতে ‘বিল্ব’ বা বেলগাছ লাগালে সেই বাড়িতে পুরুষানুক্রমে ধনসম্পদে পরিপূর্ণ থাকে। এছাড়া সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বেলপাতা ছাড়া কোনো পূজা-অর্চনা হয় না। হোম-যজ্ঞ করার সময়ও বেলকাঠের প্রয়োজন হয়। বেলগাছ পবিত্র গাছ হিসেবে তারা এটিকে সংরক্ষণ করে থাকে।
নিম গাছ যেমন ওষুধি গাছ হিসেবে পরিচিত তেমন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি পবিত্র গাছ হিসেবে পরিচিত। এর কাঠ দিয়ে বিভিন্ন যজ্ঞের আয়োজন করা হয়। এছাড়া চন্দন গাছ, বিভিন্ন ফুলের গাছ, দুর্বা ঘাসসহ নানাভাবে সনাতন ধর্ম প্রকৃতিকে আগলে রেখেছে। এছাড়া ভারতবর্ষে সনাতন ধর্মালম্বীরা অশ্বত্থ, ডুমুর, বট, পাকুড় ও আমকে পঞ্চবৃক্ষের মধ্যে গণ্য করে থাকে।
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে এর মধ্যে অশ্বত্থের স্থান সর্বশীর্ষে। অশ্বত্থ গাছ কাটলে বংশহানি হয়। তবে হোম-যজ্ঞের মতো পবিত্র কাজের জন্য অশ্বত্থ গাছের কাঠ কাটলে কোনো দোষ হয় না, বরং অক্ষয় স্বর্গ লাভ হয়। অশ্বত্থ গাছ পূজা করলে সকল দেবতার পূজা করা হয়।
খ্রিস্টান ধর্মে গাছ ঃ-    দু'হাজার বছর আগে বেথেলহ্যাম নগরী। তখন নগরীর প্রত্যেক বাড়িতে নাইট কুইন গাছ ছিল। এক রাতে ঘটল আশ্চর্যজনক ঘটনা। প্রতিটি বাড়ি নাইট কুইন ফুলে ফুলে ছেয়ে গেল। এ ঘটনায় কৌতূহলী নগরবাসী এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে দৌড়াতে লাগল। তারা কেউই বুঝে উঠতে পারল না প্রকৃতি কেন এই অজানা উৎসবে মেতে উঠেছে। পরে অবশ্য সবাই আসল ঘটনা বুঝতে পেরেছিল। সেই রাতে বেথেলহ্যামের এক ঘোড়ার আস্তাবলে জন্ম হয়েছিল এক মহাপুরুষের, তিনি যিশু খ্রিস্ট। বেথেলহ্যামের সব নাইট কুইন সে রাতে মেতে উঠেছিল যিশু খ্রিস্টের জন্মোৎসবে। এ জন্য আজো অনেকের কাছে এ ফুলটি 'বেথেলহ্যাম ফ্লাওয়ার' নামে পরিচিত।আজ ও পৃথিবীর সর্বত্র যিশু খ্রিস্টের জন্মোৎসব পালনের মুল উপাদান একটি গাছ খ্রিস্ট মাস ট্রি ।

মানুষেরই কিছু অবিমৃশ্যকারী কাজের ফল জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্বের উপর যার প্রভাব মারাত্মক৷ অবশ্য আজ মানুষ ধীরে ধীরে তার কাজের পরিণাম উপলব্ধি করতে পারছে, তাই পরিবেশ সুরক্ষায় সুচেতনার জাগরণও ঘটছে৷ শিশুদের মধ্যেও যে পরিবেশ সংরক্ষণের চেতনা জাগছে৷
কিন্তু মুশকিল হলো, এই শিশুরাই আমাদের মতো বড়দের কাজকর্ম দেখে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে৷  মাটিতে মিশে না যাওয়া ( নন বায়ো ডিগ্রেডেবল) আবর্জনা পরিবেশের ভীষণ ক্ষতি করে৷ একথা আমরা বাচ্চাদেরও শেখাই৷ কিন্তু তারপরই আমাদের বাচ্চারা দেখে, আমরা পলিথিন প্যাকেটে করে বাজার থেকে জিনিসপত্র নিয়ে আসছি, আর সেই পলিথিন যত্রতত্র ফেলে দিচ্ছি৷ এ থেকে শিশুরা শিখছে, ‘এমন অনেক বিষয় আছে, যেগুলি সম্বন্ধে যা শেখানো হয়, তার উল্টোটাই করতে হয়'৷ সমুদ্রসৈকত হোক বা পাহাড়, আমরা পিকনিক করতে যাই, আর বিভিন্ন ক্ষতিকর আবর্জনা আমরা সেখানে ফেলে আসি৷ এমনকি আজ হিমালয়ের উচ্চতম স্থানগুলিও রেহাই পাচ্ছে না৷ একটা ব্যক্তিগত কষ্টদায়ক অভিজ্ঞতার কথা বলি৷ আমার বাচ্চাকে শিখিয়েছি, গাছ কাটতে নেই, লাগাতে হয়৷
     বছর তিনেক আগে হঠাৎ দেখলাম আমাদের আসাম রোড (এস টি কে কে রোড )  চওড়া করার জন্য শতাব্দী প্রাচীন ( হয়ত বা কয়েক শতাব্দী প্রাচীন ) বিরাট বিরাট শিরীষ গাছগুলিকে নির্মমভাবে কেটে ফেলা হলো কোনো নতুন গাছ না লাগিয়েই৷ আমার মেয়ে তিতলি আমাকে প্রশ্ন করেছিল, ‘‘বাবা , গাছ কাটা তো খারাপ কাজ, তাহলে এতগুলো গাছ কেটে ফেলল কেন?'' বিশ্বাস করুন, আমি কোনো উত্তর দিতে পারিনি৷ কীভাবে তাকে আমি বলব যে, বড় হলে আমাদের মধ্যে একটা জিনিস জন্ম নেয় যার নাম ‘হিপোক্রেসি'৷ যতক্ষণ না আমরা এই হিপোক্রেসির হাত থেকে মুক্তি পাচ্ছি, ততক্ষণ আমাদের কথা আর কাজের মধ্যে রয়ে যাবে বিস্তর ফারাক৷ আমরা অধিকাংশ মানুষই বিশ্বাস করে চলি, ‘কর্তব্য বিষয়ে ভালো ভালো কথার জন্ম হয়েছে আমার বলার জন্য, আর অন্যদের করার জন্য', অন্তত আমার দেশে৷ তাই আমরা স্লোগান দিই, ‘গাছ লাগান, প্রাণ বাঁচান'৷ কখনোই বলি না, ‘এসো গাছ লাগাই, প্রাণ বাঁচাই'৷ আমাদের বাসের পিছনে লেখা থাকে না, ‘ট্রাফিক আইন মেনে চলি', লেখা থাকে ‘ট্রাফিক আইন মেনে চলুন'৷  অর্থাৎ আমার কোনো দায় নেই! আজ আমাদের এস টি কে কে রোড ঝাঁ চকচকে,গাড়ী চলে সাবলীল ভাবে ,বান্ডেল থেকে কাটোয়া পর্যন্ত রাস্তা শুয়ে আছে একটা বড়ো অজগরের মতো,গাড়ি চলছে সাঁ সাঁ করে ,.........ঠা ঠা রোদ্দুরে অজগরের পিঠ চক চক করছে ,আমরা হারিয়ে ফেলেছি আমাদের সেই ছায়া - সুনিবিড় পথ। খামারগাছী পেরোলেই চোখে পড়ে রাস্তার ধারে পরে আছে শিরীষ ,বাবলা,জারুল,কৃষ্ণচূড়াদের টুকরো টুকরো লাশ।
       তবুও আশার কথা, সর্বত্রই কিছু ব্যতিক্রমী মানুষ থাকেন, কথা নয়, কাজই যাঁদের জীবনাদর্শ৷ তাঁদের কাজের ফলেই সভ্যতা কালো থেকে আলোর দিকে, মন্দ থেকে ভালোর দিকে এগিয়ে চলে৷ তাঁদের কথা মনে রেখেই আমরা নিজেদের সন্তান-সন্ততির জন্য আগামীদিনে একটু অন্যরকম পৃথিবীর স্বপ্ন দেখতে সাহস পাই৷
আমি গর্বিত আমার পরিচয়ে যে আমি একজন বাঙালি , আমার মাতৃভাষা পৃথিবীর মধুরতম ভাষা বাংলা । রবীন্দ্রনাথ,  নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, এর মত প্রকৃতি-প্রেমিক কবি আমার ভাষার কবি ।

"বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ

খুঁজিতে যাই না আর : অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে
চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড়ো পাতাটির নিচে ব'সে আছে
ভোরের দোয়েল পাখি- চারিদিকে চেয়ে দেখি পল্লবের স্তূপ
জাম-বট-কাঁঠালের-হিজলের-অশ্বত্থের ক'রে আছে চুপ;
ফণীমনসার ঝোপে শটিবনে তাহাদের ছায়া পড়িয়াছে;
মধুকর ডিঙা থেকে না জানি সে কবে চাঁদ চম্পার কাছে
এমনই হিজল-বট-তমালের নীল ছায়া বাংলার অপরূপ রূপ

দেখেছিলো; বেহুলাও একদিন গাঙুড়ের জলে ভেলা নিয়ে-
কৃষ্ণা দ্বাদশীর জ্যোৎস্না যখন মরিয়া গেছে নদীর চড়ায়-
সোনালি ধানের পাশে অসংখ্য অশ্বত্থ বট দেখেছিল, হায়,
শ্যামার নরম গান শুনেছিলো- একদিন অমরায় গিয়ে
ছিন্ন খঞ্জনার মতো যখন সে নেচেছিল ইন্দ্রের সভায়
বাংলার নদী মাঠ ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতো তার কেঁদেছিলো পায়।"
 ঈদ, পুজা, কিম্বা যীশু এর জন্মদিনের দিন- জাতি ধর্ম নির্বিশেষে ঈদ মুবারাক, শারদীয় পুজার শুভেচ্ছা কিম্বা মারী খ্রিস্মাস  মানবতারই ফল । আমি মনে করি মানুষের একতাই ধর্ম যার নাম হল মানবধর্ম ।মূলত সব ধর্মই মানবতার কথা বলে ।
আমার জ্ঞান খুব কম তবে অন্তত এতটুকু জানি বাংলা ধর্ম মানে হচ্ছে ধারন করা। সেই ক্ষেত্রে আস্তিক মানে হচ্ছে হ্যাঁ-ঈশ্বরে ধর্মে বিশ্বাসী তেমনি নাস্তিকেরা না-ঈশ্বর ধর্মে বিশ্বাসী। এই ক্ষেত্রে দুই দলই দুই বিপরীত ধর্মী বিশ্বাসকে ধারন করে। সেই অর্থে কেউই ধর্মের বাইরে নয়।
(তাহলে এই দেশে পালিত একমাত্র Valentines Day ছাড়া অন্য কোন উৎসবই সার্বজনীন নয়।) সব শেষে একটা লাইন দিয়ে শেষ করছি- ‘শুন হে মানুষ ভাই সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই।’

গাছের খোঁজে গাছের কাছে

- সায়াদাত চমন

  নিজস্ব একটি গাছের খোঁজে শতাব্দীর পর শতাব্দী কেটে গেছে-
শত জনমের আকাঙ্ক্ষা ছিলো আমার একটি স্বতন্ত্র গাছ থাকবে
যে গাছে অবলা ইচ্ছেগুলো সগৌরবে প্রতিফলিত হবে বারেবারে
নিশিদিন এক করে গাছের সাম্রাজ্যে ঘুরে বেড়িয়েছি, এখনো ঘুরে বেড়াই
অথচ একান্ত নিজের কোনো গাছ আজ অবধি পেলাম না ।

সারি সারি গাছ সমুন্নত বুকে শির উঁচু করে চারিধারে ঘুরে বেড়ায়
আমার স্বপ্নে দেখা ফলবতী গাছ আসবাব হয়ে অন্য কারো শোবার
ঘরের শোভা বাড়াচ্ছে অথবা অন্যের চুলোর লাকড়ি হয়ে জ্বলছে-
খুব বেশি চাওয়ার ছিলো না আমার -
শুধু একটা একান্ত আপন স্বতন্ত্র গাছই চেয়েছি মাত্র।

আজো নির্ঘুম রাতে অদৃশ্য হাতে ঝাড়ু দেয়া পরিচ্ছন্ন আকাশের
নিচে বসে ভাবনার পৃথিবীতে গাছের অবয়ব আঁকি -
ঘুঁটঘুঁটে অমাবস্যায় গাছেদের খুব কাছে যেতে ইচ্ছে জাগে
তবু অজান্তেই সুখের মোড়কে পুষে রাখি দুঃখের দহন-জ্বালা।

একান্ত নিজের একটি গাছের স্বপ্ন আমি দেখতেই পারি-
এতে কারো ক্ষতি-টতি হবে না নিশ্চয়!

রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

হায়াসিন্থ

গ্রিক উপকথায় স্নেহের ফুল হায়াসিন্থ , অপত্যস্নেহ চিরকালীন ,এর মৃত্যু নেই ।

হায়াসিন্থাস ছিল গ্রিক উপকথার এক সুদর্শন তরুণ।
আলোর দেবতা অ্যাপোলো;- তিনি তরুণ হায়াসিন্থাস কে ভারি স্নেহ করতেন, ডিসকাস নিয়ে হায়াসিন্থাস-এর সঙ্গে খেলতেন। পশ্চিমা বায়ূ জেইফার;- সে ঈর্ষা করত। সে চাইত হায়াসিন্থাস কেবল তার সঙ্গেই খেলুক।
একদিন।
হায়াসিন্থাস ও অ্যাপোলো ডিসকাস নিয়ে খেলছিল।
জেইফার এসে উপস্থিত হল; ওদের সঙ্গে খেলতে চাইল। কিন্তু, হায়াসিন্থাস ও অ্যাপোলো কেউই তাতে সম্মত হল না। তখন জেইফার ক্রদ্ধ হল ও অদৃশ্য হয়ে গেল; এবং প্রবল ঈর্ষার বশবর্তী হয়ে অ্যাপোলোর নিক্ষিপ্ত ডিসকাসটির গতিপথ বাতাসে সুকৌশলে ঘুরিয়ে দিল।
এবং তাতে হায়াসিন্থাস মাথায় প্রবল আঘাত পেল। এবং সে মারা গেল ।
হায়াসিন্থাস-এর মৃতদেহের পাশে শিশুর মতন কাঁদতে লাগলেন অ্যাপোলো।
হায়াসিন্থাস এর মাথা থেকে দরদর করে রক্ত বেরুচ্ছিল। শোকগ্রস্থ অ্যাপোলো হায়াসিন্থাস-এর নাম চিরদিনের মতন অমর করে রাখবেন ঠিক করলেন।
হায়াসিন্থাস এর রক্ত দিয়ে একটি ফুলের জন্ম দিলেন আলোর দেবতা।
সেই ফুলের নামই হল হায়াসিন্থ।


সূত্র: ফরহাদ খান রচিত প্রতীত্য পুরাণ।ছবি ঃ গুগল সৌজন্যে

শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৬

আমাদের  বাড়িতে বাগান  সেই বাবার আমল থেকে, ছোটবেলা থেকে ফুল আর পাখিদের মধ্যেই বড় হয়েছি।  আমার মেয়ে তিতলিও তাই, খুব ছোট্ট  থেকে গাছ ফুল আর পাখিদের  সাথে থাকতে থাকতে এরা ছিলো ওর বড়ো প্রিয়।
এর সাথে ছিল ওর পোষ্যপ্রেম ,চিরকালই আমাদের বাড়ি 'ওঙ্কার ধাম 'এর গাছগাছালি পাখিদের নিশ্চিন্ত আশ্রয়, আমাদের বাড়িতে প্রচুর পাখি আসে রোজ,ছোটবেলা থেকে দেখেছি,পাশেই পুকুরের ধারে গম্ভীরমুখে  বসে থাকতো মাছরাঙা ,কি অপূর্ব রূপ,...... মুগ্ধ হওয়ার মতোই ,এছাড়াও আসতো টিয়া,কুবোপাখী ,কোকিল,ফিঙে,দোয়েল,পায়রা,বৌ কথা কও ,বসন্ত বৌরি,শালিক  আরো কত কি।   ছাতারে পাখিগুলো খুব ঝগড়ুটে,এক মুহূর্ত চুপ থাকতে পারে না,সবসময় কাচর মাচর করে যাচ্ছে ,আর চড়ুই পাখির কথা আর কি বলবো,ওদের মতো দুস্টু পাখি কমই দেখেছি। আর আছে টুনটুনি,ভারী চঞ্চল,সবসময় ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে উড়ে বাড়াচ্ছে।.....
স্কুল থেকে ফিরেই তিতলির প্রথম কাজ ছিল বাগানে আর বাড়ির ছাদের বাগানের গাছগুলোর পরিচর্যা ,ওর মায়ের বকুনির মধ্যেই শেষ হতো এই পর্ব।  ভোরে উঠে ওর গাছে কোনো নতুন ফুল বা ফল ধরলে আমাকে ডেকে না দেখানো পর্যন্ত ওর শান্তি হতো না না।

প্রতি বছর ওর জন্মদিন বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে গাছই ছিল ওর সবচেয়ে প্রিয় উপহার।  আগেই বলেছি ছুটি পেলেই আমরা বেরিয়ে পড়তাম,কোনো নির্দিষ্ট কোন গন্তব্য না নিয়েই,এইভাবেই কত নতুন ফুল আর গাছেদের সাথে পরিচয় হতো আমাদের, তাদের কাউকে কাউকে আপন করে নিয়ে আসতাম আমার বাগানে আবার কারো কারো রূপ দেখেই মোহিত হতাম।এইভাবেই তিতলির বায়নায় আমার বাগানে এসেছে জারুল,পলাশ,ঝুমকোলতা বা প্যাসিফ্লোরারা ,.........
 গত বছর এইভাবেই আমার এক বন্ধুর বাড়িতে আমাদের সাথে দেখা হল রূপসী চন্দ্রপ্রভার ! থোকা থোকা  ফুলে সারা শরীর জুড়ে রূপের জ্বেলে দাঁড়িয়ে ছিল সে।

যথারীতি তিতলীর বায়না ,বাবা এই গাছটা আমার চাই।  নার্সারীতে খোঁজ করেও পেলাম না গাছটা,তিতলীও নাছোড়বান্দা,গাছটা ওর চাই ই চাই ।  তারপর আমার চেনা এক নার্সারীর মালিক বললো, 'আমি জোগাড় করে আপনার বাড়িতে পৌঁছে দেব ' এই কথা শুনেই আমরা বাড়ী ফিরলাম।
তারপর এল সেই অভিশপ্ত দিন,২৫শে মার্চ তিতলীর এক্সিডেন্ট ,.! হসপিটালের এমার্জেন্সি তারপর সুপার স্প্যাসিলিটি ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে ৩ দিনের অসম-যুদ্ধে ২৮ শে হার মানলো আমার একমাত্র সোনা মেয়েটা ,..............
ওকে নিয়ে যখন শেষবারের মতো বাড়ি ফিরছি, আমার শহর জুড়ে শোকের ছায়া , আমার বাড়িতে কয়েক হাজার লোকে, তাদের অনেকের হাতেই ফুল,সবাই শেষ বারের মতো দেখতে এসেছে আমার পাগলী মেয়েটাকে। ....
  তখন গোধূলীবেলা, তিতলিকে রেখে বুকফাটা কান্না নিয়ে বাগানের দিকে তাকিয়ে দেখি, এক কোণে একটা প্যাকেট এ রাখা রয়েছে,একটা চন্দ্রপ্রভা গাছ,তাতে থোকা থোকা ফুল ফুটেছে,............... (পরে দারোয়ানের কাছে জেনেছিলাম সে দিন দুপুরে নার্সারীর থেকে দিয়ে গেছে গাছটা ) গাছটা দেখে বুক ফেটে যাচ্ছে,....... ভাবলাম ফেলেই দেব, তারপর কি ভেবে একথোকা ফুল ছিঁড়ে নিয়ে রাখলাম আমার মেয়ের ফুলে ফুলে ঢাকা বুকের ওপর , তিতলির মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হলো মুখটা কি একটু হাসি হাসি লাগলো,.............. না কি এ আমার মনের ভুল ,...........!!!

এই গ্রূপের নিয়ম অনুযায়ী ব্যাক্তিগত ছবি বা ঘটনা পোস্ট করা উচিত নয়, কিন্তু আমার প্রথম পোস্ট (প্যাসিফ্লোরা) এর কমেন্ট করে এই গ্রূপের আমার ভাই বোন ও বন্ধুরা যে সমব্যাথিতা ,সহমর্মিতা ও সবুজ মনের পরিচয় দিয়েছেন তাতে আপনাদের একান্ত আপনজন ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারছি না ,.......! তাই নিয়মের বাইরে গিয়ে আমার ফুলের কথা আমার ভাই,বোন ও আপনজনের কাছে শেয়ার করলাম, অপরাধ মার্জনা করবেন,এই আশা রাখি।
সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।