গাছপালা আর পশুপাখির প্রতি অদম্য আকর্ষণ আমার সেই ছোটবেলা থেকেই।আমাদের বাড়ী' ওঙ্কার ধাম 'ছিল বড়ো উঠোনওয়ালা খোলামেলা ,পিছনে বড়ো বাঁশ -বাগান , যার কারণে
সেই সময় এই শখ গুলোর কিছুটা হলেও পুরন করতে পেরেছিলাম।এই শখ গুলো আমার পারিবারিক সূত্রে পাওয়া ,আমার দাদু আর মা এর ছিল গাছের শখ দাদুর ছিল মূলত ফলের গাছের শখ ,আম ,জাম ,কাঁঠাল,লিচু,বাতাবি লেবু,মুসাম্বি লেবু,পাতি লেবু,কাগজী লেবু,গন্ধরাজ লেবু,আমড়া ,বিলিতি আমড়া ,কুল,ফলসা,আমলকী ,হরিতকি,তেঁতুল,নারিকেল,সুপুরি,তাল ,সবেদা আরও অনেক ফলের গাছ ছিল। আর মায়ের ছিল ফুলগাছের ,ফুলের মধ্যে ছিল গোলাপ,করবী ,কাঠ চাপা ,কুর্চি ,গন্ধরাজ,কামিনী,সোনালু,আশোক ,জয়তি ,কাঞ্চন,কাঠ মল্লিকা, টগর আরো অনেক রকম ফুল।
আমার বাবা আর দিদার ছিল পশু-পাখি পোষার শখ। ছোটবেলায় আমাদের কুকুর ঢেলা কে আমরা ঢেলাদাদা বলতাম। আমাদের বাড়ীর পিছন দিকে গোয়াল ছিল তাতে ছিল৪\৫ তা গরু ,টাটকা দুধ পেয়েছি চিরকাল। এছাড়াও আমাদের বাড়িতে প্রচুর পাখি আসে রোজ,ছোটবেলা থেকে দেখেছি,পাশেই পুকুরের ধারে গম্ভীরমুখে বসে থাকতো মাছরাঙা ,কি অপূর্ব রূপ,...... মুগ্ধ হওয়ার মতোই ,এছাড়াও আসতো টিয়া,কুবোপাখী ,কোকিল,ফিঙে,দোয়েল,পায়রা,বৌ কথা কও ,বসন্ত বৌরি,শালিক আরো কত কি। ছাতারে পাখিগুলো খুব ঝগড়ুটে,এক মুহূর্ত চুপ থাকতে পারে না,সবসময় কাচর মাচর করে যাচ্ছে ,আর চড়ুই পাখির কথা আর কি বলবো,ওদের মতো দুস্টু পাখি কমই দেখেছি। আর আছে টুনটুনি,ভারী চঞ্চল,সবসময় ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে উড়ে বাড়াচ্ছে।
আমি হাই স্কুলে যেতে বাবা আমাকে একটা খরগোশ উপহার দিলেন,কি নরম ,ঠিক তুলোর বলের মতো,সারাদিন ছোট্ট ছোট্টো লাফ দিয়ে ঘুরে বেড়াতো সারা বাড়ি ,আর সন্ধে হলেই খাঁচায়। দিদার পোষা হাঁস ছিল,বিকেলবেলা পুকুরপাড়ে গিয়ে চৈ চৈ বলে ডেকে তোলা ও একটা কাজ।আর ছিল সুন্দরী,দিদির বেড়াল,সাদা,কালো,স্লেট আরো কত রঙের পোঁচ ওর গায়ে।গাছপালা আর পশুপাখির প্রতি অদম্য আকর্ষণ আমার রক্তে।
একটু বড়ো হতেই আমার একটা ছোট্ট বাগান হলো,আমার নিজের বাগান।খুব যে দু:স্প্রাপ্য গাছপালা ছিল একথা বলবো না, খুব সাধারণ সব গাছ, কিন্তু ভালবাসা ছিল অনেক।আমার মা আর আমি প্রায় রাতেই টর্চ লাইট নিয়ে বাগানে নেমে যেতাম কি কি ফুল ফুটলো, তা দেখার জন্য। নার্সারী থেকে গাছ নিয়ে যেতাম, বেশির ভাগই গোলাপ।
তারপর ছুটির সময়টা লেগে থাকা সেই আহলাদী গোলাপকে বাচিয়ে রাখার চেষ্টায় .......সরস্বতী পুজো,লক্ষী পুজো বা স্বাধীনতা দিবসগুলোতে বাগানের ফুল গুলোকে বাচানোর জন্য আমি অনেক রাত পর্যন্ত বসে থেকেছি কতদিন!
তারপরও একবার দেয়াল টপকে এসে আমার চন্দ্র মল্লিকা, আর ডালিয়ার গাছ সহ উপরে নিয়ে গিয়েছিল খুব কষ্ট পেয়েছিলাম সেই দিন।
চারা গাছ থেকে বড় করে তোলা, তারপর তাতে ফুল ফোটানো যে কি অনন্দের তা বলে বোঝানো যাবে না। গাছগুলোকে তখন আত্মজের মতোই লাগে!!
ছুটির দিনে দুপুরবেলা আর গরমকালে স্কুল থেকে ফিরেই খেলাধুলার পর পুকুরে নেমে সাঁতার আর হুড়োহুড়ি ,তারপর মা হাতে লাঠি নিয়ে আসতেই জল থেকে উঠতে হতো।
সন্ধ্যেবেলা হারিকেনের আলোয় পড়তে বসতাম , হারিকেনের আলো বাড়ানোর নব টা কার দিকে থাকবে তাই নিয়েই দিদির সাথে রোজ ঝগড়া হতো,মায়ের পায়ের শব্দ পেলেই শুরু হতো পড়া। কিছুক্ষন পরেই শুরুহত সারাদিনের হৈ -হুল্লোড়ের ফল ,নিদ্রাদেবীর আগমন,..... ঢুলতে ঢুলতেই পড়া চলত বাবা অফিস থেকে না ফেরা পর্যন্ত ,বাবার ট্রেন এর শব্দ পেলেই আমাদের পড়ার জোর বেড়ে যেত ,বাবা বাড়ি ফিরে দেখলেন পড়ছি ,....... ব্যাস কাজ শেষ।
এসে গেল আমার কিশোরবেলা ,আরও বেশি করে সংগী হলো আমার প্রিয় গাছেরা ,ফুলেরা ,পাখিরা,পোষ্যরা ,......... আমি তখন ক্লাস এইট ,স্কুলে পরিচয় হলো একজনের সাথে,নবদা,আমার চেয়ে ২ বছরের সিনিয়ার ,ক্লাস টেন এ পরে। জানলাম ,নবদার ও বাগান আছে ,আমাদের বাড়ির কাছেই,রুকেশপুর গ্রাম এ। একদিন গিয়ে হাজির হলাম ,সঙ্গী আমার প্রিয় বন্ধু সুনীল। গঙ্গার পাড়ে একটা ছোট্ট মাটির ঘর,মাথায় টালির চাল ,সামনেই গোলাপ বাগান, বড়ো নয় ,সাকুল্যে ২০\২৫ টা গাছ আলো করে ফুটে আছে বেশ কিছু গোলাপ। ঠিক পাশ দিয়েই বয়ে চলে গঙ্গা, গোলাপ ফুলগুলোয় প্রজাপতির জটলা, পাশেই একটা কিশোর রাবার গাছ। সেই প্রথম আমার রাবার গাছ দেখা , পাখির কিচিরমিচির ডাক আর গঙ্গার ফুরফুরে হাওয়ায় সে যেন এক শান্তিনিকেতন। বিকেলবেলা সাইকেল নিয়ে প্রায়ই চলে যেতাম নবদার বাগানে।
আমার বাবা আর দিদার ছিল পশু-পাখি পোষার শখ। ছোটবেলায় আমাদের কুকুর ঢেলা কে আমরা ঢেলাদাদা বলতাম। আমাদের বাড়ীর পিছন দিকে গোয়াল ছিল তাতে ছিল৪\৫ তা গরু ,টাটকা দুধ পেয়েছি চিরকাল। এছাড়াও আমাদের বাড়িতে প্রচুর পাখি আসে রোজ,ছোটবেলা থেকে দেখেছি,পাশেই পুকুরের ধারে গম্ভীরমুখে বসে থাকতো মাছরাঙা ,কি অপূর্ব রূপ,...... মুগ্ধ হওয়ার মতোই ,এছাড়াও আসতো টিয়া,কুবোপাখী ,কোকিল,ফিঙে,দোয়েল,পায়রা,বৌ কথা কও ,বসন্ত বৌরি,শালিক আরো কত কি। ছাতারে পাখিগুলো খুব ঝগড়ুটে,এক মুহূর্ত চুপ থাকতে পারে না,সবসময় কাচর মাচর করে যাচ্ছে ,আর চড়ুই পাখির কথা আর কি বলবো,ওদের মতো দুস্টু পাখি কমই দেখেছি। আর আছে টুনটুনি,ভারী চঞ্চল,সবসময় ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে উড়ে বাড়াচ্ছে।
আমি হাই স্কুলে যেতে বাবা আমাকে একটা খরগোশ উপহার দিলেন,কি নরম ,ঠিক তুলোর বলের মতো,সারাদিন ছোট্ট ছোট্টো লাফ দিয়ে ঘুরে বেড়াতো সারা বাড়ি ,আর সন্ধে হলেই খাঁচায়। দিদার পোষা হাঁস ছিল,বিকেলবেলা পুকুরপাড়ে গিয়ে চৈ চৈ বলে ডেকে তোলা ও একটা কাজ।আর ছিল সুন্দরী,দিদির বেড়াল,সাদা,কালো,স্লেট আরো কত রঙের পোঁচ ওর গায়ে।গাছপালা আর পশুপাখির প্রতি অদম্য আকর্ষণ আমার রক্তে।
একটু বড়ো হতেই আমার একটা ছোট্ট বাগান হলো,আমার নিজের বাগান।খুব যে দু:স্প্রাপ্য গাছপালা ছিল একথা বলবো না, খুব সাধারণ সব গাছ, কিন্তু ভালবাসা ছিল অনেক।আমার মা আর আমি প্রায় রাতেই টর্চ লাইট নিয়ে বাগানে নেমে যেতাম কি কি ফুল ফুটলো, তা দেখার জন্য। নার্সারী থেকে গাছ নিয়ে যেতাম, বেশির ভাগই গোলাপ।
তারপর ছুটির সময়টা লেগে থাকা সেই আহলাদী গোলাপকে বাচিয়ে রাখার চেষ্টায় .......সরস্বতী পুজো,লক্ষী পুজো বা স্বাধীনতা দিবসগুলোতে বাগানের ফুল গুলোকে বাচানোর জন্য আমি অনেক রাত পর্যন্ত বসে থেকেছি কতদিন!
তারপরও একবার দেয়াল টপকে এসে আমার চন্দ্র মল্লিকা, আর ডালিয়ার গাছ সহ উপরে নিয়ে গিয়েছিল খুব কষ্ট পেয়েছিলাম সেই দিন।
চারা গাছ থেকে বড় করে তোলা, তারপর তাতে ফুল ফোটানো যে কি অনন্দের তা বলে বোঝানো যাবে না। গাছগুলোকে তখন আত্মজের মতোই লাগে!!
ছুটির দিনে দুপুরবেলা আর গরমকালে স্কুল থেকে ফিরেই খেলাধুলার পর পুকুরে নেমে সাঁতার আর হুড়োহুড়ি ,তারপর মা হাতে লাঠি নিয়ে আসতেই জল থেকে উঠতে হতো।
সন্ধ্যেবেলা হারিকেনের আলোয় পড়তে বসতাম , হারিকেনের আলো বাড়ানোর নব টা কার দিকে থাকবে তাই নিয়েই দিদির সাথে রোজ ঝগড়া হতো,মায়ের পায়ের শব্দ পেলেই শুরু হতো পড়া। কিছুক্ষন পরেই শুরুহত সারাদিনের হৈ -হুল্লোড়ের ফল ,নিদ্রাদেবীর আগমন,..... ঢুলতে ঢুলতেই পড়া চলত বাবা অফিস থেকে না ফেরা পর্যন্ত ,বাবার ট্রেন এর শব্দ পেলেই আমাদের পড়ার জোর বেড়ে যেত ,বাবা বাড়ি ফিরে দেখলেন পড়ছি ,....... ব্যাস কাজ শেষ।
এসে গেল আমার কিশোরবেলা ,আরও বেশি করে সংগী হলো আমার প্রিয় গাছেরা ,ফুলেরা ,পাখিরা,পোষ্যরা ,......... আমি তখন ক্লাস এইট ,স্কুলে পরিচয় হলো একজনের সাথে,নবদা,আমার চেয়ে ২ বছরের সিনিয়ার ,ক্লাস টেন এ পরে। জানলাম ,নবদার ও বাগান আছে ,আমাদের বাড়ির কাছেই,রুকেশপুর গ্রাম এ। একদিন গিয়ে হাজির হলাম ,সঙ্গী আমার প্রিয় বন্ধু সুনীল। গঙ্গার পাড়ে একটা ছোট্ট মাটির ঘর,মাথায় টালির চাল ,সামনেই গোলাপ বাগান, বড়ো নয় ,সাকুল্যে ২০\২৫ টা গাছ আলো করে ফুটে আছে বেশ কিছু গোলাপ। ঠিক পাশ দিয়েই বয়ে চলে গঙ্গা, গোলাপ ফুলগুলোয় প্রজাপতির জটলা, পাশেই একটা কিশোর রাবার গাছ। সেই প্রথম আমার রাবার গাছ দেখা , পাখির কিচিরমিচির ডাক আর গঙ্গার ফুরফুরে হাওয়ায় সে যেন এক শান্তিনিকেতন। বিকেলবেলা সাইকেল নিয়ে প্রায়ই চলে যেতাম নবদার বাগানে।