নাগকেশর
--------যতীন্দ্র মোহন বাগচীচিত্ততলে যে নাগবালা ছড়িয়ে ছিঁড়ে কেশের কেশর কাঁদছে—–
অফুরন্ত অশ্রুধারা সহস্রবার নাসার বেশর বাঁধছে ;
মানিক-হারা পাগল-পারা যে বেদনা বাজছে তাহার বক্ষে,
পলে-পলে পলক বেয়ে অলক ছেয়ে ঝরছে যাহা চক্ষে ;
দুঃখে-ভাঙা বক্ষে যাহা নিশ্বসিয়া সকাল-সাঁঝে টুটছে—-
মহাকালের সোপানতলে নাগকেশরের ফুল হয়ে তাই ফুটছে !
মন-পাতালে যে নাগবালা রতন-জ্বালা কক্ষে ব’সে হাসছে—-
দীপ্তি যাহার নেত্রপথে শুভ্র-শুচি দৃষ্টি হয়ে আসছে ;
মুক্তামানিক সবার মাঝে বিলিয়ে দিয়ে উল্লাসে যে চঞ্চল,
উদ্বেলিত সিন্ধুসম দুলছে যাহার উচ্ছৃসিত অঞ্চল ;
বিশ্বভুবন পূর্ণ ক’রে যে আনন্দ শঙ্খস্বরে উঠছে—–
মহাকালের সোপানতলে নাগকেশরের ফুল হয়ে তাই ফুটছে
এটি পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা ও দক্ষিণ ভারতে প্রচুর দেখা যায়। এই গাছ প্রায় ১০০ ফুট লম্বা হয়। এদের ডাল বেশ নরম এবং গোলাকার। বাকল ০.৫ ইঞ্চি পুরু এবং ঈষৎ লাল। এর কাঠের রঙ লালচে। এই গাছে প্রচুর পাতা হয়। পাতার রঙ গাঢ় সবুজ। পত্রফলক ৫-৯ ইঞ্চি লম্বা, ২-২.৫ ইঞ্চি বিস্তৃত হয়। পাতার নিচের দিকে অবনত থাকে। পত্রবৃন্ত .২৫ ইঞ্চি। এই গাছে সুগন্ধি ছোটো ছোটো ফুল ফোটে। ফুলগুলো উভয় লিঙ্গিক। ফুলের ব্যাস ২/৩ ইঞ্চি। ফুলের বহিচ্ছদ ৪টি এবং দুই সারিতে থাকে। পাপড়ির রঙ পীতাভ লাল। পুংকেশর বহু এবং সোনালি বর্ণের হয়। গর্ভকেশরের মুণ্ডু ঢালের মতো।
এর ফল মোচার মতো। এর দৈর্ঘ্য ১-১.২৫ ইঞ্চি। ফুল থেকে এক প্রকার আঠা বের হয়। এর বীজ ১-৪টি হয়। বীজের রঙ ধূসর। ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল মাসে ফুল ফোটে । সেপ্টেম্বর মাসে ফল হয়। এই গাছের কাঠ বেশ শক্ত হয়। কাঠের রঙ লাল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন