মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৬

অশোক

'তোমার অশোকে কিংশুকে
অলক্ষ্য রঙ লাগল
আমার অকারণের সুখে।'
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

শোক নাশ করে বলেই এর নাম অশোক। চৈত্র মাসের শুক্লাষষ্ঠীতে পুত্রবতী মায়েরা পুত্রের কল্যাণ কামনা করে অশোক ফুল দিয়ে পূজা করেন, একে অশোকষষ্ঠী বলে। পুত্রবিয়োগের শোক থেকে রক্ষা পেতে ছয়টি অশোক ফুল জলে ভিজিয়ে জলপান করেন হিন্দু নারীরা। এ ছাড়া চৈত্রের শুক্লাঅষ্টমীতে পালিত হয় অশোকাষ্টমী। পূজা-অর্চনায়, বিশেষ করে শারদীয় দুর্গাপূজায় এর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
রামায়ণে আছে, রাবণ সীতাকে হরণ করে রেখেছিলেন অশোকগাছের তলে। কথিত আছে, গৌরী অশোক গাছের তলায় তপস্যা করে শিবের পুণ্যমনোরথ হয়েছিলেন।
অশোক গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Saraca indica, এটি Fabaceae গোত্রের উদ্ভিদ। অশোক এর আরও একটি প্রজাতি দেখতে পাওয়া যায় যার নাম হলুদ অশোক। ইংরেজি নাম Yellow Ashok, Yellow Saraca এবং বৈজ্ঞানিক নাম Saraca thaipingensis. অন্যান্য নাম হেমাপুষ্প, অঞ্জনপ্রিয়া, মধুপুষ্প।
 ‘আসত তারা কুঞ্জবনে চৈত্র জ্যোৎস্নারাতে
অশোক শাখা উঠত ফুটে প্রিয়ার পদাঘাতে’

অশোক মাঝারি আকৃতির এ অঞ্চলের নিজস্ব চিরসবুজ বৃক্ষ। পঁচিশ থেকে ত্রিশ মিটার উঁচু হয়। পাতা যৌগিক। একটি পাতায় দশটি পত্রক থাকে। পাতার রং গাঢ় সবুজ। লম্বা, চওড়া ও বর্শা ফলকাকৃতির। কচিপাতা নরম, ঝুলন্ত ও তামাটে। বসন্তকাল ফুল ফোটার সময়। আষাঢ়ের শুরু পর্যন্ত গাছে ফুল থাকে। ফুল ছোট, পুংকেশর দীর্ঘ ও মঞ্জরিতে অনেক ফুল জন্মায়। ফুলের রঙ কমলা থেকে লাল। ফুল ফুটলে মিষ্টি গন্ধে চারপাশ ভরে যায়। ফল শিম জাতীয়, মাংসল ও লাল। ফলে খয়েরি রঙের বীজ থাকে।
বাগানে শোভাবর্ধক হিসেবে এ গাছ বেশি লাগানো হয়। তবে অশোকের ভেষজ গুণও রয়েছে। শুকনো ফুল রক্ত আমাশয়ে এবং বীজ মূত্রনালির রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

কৃতজ্ঞতা : গুগল 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন