আমাদের বাড়িতে বাগান সেই বাবার আমল থেকে, ছোটবেলা থেকে ফুল আর পাখিদের মধ্যেই বড় হয়েছি। আমার মেয়ে তিতলিও তাই, খুব ছোট্ট থেকে গাছ ফুল আর পাখিদের সাথে থাকতে থাকতে এরা ছিলো ওর বড়ো প্রিয়।
এর সাথে ছিল ওর পোষ্যপ্রেম ,চিরকালই আমাদের বাড়ি 'ওঙ্কার ধাম 'এর গাছগাছালি পাখিদের নিশ্চিন্ত আশ্রয়, আমাদের বাড়িতে প্রচুর পাখি আসে রোজ,ছোটবেলা থেকে দেখেছি,পাশেই পুকুরের ধারে গম্ভীরমুখে বসে থাকতো মাছরাঙা ,কি অপূর্ব রূপ,...... মুগ্ধ হওয়ার মতোই ,এছাড়াও আসতো টিয়া,কুবোপাখী ,কোকিল,ফিঙে,দোয়েল,পায়রা,বৌ কথা কও ,বসন্ত বৌরি,শালিক আরো কত কি। ছাতারে পাখিগুলো খুব ঝগড়ুটে,এক মুহূর্ত চুপ থাকতে পারে না,সবসময় কাচর মাচর করে যাচ্ছে ,আর চড়ুই পাখির কথা আর কি বলবো,ওদের মতো দুস্টু পাখি কমই দেখেছি। আর আছে টুনটুনি,ভারী চঞ্চল,সবসময় ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে উড়ে বাড়াচ্ছে।.....
স্কুল থেকে ফিরেই তিতলির প্রথম কাজ ছিল বাগানে আর বাড়ির ছাদের বাগানের গাছগুলোর পরিচর্যা ,ওর মায়ের বকুনির মধ্যেই শেষ হতো এই পর্ব। ভোরে উঠে ওর গাছে কোনো নতুন ফুল বা ফল ধরলে আমাকে ডেকে না দেখানো পর্যন্ত ওর শান্তি হতো না না।
প্রতি বছর ওর জন্মদিন বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে গাছই ছিল ওর সবচেয়ে প্রিয় উপহার। আগেই বলেছি ছুটি পেলেই আমরা বেরিয়ে পড়তাম,কোনো নির্দিষ্ট কোন গন্তব্য না নিয়েই,এইভাবেই কত নতুন ফুল আর গাছেদের সাথে পরিচয় হতো আমাদের, তাদের কাউকে কাউকে আপন করে নিয়ে আসতাম আমার বাগানে আবার কারো কারো রূপ দেখেই মোহিত হতাম।এইভাবেই তিতলির বায়নায় আমার বাগানে এসেছে জারুল,পলাশ,ঝুমকোলতা বা প্যাসিফ্লোরারা ,.........
গত বছর এইভাবেই আমার এক বন্ধুর বাড়িতে আমাদের সাথে দেখা হল রূপসী চন্দ্রপ্রভার ! থোকা থোকা ফুলে সারা শরীর জুড়ে রূপের জ্বেলে দাঁড়িয়ে ছিল সে।
যথারীতি তিতলীর বায়না ,বাবা এই গাছটা আমার চাই। নার্সারীতে খোঁজ করেও পেলাম না গাছটা,তিতলীও নাছোড়বান্দা,গাছটা ওর চাই ই চাই । তারপর আমার চেনা এক নার্সারীর মালিক বললো, 'আমি জোগাড় করে আপনার বাড়িতে পৌঁছে দেব ' এই কথা শুনেই আমরা বাড়ী ফিরলাম।
তারপর এল সেই অভিশপ্ত দিন,২৫শে মার্চ তিতলীর এক্সিডেন্ট ,.! হসপিটালের এমার্জেন্সি তারপর সুপার স্প্যাসিলিটি ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে ৩ দিনের অসম-যুদ্ধে ২৮ শে হার মানলো আমার একমাত্র সোনা মেয়েটা ,..............
ওকে নিয়ে যখন শেষবারের মতো বাড়ি ফিরছি, আমার শহর জুড়ে শোকের ছায়া , আমার বাড়িতে কয়েক হাজার লোকে, তাদের অনেকের হাতেই ফুল,সবাই শেষ বারের মতো দেখতে এসেছে আমার পাগলী মেয়েটাকে। ....
তখন গোধূলীবেলা, তিতলিকে রেখে বুকফাটা কান্না নিয়ে বাগানের দিকে তাকিয়ে দেখি, এক কোণে একটা প্যাকেট এ রাখা রয়েছে,একটা চন্দ্রপ্রভা গাছ,তাতে থোকা থোকা ফুল ফুটেছে,............... (পরে দারোয়ানের কাছে জেনেছিলাম সে দিন দুপুরে নার্সারীর থেকে দিয়ে গেছে গাছটা ) গাছটা দেখে বুক ফেটে যাচ্ছে,....... ভাবলাম ফেলেই দেব, তারপর কি ভেবে একথোকা ফুল ছিঁড়ে নিয়ে রাখলাম আমার মেয়ের ফুলে ফুলে ঢাকা বুকের ওপর , তিতলির মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হলো মুখটা কি একটু হাসি হাসি লাগলো,.............. না কি এ আমার মনের ভুল ,...........!!!
এই গ্রূপের নিয়ম অনুযায়ী ব্যাক্তিগত ছবি বা ঘটনা পোস্ট করা উচিত নয়, কিন্তু আমার প্রথম পোস্ট (প্যাসিফ্লোরা) এর কমেন্ট করে এই গ্রূপের আমার ভাই বোন ও বন্ধুরা যে সমব্যাথিতা ,সহমর্মিতা ও সবুজ মনের পরিচয় দিয়েছেন তাতে আপনাদের একান্ত আপনজন ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারছি না ,.......! তাই নিয়মের বাইরে গিয়ে আমার ফুলের কথা আমার ভাই,বোন ও আপনজনের কাছে শেয়ার করলাম, অপরাধ মার্জনা করবেন,এই আশা রাখি।
সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।
এর সাথে ছিল ওর পোষ্যপ্রেম ,চিরকালই আমাদের বাড়ি 'ওঙ্কার ধাম 'এর গাছগাছালি পাখিদের নিশ্চিন্ত আশ্রয়, আমাদের বাড়িতে প্রচুর পাখি আসে রোজ,ছোটবেলা থেকে দেখেছি,পাশেই পুকুরের ধারে গম্ভীরমুখে বসে থাকতো মাছরাঙা ,কি অপূর্ব রূপ,...... মুগ্ধ হওয়ার মতোই ,এছাড়াও আসতো টিয়া,কুবোপাখী ,কোকিল,ফিঙে,দোয়েল,পায়রা,বৌ কথা কও ,বসন্ত বৌরি,শালিক আরো কত কি। ছাতারে পাখিগুলো খুব ঝগড়ুটে,এক মুহূর্ত চুপ থাকতে পারে না,সবসময় কাচর মাচর করে যাচ্ছে ,আর চড়ুই পাখির কথা আর কি বলবো,ওদের মতো দুস্টু পাখি কমই দেখেছি। আর আছে টুনটুনি,ভারী চঞ্চল,সবসময় ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে উড়ে বাড়াচ্ছে।.....
স্কুল থেকে ফিরেই তিতলির প্রথম কাজ ছিল বাগানে আর বাড়ির ছাদের বাগানের গাছগুলোর পরিচর্যা ,ওর মায়ের বকুনির মধ্যেই শেষ হতো এই পর্ব। ভোরে উঠে ওর গাছে কোনো নতুন ফুল বা ফল ধরলে আমাকে ডেকে না দেখানো পর্যন্ত ওর শান্তি হতো না না।
প্রতি বছর ওর জন্মদিন বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে গাছই ছিল ওর সবচেয়ে প্রিয় উপহার। আগেই বলেছি ছুটি পেলেই আমরা বেরিয়ে পড়তাম,কোনো নির্দিষ্ট কোন গন্তব্য না নিয়েই,এইভাবেই কত নতুন ফুল আর গাছেদের সাথে পরিচয় হতো আমাদের, তাদের কাউকে কাউকে আপন করে নিয়ে আসতাম আমার বাগানে আবার কারো কারো রূপ দেখেই মোহিত হতাম।এইভাবেই তিতলির বায়নায় আমার বাগানে এসেছে জারুল,পলাশ,ঝুমকোলতা বা প্যাসিফ্লোরারা ,.........
গত বছর এইভাবেই আমার এক বন্ধুর বাড়িতে আমাদের সাথে দেখা হল রূপসী চন্দ্রপ্রভার ! থোকা থোকা ফুলে সারা শরীর জুড়ে রূপের জ্বেলে দাঁড়িয়ে ছিল সে।
যথারীতি তিতলীর বায়না ,বাবা এই গাছটা আমার চাই। নার্সারীতে খোঁজ করেও পেলাম না গাছটা,তিতলীও নাছোড়বান্দা,গাছটা ওর চাই ই চাই । তারপর আমার চেনা এক নার্সারীর মালিক বললো, 'আমি জোগাড় করে আপনার বাড়িতে পৌঁছে দেব ' এই কথা শুনেই আমরা বাড়ী ফিরলাম।
তারপর এল সেই অভিশপ্ত দিন,২৫শে মার্চ তিতলীর এক্সিডেন্ট ,.! হসপিটালের এমার্জেন্সি তারপর সুপার স্প্যাসিলিটি ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে ৩ দিনের অসম-যুদ্ধে ২৮ শে হার মানলো আমার একমাত্র সোনা মেয়েটা ,..............
ওকে নিয়ে যখন শেষবারের মতো বাড়ি ফিরছি, আমার শহর জুড়ে শোকের ছায়া , আমার বাড়িতে কয়েক হাজার লোকে, তাদের অনেকের হাতেই ফুল,সবাই শেষ বারের মতো দেখতে এসেছে আমার পাগলী মেয়েটাকে। ....
তখন গোধূলীবেলা, তিতলিকে রেখে বুকফাটা কান্না নিয়ে বাগানের দিকে তাকিয়ে দেখি, এক কোণে একটা প্যাকেট এ রাখা রয়েছে,একটা চন্দ্রপ্রভা গাছ,তাতে থোকা থোকা ফুল ফুটেছে,............... (পরে দারোয়ানের কাছে জেনেছিলাম সে দিন দুপুরে নার্সারীর থেকে দিয়ে গেছে গাছটা ) গাছটা দেখে বুক ফেটে যাচ্ছে,....... ভাবলাম ফেলেই দেব, তারপর কি ভেবে একথোকা ফুল ছিঁড়ে নিয়ে রাখলাম আমার মেয়ের ফুলে ফুলে ঢাকা বুকের ওপর , তিতলির মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হলো মুখটা কি একটু হাসি হাসি লাগলো,.............. না কি এ আমার মনের ভুল ,...........!!!
এই গ্রূপের নিয়ম অনুযায়ী ব্যাক্তিগত ছবি বা ঘটনা পোস্ট করা উচিত নয়, কিন্তু আমার প্রথম পোস্ট (প্যাসিফ্লোরা) এর কমেন্ট করে এই গ্রূপের আমার ভাই বোন ও বন্ধুরা যে সমব্যাথিতা ,সহমর্মিতা ও সবুজ মনের পরিচয় দিয়েছেন তাতে আপনাদের একান্ত আপনজন ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারছি না ,.......! তাই নিয়মের বাইরে গিয়ে আমার ফুলের কথা আমার ভাই,বোন ও আপনজনের কাছে শেয়ার করলাম, অপরাধ মার্জনা করবেন,এই আশা রাখি।
সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন