বুধবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৬

ইউক্যালিপটাস 'Eucalyptus'

ইউক্যালিপটাস  'Eucalyptus' Myrtaceae পরিবারের একটি গণের নাম এটি মূলত একটি কাঠের গাছ যা প্রকৃতিগত ভাবে অষ্ট্রেলিয়ায় পাওয়া যায়। যদিও এর আবহাওয়াগত অভিযোজন ক্ষমতার কারণে প্রায় সব মহাদেশেই দেখতে পাওয়া যায়। সারা বিশ্বে ইউক্যালিপটাসের প্রায় ৭০০ প্রজাতি আছে তবে পাপুয়া নিউ গিনি ও ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত এর প্রাকৃতিক ভাবে বিস্তার রয়েছে। পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মাত্র ১৫টি প্রজাতি চালু করা উদ্ভিদ হিসেবে। দ্রুতবর্ধনশীলতা এবং অভিযোজন ক্ষমতার কারনে এটি অনেক দেশেই কাঠের গাছ হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে যদিও উল্লেখ্য যে এই ইউক্যালিপটাসের কোন প্রজাতিই তুষারপাত সহ্য করতে পারে না। এটা উষ্ণমণ্ডলীয় এবং উষ্ণ উভয় প্রকারের জলবায়ুর প্রদেশে বেচে থাকতে সক্ষম।
ইউক্যালিপটাস হচ্ছে মোট তিনটি গণের একই উল্লেখিত নাম যাদেরকে এই "eucalypts" নামে ডাকা হয়। অন্য গণ দুটি হচ্ছে কোরিম্বিয়া  এবং অ্যাঙ্গোফোরা্‌ ভারতীয় উপমহাদেশের বেশ কিছু জায়গায় উদাহরণস্বরুপ ভারতে, বাংলাদেশে ইউক্যালিপ্টাস গাছকে নীলগিরি বা নীলগিরি গাছ নামে ডাকা হয়। এই গাছের তেলের অনেক ব্যবহার রয়েছে,বিশেষত এন্টিসেপটিক ও পরিস্কারক হিসেবে, মশা নিধনেও এই তেলের ভূমিকা রয়েছে। কাঠ হিসেবে এর রয়েছে ব্যবহার, বেশ সুদর্শন এর পাতা, মসৃণ কান্ড। এদের ফূল সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি ছাড়াও বেশ স্বাদিষ্ট মধূ প্রস্তুতে কাজে লাগে। বেশ কিছু ইউক্যালিপ্টাস এর প্রজাতিতে গাম নিঃসরণের কারণে এদেরকে gum tree হিসেবে অভিহিত করা হয়।
তবে এর ক্ষতিকর কিছু দিক আছে। এই গাছটিতে অধিক পরিমাণে তেল থাকায় এটা বেশ দাহ্য এবং খোদ এর আবাসভূমি অস্ট্রেলিয়াতে একে অগ্নি সৃষ্টিকারী হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। তাই আবাসিক এলাকায় বা ঘরবাড়ির কাছে এটাকে কম লাগানো হয়। তবে বড় বড় সড়কের ধারে সারিবদ্ধ ভাবে লাগানো থাকে আর বসন্তে এর চমক লাগানো ফূল দেখে প্রায় চেনাই যায় না যে সারাবছর অনাড়ম্বর থাকা এই বৃক্ষটিকে।

  কথায় কথায় আমরা অনেকেই বলি, ‘টাকা কি গাছে ধরে?’ । তবে বিস্ময়কর ব্যাপার এই যে, গাছে টাকা না ধরলেও এবার স্বর্ণ ফলবে ঠিকই ! এমনই সুসংবাদ দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা । তারা দেখতে পেয়েছেন যে, টাকার চেয়েও মহামূল্যবান সম্পদ সোনা যা ফলতে পারে গাছে।
এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা জানান, ইউক্যালিপটাস গাছের পাতায় সোনা ফলতে পারে। এই গাছের গভীর শিকড় মাটি থেকে নির্যাস নিয়ে সোনা তৈরিতে সক্ষম।
ন্যাচার কমিউনিকেশন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
এই আবিস্কার সোনা সঙ্কটে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে দিতে পারে। বিশ্বব্যাপী দিনদিনই সোনার মজুদ কমছে এবং দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
সাময়িকীটি জানায়, গত এক দশকে সোনার খনির আবিস্কার ৪৫ শতাংশ কমে গেছে।
নিবন্ধে বলা হয়, ইউক্যালিপটাস গাছের শিকড় শুকনো মৌসুমে মাটির গভীরে পৌঁছে জল  সংগ্রহ করে।

বিদেশি গাছ "ইউক্যালিপটাস"। খাদ্য উৎপাদনের জন্য এরা বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বনডাইঅক্সাইডের পরিবর্তে অক্সিজেন এবং মাটি থেকে প্রচুর জল  শোষন করে যা নিকটস্থ অন্যান্য উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য হুমকি স্বরূপ।
অনেক সময় শিকড় সোনাসমৃদ্ধ স্তরে পৌঁছে যায় এবং সোনা তৈরির ক্ষুদ্রকণা আহরণ করে।
অস্ট্রেলিয়ার একদল বৈজ্ঞানিক বলেছেন, তারা দেখতে পেয়েছেন- এসব শিকড় সোনা আহরণ করতে পারে এবং সেগুলো পাতায় পরিবাহিত করতে পারে।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল জানায়, সভ্যতার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মাটির নিচ থেকে ১ লাখ ৭৪ হাজার টন সোনা আহরণ করা হয়েছে।
২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানায়, বিশ্বে এখন মাত্র ৫১ হাজার টন সোনার মজুদ রয়েছে।
মহামূল্যবান এই ধাতুটির দাম গত কয়েক বছরে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০০ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সোনার দাম বেড়েছে ৪৮২ শতাংশ।
যত সোনা আহরণ করা হয়, তার ৬০ ভাগ দিয়ে অলঙ্কার বানানো হয়। এছাড়া ইলেকট্রনিক্সের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং ক্যান্সার চিকিৎসাসহ মেডিকেল প্রযুক্তি তৈরিতেও সোনা ব্যবহার করা হয়।
গাছে সোনা ফলার গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ ও পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সম্ভাব্য সোনা মজুতের স্থানে ইউক্যালিপটাস গাছের বৃদ্ধি পরীক্ষা করেন। তারা এক্সরে ইমেজের মাধ্যমে গাছের পাতা, কাঠি, বাকল, আগাছা ও মাটিতে স্বর্ণ পরীক্ষা করেন।
ইউক্যালিপটাস গাছ ৩৩ ফুটের বেশি লম্বা হতে পারে এবং এর শিকড় ১৩২ ফুটের মত গভীরে প্রবেশ করতে সক্ষম।
তবে গাছে সোনার উপস্থিতি তেমন বেশি নয়। প্রতি টনে এক গ্রামের কয়েক হাজার ভাগের একভাগ সোনা পাওয়া গেছে। সোনার বেশি উপস্থিতি রয়েছে পাতায়।
গাছেও সোনার উপস্থিতি সনাক্ত করা গেছে। তবে সেই সোনা মাটি থেকে আহরণ করা হয়েছে নাকি তা বাতাসে সৃষ্টি হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।
বিজ্ঞানীরা লিখেছেন, এ অবিস্কারের সূত্র ধরে ভবিষ্যতে হয়তো সোনার নিরবচ্ছ্ন্নি সরবরাহ ঠিক রাখার প্রযুক্তি আবিস্কৃত হতে ও পারে ।

তথ্যসুত্র ঃ-/এমটি নিউজ২৪/আল-আমিন/এএস২৬ সেপ্টেম্বর,২০১৫
 বাড়িতে বা বাগানে কয়েকটা ইউক্যালিপটাস গাছ লাগিয়ে দেখবেন নাকি আপনি সোনার তালের অপর বাস করছেন কি না । এই বাজারে সোনা পাওয়া  গেলে তো ভালই, না পেলেও বসন্তে অন্তত চোখ জুড়ানো ফুল তো পাবেন, সঙ্গে কাঠ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন