"আমি চাই তাঁরে
আমারে দিলেন যিনি সেবিকার সন্মান,
ঝরে-পড়া ধুতরো ফুল
ধুলো হতে তুলে নিলেন যিনি দক্ষিণ করে ।
ওগো প্রভু, ওগো প্রভু,
সেই ফুলে মালা গাঁথো,
পরো পরো আপন গলায়,
ব্যর্থ হতে তারে দিয়ো না দিয়ো না ।"
ধুতরো একটি ভেষজ উদ্ভিদ
ধুতরো বা ধুতরা নামে এ গাছটি আমাদের দেশে সবার কাছে পরিচিত। যার ইংরেজী নাম: Datura, Jimsonweed, Stinkweed, Madapple, Thornapple, Stramonium, উদ্ভিদ তাত্ত্বিক নাম : Datura Stramonium, গোত্র- Soalanaceae, গাছ ঝাড় বিশিষ্ট আকারের, উচ্চতায় প্রায়- ১ মিটারের মতো হয়ে থাকে, পাতা বড়, আকার আকৃতি, ত্রিকোণাকৃতির, রঙ সবুজ, শিরা ও মধ্যশিরা স্পষ্ট। ধুতরো গাছের দু’টি প্রজাতি আমাদের দেশে জন্মাতে চোখে পড়ে। সাদা রঙের ধুতরো ও কালো রঙের ধুতরো। সাদা রঙের ধুতরো এর বোঁটা, পাতা ও গাছ হালকা সবুজ রঙের হয় এবং কালো রঙের ধুতরো গাছের পাতার বোঁটা ও গাছ বেগুনি মিশ্র রঙের হয়। কোনো কোনো মানুষের সাথে ধুতরো গাছটির সরাসরি পরিচয় না থাকলেও প্রায় মানুষের কাছে ধুতরো গাছটি যেন বিপদ জনক এক উদ্ভিদ। কারণ হিসেবে ধুতরো গাছের বিভিন্ন অংশে থাকা ভেষজ গুণাগুণ যা অতি মাত্রায় ব্যবহার বা দুষ্কৃতভাবে তার অপব্যবহার। সত্যিকার অর্থে ধুতরো গাছের পাতা, ফুল, ফল, বীজ ভেষজ গুণাগুণ সম্পন্ন এক উদ্ভিদ। গাছের ব্যবহার্য অংশ আয়ুর্বেদিক, ইউনানী ও হেকিমী শাস্ত্রবিদগণ যুগ-যুগ ধরে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করে আসছেন। তবে এর সঠিক ব্যবহার ও মাত্রার উপর যতœবান থাকলে কোন ধরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটে না, বরং বয়ে আনে সুফল। ধুতরো গাছের পাতায় যে ভেষজ উপাদান পাওয়া যায় তা হলো- হ্যায়োস্যামাইন, বেলডোনা ও হেনবেন। ধুতরো ব্রংকাইটিস, হাঁপানী রোগের ঔষধ, অনিদ্রা দূর করে, মুখের লালাক্ষরণ দূর করে, স্তনের ব্যাথা ও শরীরের অন্যান্য স্থানের ব্যাথা সারাতে ব্যবহৃত হয় ধুতরো । বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় অযতেœ-অবহেলার মাঝেও ধুতরো গাছ জন্মাতে দেখা যায়। এমনকি ২৫০০ মিটার উচ্চতার পাহাড়েও ধুতরো গাছ জন্মাতে সক্ষম। তবে এ গাছটি বর্তমান সময়ে ধীরে ধীরে বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে, আগেকার মতো তেমন চোখে পড়ে না। সাধারণত ভিজে স্যাঁত স্যেতে মাটিতে এ গাছ জন্মাতে বেশী দেখা যায়। তাছাড়া আবর্জনা পঁচা তুপের ধার, রাস্তার ধার, পতিত জমি, বন জঙ্গল, নদীর ধারে, ভেষজ বাগানে ও প্রায় সব ধরণের মাটিতে ধুতরো গাছ জন্মাতে চোখে পড়ে।
ভেষজ গুণাগুণের পাশাপাশি ধুতরো গাছের ফুলের সৌন্দর্য অত্যান্ত আকর্ষণীয় ও মনোরম। ফুলের বাহারী সৌন্দর্যের জন্য অনেকেই বাগানে ধুতরো গাছ রোপন করে থাকেন। বর্ষাকালে ধুতরো গাছে ফুল ধরে, বর্ষার শেষ থেকে শরতের প্রথম অংশ জুড়ে গাছে ফুল ফুটতে দেখা যায়। গাছের শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে ফুল ধরে, ফুল দেখতে লম্বাকৃতির, সাদা জাতের ধুতরোর গাছে সাদা রঙের ফুল এবং কালো জাতের ধুতরোর সাদা-বেগুনী মিশ্র রঙের উর্ধ্বমুখী ফুল। ফুলে মৃদু সুগন্ধ আছে, পড়ন্ত বিকেল থেকে সন্ধ্যায় গাছে ফুল ফুটে। দিনে রোদের আলোয় ফুল সংকুচিত হয়ে যায়, সন্ধ্যায় পুনরায় পাপড়ি মেলে। এভাবে ফুটন্ত ফুল ২-৩ দিন তাজা থেকে ঝরে যায়। ফুলের গঠন বৃতির উপর একই পাপড়িতে পাঁচটি অংশে বিভক্ত পাপড়ি ও উক্ত পাপড়ির ভিতর হতে আরো এমন একটি পাপড়ি সজ্জিত অবস্থায় থাকে। ধুতরো স্ব-পরাগায়িত ফুল, ফুলের ভিতর পুংদন্ড ও গর্ভমুন্ড অবস্থিত। ফুল শেষে গাছে ফল হয়, ফল গোলাকার, ফলের গায়ে ছোট-ছোট কাটায় ভরা থাকে। কচি ফল প্রথমে সবুজ ও পরিপক্ক ফলের রঙ খায়েরী বর্ণের হয়। ফল পাঁকলে চারটি প্রকোষ্টে বিভক্ত হয়ে যায়। ফলের ভিতর বীজ হয়, বীজের মাধ্যমে বংশ বিস্তার ঘটে।
লাভা..লগ হাটের উঠোনে..চেয়ারে বসে রোদ পোহাচ্ছি..আলোর আলপনা..সামনে-পিছনে আকাশ-চাওয়া ধূপীবনের আলোছায়া...একটি পথ নেমে গেছে আবছা পাহাড়ের দিকে..অন্তরে বেজে ওঠে ' কার মিলন চাও বিরহী–
তাঁহারে কোথা খুঁজিছ ভব-অরণ্যে
কুটিল জটিল গহনে শান্তিসুখহীন ওরে মন॥'...
সুন্তালেখোলা'..পথের একটু উপরে নিঃসঙ্গ দুটি কটেজ..বিকেলবেলার নরম আলোর বারান্দা...পথ দিয়ে গরুবা ঘন্টা বাজিয়ে ঘরে ফিরছে..যোগ দিয়েছে ঝিঁঝিরাও....উদাস মেঘলা মন গেয়ে উঠল..'দিন অবসান হল/আমার আঁখি হতে অস্তরবির আলোর আড়াল তোলো..'
জলঢাকা..বাংলোর পাশেই অবিরাম জলতরঙ্গ..পাথরে কত নকশা কাটছে জলের হিজিবিজি ধারা...দূরে ঘুম-ঘুম পাহাড়..পাতারা ভেসে বেড়াচ্ছে এলোমেলো...পাখিরা ইতিউতি..একটি বেড়ালছানা পায়েপায়ে ঘুরছে...' আকাশ বোঝে আনন্দ তার, বোঝে নিশার নীরব তারা..'
দক্ষিণ সিকিম...টেমি চা বাগান..রিসর্টের বারান্দায়..বাগানের শ্যামলিমায় মিশছে মুক্তোর মত বৃষ্টি...চৌরাশিয়া-শিবকুমারের 'walking in the rain'শেষ ..ভিজে আমেজে সবুজের দিকে চেয়ে 'শুধু অকারণ পুলকে'.....'ওগো, নির্জনে বকুলশাখায় দোলায় কে আজি দুলিছে, দোদুল দুলিছে।'
পশ্চিম সিকিম..কালুক..কটেজের হলের ডিভান থেকে দেখি..একঝাড় নীল-বেগুনী ধুতরো ফুল জানালার কাঁচ ভেঙে আমার কাছে আসতে চাইছে..দূরের সাদা পাহাড় আমাকে বাইরে ডাকছে..'আকাশ জুড়ে শুনিনু ওই বাজে তোমারি নাম সকল তারার মাঝে'...চারিদিকে 'ঝরছে জগৎ ঝরনাধারার মতো..'
উত্তর সিকিম..তিনচুলে..আদিম অরণ্যের মাঝে কেশবরণ পথ...নিশ্চল শান্তি।..শিশিরে ভিজছি।..গাছের পাতা ও মেঘ-কুয়াশার কোলাজ।..'আজ কি ঘুচিল চিহ্ন তাহার, উঠিল বনের তৃণ ॥'....
আমারে দিলেন যিনি সেবিকার সন্মান,
ঝরে-পড়া ধুতরো ফুল
ধুলো হতে তুলে নিলেন যিনি দক্ষিণ করে ।
ওগো প্রভু, ওগো প্রভু,
সেই ফুলে মালা গাঁথো,
পরো পরো আপন গলায়,
ব্যর্থ হতে তারে দিয়ো না দিয়ো না ।"
ধুতরো একটি ভেষজ উদ্ভিদ
ধুতরো বা ধুতরা নামে এ গাছটি আমাদের দেশে সবার কাছে পরিচিত। যার ইংরেজী নাম: Datura, Jimsonweed, Stinkweed, Madapple, Thornapple, Stramonium, উদ্ভিদ তাত্ত্বিক নাম : Datura Stramonium, গোত্র- Soalanaceae, গাছ ঝাড় বিশিষ্ট আকারের, উচ্চতায় প্রায়- ১ মিটারের মতো হয়ে থাকে, পাতা বড়, আকার আকৃতি, ত্রিকোণাকৃতির, রঙ সবুজ, শিরা ও মধ্যশিরা স্পষ্ট। ধুতরো গাছের দু’টি প্রজাতি আমাদের দেশে জন্মাতে চোখে পড়ে। সাদা রঙের ধুতরো ও কালো রঙের ধুতরো। সাদা রঙের ধুতরো এর বোঁটা, পাতা ও গাছ হালকা সবুজ রঙের হয় এবং কালো রঙের ধুতরো গাছের পাতার বোঁটা ও গাছ বেগুনি মিশ্র রঙের হয়। কোনো কোনো মানুষের সাথে ধুতরো গাছটির সরাসরি পরিচয় না থাকলেও প্রায় মানুষের কাছে ধুতরো গাছটি যেন বিপদ জনক এক উদ্ভিদ। কারণ হিসেবে ধুতরো গাছের বিভিন্ন অংশে থাকা ভেষজ গুণাগুণ যা অতি মাত্রায় ব্যবহার বা দুষ্কৃতভাবে তার অপব্যবহার। সত্যিকার অর্থে ধুতরো গাছের পাতা, ফুল, ফল, বীজ ভেষজ গুণাগুণ সম্পন্ন এক উদ্ভিদ। গাছের ব্যবহার্য অংশ আয়ুর্বেদিক, ইউনানী ও হেকিমী শাস্ত্রবিদগণ যুগ-যুগ ধরে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করে আসছেন। তবে এর সঠিক ব্যবহার ও মাত্রার উপর যতœবান থাকলে কোন ধরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটে না, বরং বয়ে আনে সুফল। ধুতরো গাছের পাতায় যে ভেষজ উপাদান পাওয়া যায় তা হলো- হ্যায়োস্যামাইন, বেলডোনা ও হেনবেন। ধুতরো ব্রংকাইটিস, হাঁপানী রোগের ঔষধ, অনিদ্রা দূর করে, মুখের লালাক্ষরণ দূর করে, স্তনের ব্যাথা ও শরীরের অন্যান্য স্থানের ব্যাথা সারাতে ব্যবহৃত হয় ধুতরো । বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় অযতেœ-অবহেলার মাঝেও ধুতরো গাছ জন্মাতে দেখা যায়। এমনকি ২৫০০ মিটার উচ্চতার পাহাড়েও ধুতরো গাছ জন্মাতে সক্ষম। তবে এ গাছটি বর্তমান সময়ে ধীরে ধীরে বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে, আগেকার মতো তেমন চোখে পড়ে না। সাধারণত ভিজে স্যাঁত স্যেতে মাটিতে এ গাছ জন্মাতে বেশী দেখা যায়। তাছাড়া আবর্জনা পঁচা তুপের ধার, রাস্তার ধার, পতিত জমি, বন জঙ্গল, নদীর ধারে, ভেষজ বাগানে ও প্রায় সব ধরণের মাটিতে ধুতরো গাছ জন্মাতে চোখে পড়ে।
ভেষজ গুণাগুণের পাশাপাশি ধুতরো গাছের ফুলের সৌন্দর্য অত্যান্ত আকর্ষণীয় ও মনোরম। ফুলের বাহারী সৌন্দর্যের জন্য অনেকেই বাগানে ধুতরো গাছ রোপন করে থাকেন। বর্ষাকালে ধুতরো গাছে ফুল ধরে, বর্ষার শেষ থেকে শরতের প্রথম অংশ জুড়ে গাছে ফুল ফুটতে দেখা যায়। গাছের শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে ফুল ধরে, ফুল দেখতে লম্বাকৃতির, সাদা জাতের ধুতরোর গাছে সাদা রঙের ফুল এবং কালো জাতের ধুতরোর সাদা-বেগুনী মিশ্র রঙের উর্ধ্বমুখী ফুল। ফুলে মৃদু সুগন্ধ আছে, পড়ন্ত বিকেল থেকে সন্ধ্যায় গাছে ফুল ফুটে। দিনে রোদের আলোয় ফুল সংকুচিত হয়ে যায়, সন্ধ্যায় পুনরায় পাপড়ি মেলে। এভাবে ফুটন্ত ফুল ২-৩ দিন তাজা থেকে ঝরে যায়। ফুলের গঠন বৃতির উপর একই পাপড়িতে পাঁচটি অংশে বিভক্ত পাপড়ি ও উক্ত পাপড়ির ভিতর হতে আরো এমন একটি পাপড়ি সজ্জিত অবস্থায় থাকে। ধুতরো স্ব-পরাগায়িত ফুল, ফুলের ভিতর পুংদন্ড ও গর্ভমুন্ড অবস্থিত। ফুল শেষে গাছে ফল হয়, ফল গোলাকার, ফলের গায়ে ছোট-ছোট কাটায় ভরা থাকে। কচি ফল প্রথমে সবুজ ও পরিপক্ক ফলের রঙ খায়েরী বর্ণের হয়। ফল পাঁকলে চারটি প্রকোষ্টে বিভক্ত হয়ে যায়। ফলের ভিতর বীজ হয়, বীজের মাধ্যমে বংশ বিস্তার ঘটে।
লাভা..লগ হাটের উঠোনে..চেয়ারে বসে রোদ পোহাচ্ছি..আলোর আলপনা..সামনে-পিছনে আকাশ-চাওয়া ধূপীবনের আলোছায়া...একটি পথ নেমে গেছে আবছা পাহাড়ের দিকে..অন্তরে বেজে ওঠে ' কার মিলন চাও বিরহী–
তাঁহারে কোথা খুঁজিছ ভব-অরণ্যে
কুটিল জটিল গহনে শান্তিসুখহীন ওরে মন॥'...
সুন্তালেখোলা'..পথের একটু উপরে নিঃসঙ্গ দুটি কটেজ..বিকেলবেলার নরম আলোর বারান্দা...পথ দিয়ে গরুবা ঘন্টা বাজিয়ে ঘরে ফিরছে..যোগ দিয়েছে ঝিঁঝিরাও....উদাস মেঘলা মন গেয়ে উঠল..'দিন অবসান হল/আমার আঁখি হতে অস্তরবির আলোর আড়াল তোলো..'
জলঢাকা..বাংলোর পাশেই অবিরাম জলতরঙ্গ..পাথরে কত নকশা কাটছে জলের হিজিবিজি ধারা...দূরে ঘুম-ঘুম পাহাড়..পাতারা ভেসে বেড়াচ্ছে এলোমেলো...পাখিরা ইতিউতি..একটি বেড়ালছানা পায়েপায়ে ঘুরছে...' আকাশ বোঝে আনন্দ তার, বোঝে নিশার নীরব তারা..'
দক্ষিণ সিকিম...টেমি চা বাগান..রিসর্টের বারান্দায়..বাগানের শ্যামলিমায় মিশছে মুক্তোর মত বৃষ্টি...চৌরাশিয়া-শিবকুমারের 'walking in the rain'শেষ ..ভিজে আমেজে সবুজের দিকে চেয়ে 'শুধু অকারণ পুলকে'.....'ওগো, নির্জনে বকুলশাখায় দোলায় কে আজি দুলিছে, দোদুল দুলিছে।'
পশ্চিম সিকিম..কালুক..কটেজের হলের ডিভান থেকে দেখি..একঝাড় নীল-বেগুনী ধুতরো ফুল জানালার কাঁচ ভেঙে আমার কাছে আসতে চাইছে..দূরের সাদা পাহাড় আমাকে বাইরে ডাকছে..'আকাশ জুড়ে শুনিনু ওই বাজে তোমারি নাম সকল তারার মাঝে'...চারিদিকে 'ঝরছে জগৎ ঝরনাধারার মতো..'
উত্তর সিকিম..তিনচুলে..আদিম অরণ্যের মাঝে কেশবরণ পথ...নিশ্চল শান্তি।..শিশিরে ভিজছি।..গাছের পাতা ও মেঘ-কুয়াশার কোলাজ।..'আজ কি ঘুচিল চিহ্ন তাহার, উঠিল বনের তৃণ ॥'....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন