ওঙ্কার ধামে নারকেল গাছ |
নারিকেল, 'নারকোল' বা নারকেল একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ফল । নারিকেল গাছ বিরাট উঁচু আকারের হয় এবং এর কোনো ডালপালা গজায় না । কচি নারিকেলকে ডাব বলে । নারিকেলের উপর যে স্তর থাকে তাকে ছোবড়া বলে। ছোবড়ার পরে একটি কঠিন খোলা বা খোলস থাকে । এই কঠিন খোলার ভিতরে সাদা রঙয়ের শাঁস ও জল থাকে । এই শাঁস ও জল খাওয়া হয় । নারিকেলের শাঁস দিয়ে নানা রকম খাবার তৈরি হয় । পিঠে পুলি বানাতে নারিকেল কাজে লাগে । নারিকেল থেকে তেলও নিষ্কাশন করা হয় যা মাথায় মাখা হয় বা খাওয়া হয়। নারিকেল গাছের সমস্ত অংশই কোন না কোন কাজে লাগে । নারিকেল পাতার কাঠি থেকে ঝাঁটা বা ঝাড়ু তৈরি করা হয়।
নানা রকমের শারীরিক সমস্যা নিরাময়ে সহায়ক হতে পারে নারকেল। এই ফলে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। শারীরিক ওজন হ্রাসের ব্যাপারে খাবারের উপাদান হিসেবে ফলটির বিভিন্ন ধরনের ব্যবহার হতে পারে:
নারকেলের জল: নারকেলের জল এখন অন্যান্য ফলের রসের (জুস) মতো বাজারজাত করা হচ্ছে। এটি ত্বক ও চোখের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। অন্য জুসের চেয়ে নারকেলের জলে শর্করা বা চিনির পরিমাণ কম। এতে রয়েছে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম প্রভৃতি খনিজ উপাদান। হালকা ব্যায়াম বা পরিশ্রমের ক্লান্তি দূর করতে নারকেলের জল বিশেষ উপকারী।
নারকেল তেল: ভোজ্য তেল হিসেবে রান্নায় নারকেল তেলের ব্যবহার দিনে দিনে জনপ্রিয় হচ্ছে। এটি মাখন, বাটার অয়েল ও ভেজিটেবল অয়েলের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কোলেস্টেরল ও শরীরের ওজন কমাতে নারকেল তেল কার্যকর।
নারকেলের চিনি: খাবারে প্রচলিত চিনির পরিবর্তে নারকেলের চিনির ব্যবহার করা যায়। তবে এতে শক্তির ঘনত্ব বেশি হওয়ায় শুধু বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
নারকেল-দই: দুধের তৈরি দইয়ের বিকল্প হিসেবে নারকেলের দই খাওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে যারা ল্যাকটোজ বা দুগ্ধজাত খাবার সহ্য করতে পারে না, তাদের জন্য নারকেলের দই বিশেষ প্রযোজ্য। স্বাভাবিক দই বা সয়াবিন থেকে উৎপাদিত দইয়ের চেয়ে নারকেলের দইয়ে চর্বির পরিমাণ বেশি।
নারকেলের শাঁস: তাজা নারকেলের ভেতরের সাদা অংশ (শাঁস) অত্যন্ত সুস্বাদু, ভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ এবং হালকা নাশতায় বেশ আকর্ষণীয় উপাদান হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। প্রতি ১০০ গ্রাম নারকেলের শাঁসে প্রায় ২৭১ কিলোক্যালরি শক্তি থাকে।
চুলের যত্নে তুলনা নেই নারকেল তেলের। এই তথ্য জানে সবাই। কিন্তু ত্বকের যত্নেও নারকেল তেল যে অনন্য- সে কথা অজানা অনেকের। অথচ ত্বকের যে কোনো সমস্যায় নারকেল তেলকে মহৌষধ হিসেবে গণ্য করেন আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা।
তেলে ত্বক তাজা চলুন জেনে নেয়া যাক এমন কিছু ত্বকসংক্রান্ত জটিলতা, নারকেল তেলের কল্যাণে সমাধান হয় সহজেই-
চুলকানি ও ফাটা ত্বকের যত্নে
চুলকানির মতো চর্মরোগে নারকেল তেল ব্যবহারে পাবেন সুফল। সেই সঙ্গে ফেটে যাওয়া ত্বকের লাবণ্য ফিরিয়ে আনতেও ব্যবহার করা যায় নারকেল তেল। চুলকানি উপশমে নারকেল তেল তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। আর নিয়মিত নারকেল তেল মাখলে ত্বকের শুষ্কতা দূর হবে। এতে কমবে ত্বক ফাটার আশঙ্কা।
ব্রণ ও ব্রণের দাগ সারাতেঃ-
ব্রণ সমস্যা সমাধানে নারকেল তেল ভীষণ উপকারী। ময়লা জমে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মূলত ব্রণ দেখা দেয়। নারকেল তেল বন্ধ হয়ে যাওয়া লোমকূপ পরিষ্কার করতেই শুধু সাহায্য করে না, লোমকূপের চারপাশের ফুলে যাওয়াও প্রশমন করে। এছাড়াও ব্রণের দাগ দূর করতেও নারকেল তেল সাহায্য করে। নিয়মিত নারকেল তেল ব্যবহার করলে ব্রণের দাগ ও ক্ষত ম্লান হবে। সঙ্গে নিয়মিত পরিষ্কার হবে আপনার ত্বকও।
র্যাশের রাশ টানতেঃ-
শীতকালে ত্বকে এক ধরণের লালচে ফুসকুঁড়ি কিংবা দাগ দেখা দেয়। যাতে প্রদাহ বা চুলকানিও হতে পারে। র্যাশ নামক এই সমস্যা সমাধানেও নারকেল তেলের সহায়তা নিতে পারেন। নারকেল তেল ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকে তৈরি হবে নমনীয়তা, আসবে কোমল ভাব। এর মাধ্যমে ত্বকের র্যাশের সমস্যা প্রশমিত হবে।
ফুলের মিষ্টি রস। সরকারি নাম ‘নীরা’। তবে যে গাছ থেকে মিলছে তা ফুল
নয়, ফলের জন্যই প্রসিদ্ধ। উত্তর-পূর্ব ভারতে এই প্রথম এ রাজ্যে সরকারি
উদ্যোগে নারকেল গাছের ফুল (মুচি) থেকে রস বার করার কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্প
তত্ত্বাবধায়কদের দাবি, ডায়াবেটিজে আক্রান্তেরাও নির্দ্বিধায় পান করতে
পারেন এ রস। খেতে পারেন ‘নীরা’ থেকে বানানো চিনি দিয়ে তৈরি মিষ্টি। সারা
বছর মেলা এই রসের দৌলতে রাজ্যে বিকল্প চাষের নতুন দরজা খুলতে পারে বলে
আশাবাদী তাঁরা।
বিশ্বে অন্যতম প্রধান নারকেল উৎপাদনকারী দেশের তালিকায় নাম রয়েছে ভারতের। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশে ১৮.৯৫ লক্ষ হেক্টরেরও বেশি জমিতে নারকেলের চাষ হয়। কেরল, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, গোয়া, আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, পশ্চিমবঙ্গ এবং লাক্ষাদ্বীপে এই চাষ বেশি। কিন্তু গাছের নানা রোগ, পোকার আক্রমণ এবং বাজারে প্রত্যাশিত দাম না পাওয়ার মতো বিভিন্ন কারণে চাষিরা দিনদিন নারকেল-চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ’ (আইসিএআর)-এর অন্তর্গত কেরলের ‘সেন্ট্রাল প্ল্যান্টেশন ক্রপস্ রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ (সিপিসিআরআই)-এর বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরেই নারকেলের উপর গবেষণা চালিয়ে আসছেন। তাঁদের লক্ষ্য, নানা উপায়ে নারকেল গাছকে কাজে লাগানো। সিপিসিআরআইয়ের ডিরেক্টর পি চৌডাপ্পা এবং দুই বিজ্ঞানী কে বি হেব্বার এবং এইচ পি মহেশ্বরাপ্পার তত্ত্বাবধানে হুগলির বলাগড়ে এক কৃষিজীবী পরিবারের বাগানে নারকেলের ফুল থেকে রস বার করার কাজ (পাইলট প্রজেক্ট) শুরু হয়েছে। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দীপককুমার ঘোষ (হুগলির প্রাক্তন জেলা উদ্যান আধিকারিক) এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকও রয়েছেন প্রকল্পে।
বাগানটিতে প্রায় তিনশো নারকেল গাছ রয়েছে। ফুল থেকে রস সংগ্রহ করার পরে ছেঁকে ঠান্ডা জায়গায় রাখা হচ্ছে, যাতে গেঁজে না যায়। হালকা ক্রিম রঙের মিষ্টি ‘নীরা’য় নানা ধরনের খনিজ পদার্থ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন রয়েছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিজ্ঞানী অসিত চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘এই রস পান করলে ডায়াবেটিজে আক্রান্তদের চিন্তার কারণ নেই। কারণ, এতে রক্তে মেশে এমন শর্করার পরিমাণ অত্যন্ত কম।’’ একমত এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ঐশ্বর্যদীপ ঘোষ।
নারকেল গাছ থেকে বছরে ১০০-১২০টি নারকেল পাওয়া যায়। যার বাজারদর বাবদ চাষি পান এক হাজার থেকে বারোশো টাকার মধ্যে। কেন্দ্র সরকারের ‘কোকোনাট ডেভেলপমেন্ট বোর্ড’ (সিডিবি)-এর ডেপুটি ডিরেক্টর খোকন দেবনাথ বলেন, ‘‘একটি নারকেল গাছে প্রতি মাসে একটি করে ফুল (মুচি) হয়। সারা বছরে যে ফুল থেকে গড়ে অন্তত ২০০-২৫০ লিটার মিষ্টি রস বার করা সম্ভব। কর্ণাটক-সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নীরা তৈরির অনুমতি ইতিমধ্যেই দিয়েছে।’’ সরকারি ভাবে প্রতি লিটার রসের দাম অন্তত ৬০ টাকা ধরা হয়েছে। সিডিবি-র হিসেবে একটি গাছ থেকেই বছরে ১২-১৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
কৃষি এবং উদ্যানপালন দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, এ রাজ্যে মোট যা নারকেল গাছ রয়েছে তার ৭৫ শতাংশ ডাবের জন্য ব্যবহার করা হয়। ২০ শতাংশ থেকে নারকেল নেওয়া হয়। বাকি পাঁচ শতাংশে ফল হয় না। প্রকল্পে যুক্ত বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দীপকবাবু জানাচ্ছেন, হিসেব করে দেখা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের এক শতাংশ গাছ থেকে বছরে ১,০২৪ লক্ষ লিটার রস পাওয়া সম্ভব। যার বাজারদর প্রায় ৬২ লক্ষ টাকা। এক জন চাষি এক হেক্টর (সাড়ে সাত বিঘে) জমিতে নারকেল গাছ লাগালে, সে সব গাছের ফুল থেকে সারা বছরে প্রায় ২১ লক্ষ টাকার রস বিক্রি করতে পারবেন। বিশ্বের বাজারে নারকেলের ফুলের এই রসের তৈরি চিনির বাজারও প্রতিদিন বাড়ছে। দীপকবাবুর আশা, ‘‘বিকল্প চাষে অর্থকরী ফসল হিসেবে নীরা আগামী দিনে বড় ভূমিকা নিতে পারে।’’
যাঁদের বাগানে চলছে এই প্রকল্প সেই দেবাশিস এবং কৌশিক ঘোষের বক্তব্য, ‘‘নারকেলের ফুলের রসের বাজার রয়েছে। সে জন্যই এমন বিকল্প চাষে উৎসাহী হয়েছি।’’ কেরলে ‘নীরা’ থেকে চিনি তৈরির খবর রয়েছে বিশিষ্ট মিষ্টিপ্রস্তুতকারক অমিতাভ দে-র কাছেও। রিষড়ার ‘ফেলু মোদক’-এর অন্যতম কর্ণধার অমিতাভবাবু জানান, তাঁরা ‘নীরা’কে ‘হেল্থ ড্রিঙ্ক’ হিসেবে বাজারে আনতে চান। আবার ওই রস থেকে তৈরি চিনি দিয়ে ডায়াবেটিজ আক্রান্তদের জন্য মিষ্টি বানানোর পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁদের।
তথসুত্রঃ-গুগল, আইএএনএস, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ও আনন্দবাজার পত্রিকা
বিশ্বে অন্যতম প্রধান নারকেল উৎপাদনকারী দেশের তালিকায় নাম রয়েছে ভারতের। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশে ১৮.৯৫ লক্ষ হেক্টরেরও বেশি জমিতে নারকেলের চাষ হয়। কেরল, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, গোয়া, আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, পশ্চিমবঙ্গ এবং লাক্ষাদ্বীপে এই চাষ বেশি। কিন্তু গাছের নানা রোগ, পোকার আক্রমণ এবং বাজারে প্রত্যাশিত দাম না পাওয়ার মতো বিভিন্ন কারণে চাষিরা দিনদিন নারকেল-চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ’ (আইসিএআর)-এর অন্তর্গত কেরলের ‘সেন্ট্রাল প্ল্যান্টেশন ক্রপস্ রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ (সিপিসিআরআই)-এর বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরেই নারকেলের উপর গবেষণা চালিয়ে আসছেন। তাঁদের লক্ষ্য, নানা উপায়ে নারকেল গাছকে কাজে লাগানো। সিপিসিআরআইয়ের ডিরেক্টর পি চৌডাপ্পা এবং দুই বিজ্ঞানী কে বি হেব্বার এবং এইচ পি মহেশ্বরাপ্পার তত্ত্বাবধানে হুগলির বলাগড়ে এক কৃষিজীবী পরিবারের বাগানে নারকেলের ফুল থেকে রস বার করার কাজ (পাইলট প্রজেক্ট) শুরু হয়েছে। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দীপককুমার ঘোষ (হুগলির প্রাক্তন জেলা উদ্যান আধিকারিক) এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকও রয়েছেন প্রকল্পে।
বাগানটিতে প্রায় তিনশো নারকেল গাছ রয়েছে। ফুল থেকে রস সংগ্রহ করার পরে ছেঁকে ঠান্ডা জায়গায় রাখা হচ্ছে, যাতে গেঁজে না যায়। হালকা ক্রিম রঙের মিষ্টি ‘নীরা’য় নানা ধরনের খনিজ পদার্থ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন রয়েছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিজ্ঞানী অসিত চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘এই রস পান করলে ডায়াবেটিজে আক্রান্তদের চিন্তার কারণ নেই। কারণ, এতে রক্তে মেশে এমন শর্করার পরিমাণ অত্যন্ত কম।’’ একমত এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ঐশ্বর্যদীপ ঘোষ।
নারকেল গাছ থেকে বছরে ১০০-১২০টি নারকেল পাওয়া যায়। যার বাজারদর বাবদ চাষি পান এক হাজার থেকে বারোশো টাকার মধ্যে। কেন্দ্র সরকারের ‘কোকোনাট ডেভেলপমেন্ট বোর্ড’ (সিডিবি)-এর ডেপুটি ডিরেক্টর খোকন দেবনাথ বলেন, ‘‘একটি নারকেল গাছে প্রতি মাসে একটি করে ফুল (মুচি) হয়। সারা বছরে যে ফুল থেকে গড়ে অন্তত ২০০-২৫০ লিটার মিষ্টি রস বার করা সম্ভব। কর্ণাটক-সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নীরা তৈরির অনুমতি ইতিমধ্যেই দিয়েছে।’’ সরকারি ভাবে প্রতি লিটার রসের দাম অন্তত ৬০ টাকা ধরা হয়েছে। সিডিবি-র হিসেবে একটি গাছ থেকেই বছরে ১২-১৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
কৃষি এবং উদ্যানপালন দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, এ রাজ্যে মোট যা নারকেল গাছ রয়েছে তার ৭৫ শতাংশ ডাবের জন্য ব্যবহার করা হয়। ২০ শতাংশ থেকে নারকেল নেওয়া হয়। বাকি পাঁচ শতাংশে ফল হয় না। প্রকল্পে যুক্ত বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দীপকবাবু জানাচ্ছেন, হিসেব করে দেখা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের এক শতাংশ গাছ থেকে বছরে ১,০২৪ লক্ষ লিটার রস পাওয়া সম্ভব। যার বাজারদর প্রায় ৬২ লক্ষ টাকা। এক জন চাষি এক হেক্টর (সাড়ে সাত বিঘে) জমিতে নারকেল গাছ লাগালে, সে সব গাছের ফুল থেকে সারা বছরে প্রায় ২১ লক্ষ টাকার রস বিক্রি করতে পারবেন। বিশ্বের বাজারে নারকেলের ফুলের এই রসের তৈরি চিনির বাজারও প্রতিদিন বাড়ছে। দীপকবাবুর আশা, ‘‘বিকল্প চাষে অর্থকরী ফসল হিসেবে নীরা আগামী দিনে বড় ভূমিকা নিতে পারে।’’
নারকেলের ফুল থেকে রস নিংড়ানো হচ্ছে। ছবি: সুশান্ত সরকার। |
যাঁদের বাগানে চলছে এই প্রকল্প সেই দেবাশিস এবং কৌশিক ঘোষের বক্তব্য, ‘‘নারকেলের ফুলের রসের বাজার রয়েছে। সে জন্যই এমন বিকল্প চাষে উৎসাহী হয়েছি।’’ কেরলে ‘নীরা’ থেকে চিনি তৈরির খবর রয়েছে বিশিষ্ট মিষ্টিপ্রস্তুতকারক অমিতাভ দে-র কাছেও। রিষড়ার ‘ফেলু মোদক’-এর অন্যতম কর্ণধার অমিতাভবাবু জানান, তাঁরা ‘নীরা’কে ‘হেল্থ ড্রিঙ্ক’ হিসেবে বাজারে আনতে চান। আবার ওই রস থেকে তৈরি চিনি দিয়ে ডায়াবেটিজ আক্রান্তদের জন্য মিষ্টি বানানোর পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁদের।
তথসুত্রঃ-গুগল, আইএএনএস, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ও আনন্দবাজার পত্রিকা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন