"এখানে আকাশ নীল- নীলাভ আকাশ জুড়ে সজিনার ফুল
ফুটে থাকে হিম শাদা- রং তার আশ্বিনের আলোর মতন;"
সজনে (ইংরেজি: drumstick tree বা horseradish tree বা ben oil tree বা benzoil tree) (Moringa oleifera) হচ্ছে বৃক্ষ জাতীয় গাছ। এটির শাক হিসেবে ব্যবহৃত পাতা ভিটামিন এ-এর এক বিশাল উৎস। সজনের পাতা এবং ফল উভয়ের মধ্যেই বিপুল পরিমাণে পুষ্টি আছে। এতসব পুষ্টিগুণ একসাথে আছে বলেই এর মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং জীবন ধারনের পুষ্টি দুটোই পাওয়া যায়। আফ্রিকায় সজনে সাফল্যের পেছনে এটাই মূল কারণ। দুয়েকটি নির্দিষ্ট ভিটামিন বা মিনারেল নয়; বরং বহু ধরনের ভিটামিন, মিনারেল, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাটের সমাহার এই সজনে।
১। সজনের পাতা:- শাকের মত রান্না করে (কিন্তু ভাজা নয়) আহারের সময় অল্পপরিমাণে খেলে অগ্নিবল বৃদ্ধি হয় ও আহারে প্রবৃত্তি নিয়ে আসে, তবে পেটরোগাদের ঝোল করে অল্প খাওয়া ভাল। এটা গরীবের খাদ্য, কারন তার মধ্যে আছে ভিটামিন এ.বি.সি নিকোটিনিক এসিড, প্রোটিন, চর্বিজাতীয় পদার্থ, কর্বোহাইড্রেট এবং শরীরের পোষণ-উপযোগী আরও প্রয়োজনীয় উপাদান, এসব তথ্য নব্য বৈজ্ঞানিকের সমীক্ষায় যানা গেছে। এই শাক কোল, ভীল, মুন্ডা প্রভৃতি আদিবাসিদের নিত্য প্রিয় ভোজ্য শাক।
২। সজনের ফুল:- শাকের মত রান্না করে বসন্তকালে খাওয়া ভাল। এটা একটা বসন্তপ্রতিষেধক দ্রব্য। সর্দিকাসির দোষে, শোথে, প্লীহা ও যকৃতের কার্যকারিত্ব শক্তি কমে গেলে, ক্রিমির আধিক্য থাকলে এবং টনিকের একটি অন্যতম উপাদান হিসাবে ইউনানি চিকিৎসক সমপ্রদায় এর শুষ্কফুল ব্যবহার করেন।
৩। সজনের ফল (ডাঁটা):- “ধুকড়ির মধ্যে খাসা চালের” মত আমাদের দেশে সজনের ডাঁটা। নব্য বৈজ্ঞানিকের বিশ্লেষণ বিচারে পাতা ও ফল (ডাঁটা) অল্পাধিক সমগুণের অধিকারী হলেও ডাঁটাগুলি Amino Acid সমৃদ্ধ, যেটা দেহের সাময়িক প্রয়োজন মেটায়। সর্বক্ষেত্রে সব দ্রব্যেরই ব্যবহার করা উচিত পরিমিত ও সীমিত। উইনানী চিকিৎসকগণের মতে- বাত ব্যাধি রোগগ্রস্ত ব্যক্তিদের ও যাঁরা শিরাগত বাতে কাতর, তাঁদের আ হার্যের সঙ্গে এটি ব্যবহার করা ভাল।
৪। বীজের তেল:-এদেশে সজনের বীজের তেলের ব্যবহার হয় না, তাই পরীক্ষাও তেমন হয়নি, তবে আমাদের এ দেশের বীজের তেমন তেল পাওয়া যায় না, আমদানী হয় আফ্রিকা থেকে- নাম তার ‘বেন অয়েল’। ঘড়ি মেরামতের কাজে লাগে, বাতের ব্যথায়ও মালিশে ভাল কাজ হয়। এ ভিন্ন গাছের ও মূলের (ত্বক) গুণের অন্ত নেই।
রোগ নিরাময়েঃ
১। হাই ব্লাড প্রেসারঃ সজনের পাকা পাতার টাটকা রস (জলে বেটে নিংড়ে নিতে হবে) দুই বেলা আহারের ঠিক অব্যবহিত পূর্বে ২ বা ৩ চা-চামচ করে খেলে সপ্তাহের মধ্যে প্রেসার কমে যায়। তবে যাঁদের প্রস্রাবে বা রক্তে সুগার আছে, এটা খাওয়া নিষেধ
২। অর্বুদ রোগে (Tumour): ফোঁড়ার প্রথমাবস্থায় গ্রন্থিস্ফীতিতে (Glandular swelling) অথবা আঘাতজনিত ব্যথা ও ফোলায়- পাতা বেটে অল্প গরম করে লাগালে ফোঁড়া বা টিউমার বহুক্ষেত্রে মিলিয়ে যায় এবং ব্যথা ও ফোলার উপশম হয়।
৩। সাময়িক জ্বর বা জ্বরভাবে:- এর সঙ্গে সর্দির প্রাবল্য থাকলে অল্প দুটো পাতা ঝোল করে বা শাক রান্না করে খেলে উপশম হয়।
৪। হিক্কায় (Hiccup):- হিক্কা হতে থাকলে পাতার রস ২/৫ ফোঁটা করে দুধের সঙ্গে ২/৩ বার খেতে দিলে কমে যায়।
৫। অর্শে (Piles):- অর্শের যন্ত্রনা আছে, অথচ রক্ত পড়ে না- এ ক্ষেত্রে নিন্মাঙ্গে তিলতৈল লাগিয়ে পাতা-সিদ্ধ ক্কাথ দ্বারা সিক্ত করতে হবে।
৬। সন্নিপাত জন্য চোখে ব্যথা, জল বা পিচুটি পড়াঃ- এ সব ক্ষেত্রে পাতা- সিদ্ধ জল দিয়ে ধুইলে উপকার পাওয়া যায়।
৭। দাঁতের মাড়ি ফোলায়ঃ- শ্লেস্মাঘটিত কারনে দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে পাতার ক্কাথ মুখে ধারন করলে উপশম হয়।
৮। কুষ্ঠে (Leprosy):- কুষ্ঠের প্রথম অবস্থায় বীজের তৈল ব্যবহার করতে পারলে ভাল হয়। অভাবে বীজ বেটে কুষ্ঠের ক্ষতের উপর প্রলেপ দিলেও চলে।
৯। অপচী রোগে (Scrofula):- সজনেবীজ চূর্ণ করে নস্য নিতে হয়।
গাছটার
বৈজ্ঞানিক নাম মরিংগা ওলেইফেরা। ইংরেজিতে গাছটিকে বলে মিরাকল ট্রি বা
অলৌকিক গাছ। ইংরেজি এর আরো দুটি নাম আছে- ড্রামস্টিক ও হর্সর্যাডিশ ট্রি।
এই গাছের প্রতি গ্রাম পাতায় গাজরের চারগুন বেশি ভিটামিন এ, দুধের চেয়ে ৪ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কলার চেয়ে ৩ গুণ বেশি পটাসিয়াম, কমলালেবুর চেয়ে সাতগুণ বেশি ভিটামিন, দইয়ের চেয়ে ২ গুণ বেশি প্রোটিন আছে।
চার হাজার বছর ধরে রন্ধন এবং নানা চিকিৎসায় এ গাছের ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রায় ৩০০ রকমের অসুখের চিকিৎসা হয় এই গাছ দিয়ে। দক্ষিণ এশিয়ায় বহু বছর ধরে বাড়ির আনাচে-কানাচে, বনে-জঙ্গলে, পুকুরের ধারে এই গাছ দেখা যায়।
সম্প্রতি সেনেগাল, মালির মতো আফ্রিকান দেশগুলোতে এর চাষ হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। চাষও খুব সহজ। গাছের একটা ডাল পুতে দিলেই হলো। এই গাছ বাড়েও খুব দ্রুত। দুই তিন বছরে ফুল দেয়। এর ফুল, পাতা, ফল সব কিছুই সুস্বাদু।
এতক্ষণ যে বিস্ময়গাছটির গুণগান করা হলো তার বাংলা নামটা চেনেন না, এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম। চেনা জিনিসের মূল্য হয়তো আমরা কম দেই, কিন্তু সারা বিশ্বই আজ এই গাছ নিয়ে গবেষণা করছে, এই গাছের জয় জয়কার চারদিকে। এই বিস্ময়বৃক্ষটি আমাদের সবার পরিচিত সজিনা বা সজনে গাছ।
আমরা হয়তো কম-বেশি সবাই সজিনার ডাল বা তরকারি খেয়েছি। কিন্তু সজনে পাতাও যে শাক হিসেবে খাওয়া যায়, এটা সবাই জানি না। তেল-রসুন দিয়ে রান্না সজিনে খেতে শুধু সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিকরও। সজিনা পাতা ও সজিনাতে প্রচুর আঁশ আছে, যা খাদ্যনালী ও অন্ত্রের পরিপাক তন্ত্রকে পরিষ্কার করে। বিশেষ করে তৈলাক্ত অনেক খাবার আমরা খাই, যার তেল রক্তনালীতে আটকে থাকে। সেগুলো বের করতে সজিনা সাহায্য করে। সজিনার মধ্যে আইসোথিয়োকাইনেটস নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আছে, যা গ্যাস্ট্রিক, আলসার এবং গ্যাস্ট্রিকজনিত ক্যানসার ঠেকাতে সহায়তা করে।
- See more at: http://bangladeshshomoy.com/news.php?id=33514#sthash.NAQG9OIo.dpufএই গাছের প্রতি গ্রাম পাতায় গাজরের চারগুন বেশি ভিটামিন এ, দুধের চেয়ে ৪ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কলার চেয়ে ৩ গুণ বেশি পটাসিয়াম, কমলালেবুর চেয়ে সাতগুণ বেশি ভিটামিন, দইয়ের চেয়ে ২ গুণ বেশি প্রোটিন আছে।
চার হাজার বছর ধরে রন্ধন এবং নানা চিকিৎসায় এ গাছের ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রায় ৩০০ রকমের অসুখের চিকিৎসা হয় এই গাছ দিয়ে। দক্ষিণ এশিয়ায় বহু বছর ধরে বাড়ির আনাচে-কানাচে, বনে-জঙ্গলে, পুকুরের ধারে এই গাছ দেখা যায়।
সম্প্রতি সেনেগাল, মালির মতো আফ্রিকান দেশগুলোতে এর চাষ হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। চাষও খুব সহজ। গাছের একটা ডাল পুতে দিলেই হলো। এই গাছ বাড়েও খুব দ্রুত। দুই তিন বছরে ফুল দেয়। এর ফুল, পাতা, ফল সব কিছুই সুস্বাদু।
এতক্ষণ যে বিস্ময়গাছটির গুণগান করা হলো তার বাংলা নামটা চেনেন না, এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম। চেনা জিনিসের মূল্য হয়তো আমরা কম দেই, কিন্তু সারা বিশ্বই আজ এই গাছ নিয়ে গবেষণা করছে, এই গাছের জয় জয়কার চারদিকে। এই বিস্ময়বৃক্ষটি আমাদের সবার পরিচিত সজিনা বা সজনে গাছ।
আমরা হয়তো কম-বেশি সবাই সজিনার ডাল বা তরকারি খেয়েছি। কিন্তু সজনে পাতাও যে শাক হিসেবে খাওয়া যায়, এটা সবাই জানি না। তেল-রসুন দিয়ে রান্না সজিনে খেতে শুধু সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিকরও। সজিনা পাতা ও সজিনাতে প্রচুর আঁশ আছে, যা খাদ্যনালী ও অন্ত্রের পরিপাক তন্ত্রকে পরিষ্কার করে। বিশেষ করে তৈলাক্ত অনেক খাবার আমরা খাই, যার তেল রক্তনালীতে আটকে থাকে। সেগুলো বের করতে সজিনা সাহায্য করে। সজিনার মধ্যে আইসোথিয়োকাইনেটস নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আছে, যা গ্যাস্ট্রিক, আলসার এবং গ্যাস্ট্রিকজনিত ক্যানসার ঠেকাতে সহায়তা করে।
বিস্ময়কর বৃক্ষ সজনে
গাছটার
বৈজ্ঞানিক নাম মরিংগা ওলেইফেরা। ইংরেজিতে গাছটিকে বলে মিরাকল ট্রি বা
অলৌকিক গাছ। ইংরেজি এর আরো দুটি নাম আছে- ড্রামস্টিক ও হর্সর্যাডিশ ট্রি।
এই গাছের প্রতি গ্রাম পাতায় গাজরের চারগুন বেশি ভিটামিন এ, দুধের চেয়ে ৪ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কলার চেয়ে ৩ গুণ বেশি পটাসিয়াম, কমলালেবুর চেয়ে সাতগুণ বেশি ভিটামিন, দইয়ের চেয়ে ২ গুণ বেশি প্রোটিন আছে।
চার হাজার বছর ধরে রন্ধন এবং নানা চিকিৎসায় এ গাছের ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রায় ৩০০ রকমের অসুখের চিকিৎসা হয় এই গাছ দিয়ে। দক্ষিণ এশিয়ায় বহু বছর ধরে বাড়ির আনাচে-কানাচে, বনে-জঙ্গলে, পুকুরের ধারে এই গাছ দেখা যায়।
সম্প্রতি সেনেগাল, মালির মতো আফ্রিকান দেশগুলোতে এর চাষ হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। চাষও খুব সহজ। গাছের একটা ডাল পুতে দিলেই হলো। এই গাছ বাড়েও খুব দ্রুত। দুই তিন বছরে ফুল দেয়। এর ফুল, পাতা, ফল সব কিছুই সুস্বাদু।
এতক্ষণ যে বিস্ময়গাছটির গুণগান করা হলো তার বাংলা নামটা চেনেন না, এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম। চেনা জিনিসের মূল্য হয়তো আমরা কম দেই, কিন্তু সারা বিশ্বই আজ এই গাছ নিয়ে গবেষণা করছে, এই গাছের জয় জয়কার চারদিকে। এই বিস্ময়বৃক্ষটি আমাদের সবার পরিচিত সজিনা বা সজনে গাছ।
আমরা হয়তো কম-বেশি সবাই সজিনার ডাল বা তরকারি খেয়েছি। কিন্তু সজনে পাতাও যে শাক হিসেবে খাওয়া যায়, এটা সবাই জানি না। তেল-রসুন দিয়ে রান্না সজিনে খেতে শুধু সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিকরও। সজিনা পাতা ও সজিনাতে প্রচুর আঁশ আছে, যা খাদ্যনালী ও অন্ত্রের পরিপাক তন্ত্রকে পরিষ্কার করে। বিশেষ করে তৈলাক্ত অনেক খাবার আমরা খাই, যার তেল রক্তনালীতে আটকে থাকে। সেগুলো বের করতে সজিনা সাহায্য করে। সজিনার মধ্যে আইসোথিয়োকাইনেটস নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আছে, যা গ্যাস্ট্রিক, আলসার এবং গ্যাস্ট্রিকজনিত ক্যানসার ঠেকাতে সহায়তা করে।
পানি বিশুদ্ধ করতে আমরা প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম নানা পদ্ধতি ব্যবহার করি। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সজিনার দানা পানি বিশুদ্ধকরণে সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক উপায়। উপস্যুলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণা সন্দর্ভে বলা হয়েছে, সজিনার দানা পানি দূষণ রোধ করে, পানিতে কোনো রকম দূষণীয় ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো অণুজীব উপদান দ্রবীভূত হতে দেয় না। আমেরিকা, নামিবিয়া, ফ্রান্স ও বতসোয়ানার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সজিনার আণবিক্ষণিক প্রোটিন উপাদান পানি বিশুদ্ধকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। একইভাবে সজিনা শরীরকে বিশুদ্ধ রাখে। সজিনাকে আজকের বিশ্বে ‘সুপার ফুড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এই সুপার ফুডের অন্তত ছয়টি গুণ আছে, যা একে তারকাখ্যাতি দিয়েছে-
১. পুষ্টির ভান্ডার : লেখার শুরুতেই সজিনার পুষ্টি গুণের কথা বলা হয়েছে। প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি এতে আয়রনও আছে। আয়রনের দিক থেকে এটি পালং শাকের চেয়ে ৫ গুণ বেশি শক্তিশালী।
২. এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি : সজিনার পাতাকে এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি বলা যায়। এর মধ্যে ভিটামিন সি, বেটা-কেরোটিন, কিউরেকটিন এবং ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড বিদ্যমান। উল্লেখ্য, এসব উপাদানই মানবদেহের জন্য উপকারী। বিশেষ করে, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড রক্তের চাপ ও শর্করা কমাতে বিশেষ কাজে দেয়। এশিয়ান প্যাসিফিক জার্নাল অব ক্যানসার প্রিভেনশন দারি করছে, সজিনার পাতায় বিদ্যমান এন্টি-অক্সিডেন্ট ক্যানসার কোষ সৃষ্টিতে বাধা দেয়।
৩. ডায়েবেটিস প্রতিরোধক : এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং আইসোথিয়োকাইনেটস নামের উপাদানগুলো নিয়মিত গ্রহণে ডায়েবেটিস কমে যায়। প্রতিদিন মাত্র ৫০ গ্রাম সজিনার পাতা খেয়ে ডায়বেটিস ২১ শতাংশ হ্রাস পায়। তিন মাস এক চা চামচ করে সজিনার পাতার গুড়া খেয়ে ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
৪. তেলেসমাতি : সজিনার বীজের তৈরি তেলে সত্যিই তেলেসমাতি আছে। অন্য যেকোনো ভেজিটেবেল অয়েল-এর চেয়ে এর গুণাগুণ বেশি। দীর্ঘদিনের লিভারের রোগীর জন্য এ তেল খুব উপকারী। সজিনা গ্রহণে খাদ্যের গুণগত মান অটুট থাকে। পচনশীল খাবারকে দীর্ঘস্থায়ীত্ব দিতেও সজিনার তেলের তুলনা নেই। বাতের ব্যথা-বেদনায় যেমন ব্যবহার করা যায়, তেমনি শীতের আর্দ্রতা থেকে ত্বককে রক্ষা করা, রূপচর্চাতেও এই তেল কাজে লাগে।
৫. কোলেস্টেরল কিলার : ঘাতক কোলেস্টেরলকে হত্যা করে সজিনা আপনার হৃদপি-ের বন্ধু হয়ে উঠতে পারে। থাইল্যান্ডে বহু বছর ধরে সজিনাকে হৃদরোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ৩ মাসের ব্যবহারে এটি কোলেস্টেরল লেভেল অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে।
৬. আর্সেনিক দূষণ আর নয় : পানিতে আর্সেনিক দূষণ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এই সমস্যা নিরোধে সজিনার বীজ কিংবা পাতা ভূমিকা রাখে। এমনকি আর্সেনিক দূষণে আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করতে সজিনা বীজ বা পাতা ব্যবহার কার্যকরী।
এত উপকারী এবং সহজে প্রাপ্য সজিনার ব্যবহার এখনো আমাদের কাছে সীমিত পরিসরেই রয়ে গেছে। সজিনার ডাল আর তরকারির পাশাপাশি খুব সহজেই এর কচিপাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়। পালং, মূলা শাকের মতোই এটিকে রান্না করা যায়। এমনকি সালাদে টমেটো, শসার সঙ্গে সজনে পাতা ব্যবহার করা যায়। যেকোনো স্যুপেও কয়েকটি সজিনা পাতা বাড়তি স্বাদ আর পুষ্টি এনে দেবে। পাতা গুঁড়া বা বীজের তেল অবশ্য আমাদের দেশে সেভাবে ব্যবহৃত হয় না। সজিনার তেল অবশ্য বেশ দামি, অলিভ অয়েলের চেয়েও। আমরা চাইলে সজিনার তেল ও গুঁড়াকে বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত করার কথা ভাবতে পারি। ইউনানী ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বহু বছর ধরেই এর ব্যবহার চলে আসছে। আমরা নতুন করে এই সুপার ফুড আর বিস্ময়কর বৃক্ষের কথা ভাবতে পারি।
- See more at: http://bangladeshshomoy.com/news.php?id=33514#sthash.NAQG9OIo.dpufএই গাছের প্রতি গ্রাম পাতায় গাজরের চারগুন বেশি ভিটামিন এ, দুধের চেয়ে ৪ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কলার চেয়ে ৩ গুণ বেশি পটাসিয়াম, কমলালেবুর চেয়ে সাতগুণ বেশি ভিটামিন, দইয়ের চেয়ে ২ গুণ বেশি প্রোটিন আছে।
চার হাজার বছর ধরে রন্ধন এবং নানা চিকিৎসায় এ গাছের ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রায় ৩০০ রকমের অসুখের চিকিৎসা হয় এই গাছ দিয়ে। দক্ষিণ এশিয়ায় বহু বছর ধরে বাড়ির আনাচে-কানাচে, বনে-জঙ্গলে, পুকুরের ধারে এই গাছ দেখা যায়।
সম্প্রতি সেনেগাল, মালির মতো আফ্রিকান দেশগুলোতে এর চাষ হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। চাষও খুব সহজ। গাছের একটা ডাল পুতে দিলেই হলো। এই গাছ বাড়েও খুব দ্রুত। দুই তিন বছরে ফুল দেয়। এর ফুল, পাতা, ফল সব কিছুই সুস্বাদু।
এতক্ষণ যে বিস্ময়গাছটির গুণগান করা হলো তার বাংলা নামটা চেনেন না, এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম। চেনা জিনিসের মূল্য হয়তো আমরা কম দেই, কিন্তু সারা বিশ্বই আজ এই গাছ নিয়ে গবেষণা করছে, এই গাছের জয় জয়কার চারদিকে। এই বিস্ময়বৃক্ষটি আমাদের সবার পরিচিত সজিনা বা সজনে গাছ।
আমরা হয়তো কম-বেশি সবাই সজিনার ডাল বা তরকারি খেয়েছি। কিন্তু সজনে পাতাও যে শাক হিসেবে খাওয়া যায়, এটা সবাই জানি না। তেল-রসুন দিয়ে রান্না সজিনে খেতে শুধু সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিকরও। সজিনা পাতা ও সজিনাতে প্রচুর আঁশ আছে, যা খাদ্যনালী ও অন্ত্রের পরিপাক তন্ত্রকে পরিষ্কার করে। বিশেষ করে তৈলাক্ত অনেক খাবার আমরা খাই, যার তেল রক্তনালীতে আটকে থাকে। সেগুলো বের করতে সজিনা সাহায্য করে। সজিনার মধ্যে আইসোথিয়োকাইনেটস নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আছে, যা গ্যাস্ট্রিক, আলসার এবং গ্যাস্ট্রিকজনিত ক্যানসার ঠেকাতে সহায়তা করে।
পানি বিশুদ্ধ করতে আমরা প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম নানা পদ্ধতি ব্যবহার করি। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সজিনার দানা পানি বিশুদ্ধকরণে সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক উপায়। উপস্যুলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণা সন্দর্ভে বলা হয়েছে, সজিনার দানা পানি দূষণ রোধ করে, পানিতে কোনো রকম দূষণীয় ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো অণুজীব উপদান দ্রবীভূত হতে দেয় না। আমেরিকা, নামিবিয়া, ফ্রান্স ও বতসোয়ানার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সজিনার আণবিক্ষণিক প্রোটিন উপাদান পানি বিশুদ্ধকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। একইভাবে সজিনা শরীরকে বিশুদ্ধ রাখে। সজিনাকে আজকের বিশ্বে ‘সুপার ফুড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এই সুপার ফুডের অন্তত ছয়টি গুণ আছে, যা একে তারকাখ্যাতি দিয়েছে-
১. পুষ্টির ভান্ডার : লেখার শুরুতেই সজিনার পুষ্টি গুণের কথা বলা হয়েছে। প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি এতে আয়রনও আছে। আয়রনের দিক থেকে এটি পালং শাকের চেয়ে ৫ গুণ বেশি শক্তিশালী।
২. এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি : সজিনার পাতাকে এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি বলা যায়। এর মধ্যে ভিটামিন সি, বেটা-কেরোটিন, কিউরেকটিন এবং ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড বিদ্যমান। উল্লেখ্য, এসব উপাদানই মানবদেহের জন্য উপকারী। বিশেষ করে, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড রক্তের চাপ ও শর্করা কমাতে বিশেষ কাজে দেয়। এশিয়ান প্যাসিফিক জার্নাল অব ক্যানসার প্রিভেনশন দারি করছে, সজিনার পাতায় বিদ্যমান এন্টি-অক্সিডেন্ট ক্যানসার কোষ সৃষ্টিতে বাধা দেয়।
৩. ডায়েবেটিস প্রতিরোধক : এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং আইসোথিয়োকাইনেটস নামের উপাদানগুলো নিয়মিত গ্রহণে ডায়েবেটিস কমে যায়। প্রতিদিন মাত্র ৫০ গ্রাম সজিনার পাতা খেয়ে ডায়বেটিস ২১ শতাংশ হ্রাস পায়। তিন মাস এক চা চামচ করে সজিনার পাতার গুড়া খেয়ে ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
৪. তেলেসমাতি : সজিনার বীজের তৈরি তেলে সত্যিই তেলেসমাতি আছে। অন্য যেকোনো ভেজিটেবেল অয়েল-এর চেয়ে এর গুণাগুণ বেশি। দীর্ঘদিনের লিভারের রোগীর জন্য এ তেল খুব উপকারী। সজিনা গ্রহণে খাদ্যের গুণগত মান অটুট থাকে। পচনশীল খাবারকে দীর্ঘস্থায়ীত্ব দিতেও সজিনার তেলের তুলনা নেই। বাতের ব্যথা-বেদনায় যেমন ব্যবহার করা যায়, তেমনি শীতের আর্দ্রতা থেকে ত্বককে রক্ষা করা, রূপচর্চাতেও এই তেল কাজে লাগে।
৫. কোলেস্টেরল কিলার : ঘাতক কোলেস্টেরলকে হত্যা করে সজিনা আপনার হৃদপি-ের বন্ধু হয়ে উঠতে পারে। থাইল্যান্ডে বহু বছর ধরে সজিনাকে হৃদরোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ৩ মাসের ব্যবহারে এটি কোলেস্টেরল লেভেল অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে।
৬. আর্সেনিক দূষণ আর নয় : পানিতে আর্সেনিক দূষণ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এই সমস্যা নিরোধে সজিনার বীজ কিংবা পাতা ভূমিকা রাখে। এমনকি আর্সেনিক দূষণে আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করতে সজিনা বীজ বা পাতা ব্যবহার কার্যকরী।
এত উপকারী এবং সহজে প্রাপ্য সজিনার ব্যবহার এখনো আমাদের কাছে সীমিত পরিসরেই রয়ে গেছে। সজিনার ডাল আর তরকারির পাশাপাশি খুব সহজেই এর কচিপাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়। পালং, মূলা শাকের মতোই এটিকে রান্না করা যায়। এমনকি সালাদে টমেটো, শসার সঙ্গে সজনে পাতা ব্যবহার করা যায়। যেকোনো স্যুপেও কয়েকটি সজিনা পাতা বাড়তি স্বাদ আর পুষ্টি এনে দেবে। পাতা গুঁড়া বা বীজের তেল অবশ্য আমাদের দেশে সেভাবে ব্যবহৃত হয় না। সজিনার তেল অবশ্য বেশ দামি, অলিভ অয়েলের চেয়েও। আমরা চাইলে সজিনার তেল ও গুঁড়াকে বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত করার কথা ভাবতে পারি। ইউনানী ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বহু বছর ধরেই এর ব্যবহার চলে আসছে। আমরা নতুন করে এই সুপার ফুড আর বিস্ময়কর বৃক্ষের কথা ভাবতে পারি।
বিস্ময়কর বৃক্ষ সজনে
গাছটার
বৈজ্ঞানিক নাম মরিংগা ওলেইফেরা। ইংরেজিতে গাছটিকে বলে মিরাকল ট্রি বা
অলৌকিক গাছ। ইংরেজি এর আরো দুটি নাম আছে- ড্রামস্টিক ও হর্সর্যাডিশ ট্রি।
এই গাছের প্রতি গ্রাম পাতায় গাজরের চারগুন বেশি ভিটামিন এ, দুধের চেয়ে ৪ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কলার চেয়ে ৩ গুণ বেশি পটাসিয়াম, কমলালেবুর চেয়ে সাতগুণ বেশি ভিটামিন, দইয়ের চেয়ে ২ গুণ বেশি প্রোটিন আছে।
চার হাজার বছর ধরে রন্ধন এবং নানা চিকিৎসায় এ গাছের ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রায় ৩০০ রকমের অসুখের চিকিৎসা হয় এই গাছ দিয়ে। দক্ষিণ এশিয়ায় বহু বছর ধরে বাড়ির আনাচে-কানাচে, বনে-জঙ্গলে, পুকুরের ধারে এই গাছ দেখা যায়।
সম্প্রতি সেনেগাল, মালির মতো আফ্রিকান দেশগুলোতে এর চাষ হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। চাষও খুব সহজ। গাছের একটা ডাল পুতে দিলেই হলো। এই গাছ বাড়েও খুব দ্রুত। দুই তিন বছরে ফুল দেয়। এর ফুল, পাতা, ফল সব কিছুই সুস্বাদু।
এতক্ষণ যে বিস্ময়গাছটির গুণগান করা হলো তার বাংলা নামটা চেনেন না, এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম। চেনা জিনিসের মূল্য হয়তো আমরা কম দেই, কিন্তু সারা বিশ্বই আজ এই গাছ নিয়ে গবেষণা করছে, এই গাছের জয় জয়কার চারদিকে। এই বিস্ময়বৃক্ষটি আমাদের সবার পরিচিত সজিনা বা সজনে গাছ।
আমরা হয়তো কম-বেশি সবাই সজিনার ডাল বা তরকারি খেয়েছি। কিন্তু সজনে পাতাও যে শাক হিসেবে খাওয়া যায়, এটা সবাই জানি না। তেল-রসুন দিয়ে রান্না সজিনে খেতে শুধু সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিকরও। সজিনা পাতা ও সজিনাতে প্রচুর আঁশ আছে, যা খাদ্যনালী ও অন্ত্রের পরিপাক তন্ত্রকে পরিষ্কার করে। বিশেষ করে তৈলাক্ত অনেক খাবার আমরা খাই, যার তেল রক্তনালীতে আটকে থাকে। সেগুলো বের করতে সজিনা সাহায্য করে। সজিনার মধ্যে আইসোথিয়োকাইনেটস নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আছে, যা গ্যাস্ট্রিক, আলসার এবং গ্যাস্ট্রিকজনিত ক্যানসার ঠেকাতে সহায়তা করে।
পানি বিশুদ্ধ করতে আমরা প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম নানা পদ্ধতি ব্যবহার করি। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সজিনার দানা পানি বিশুদ্ধকরণে সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক উপায়। উপস্যুলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণা সন্দর্ভে বলা হয়েছে, সজিনার দানা পানি দূষণ রোধ করে, পানিতে কোনো রকম দূষণীয় ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো অণুজীব উপদান দ্রবীভূত হতে দেয় না। আমেরিকা, নামিবিয়া, ফ্রান্স ও বতসোয়ানার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সজিনার আণবিক্ষণিক প্রোটিন উপাদান পানি বিশুদ্ধকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। একইভাবে সজিনা শরীরকে বিশুদ্ধ রাখে। সজিনাকে আজকের বিশ্বে ‘সুপার ফুড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এই সুপার ফুডের অন্তত ছয়টি গুণ আছে, যা একে তারকাখ্যাতি দিয়েছে-
১. পুষ্টির ভান্ডার : লেখার শুরুতেই সজিনার পুষ্টি গুণের কথা বলা হয়েছে। প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি এতে আয়রনও আছে। আয়রনের দিক থেকে এটি পালং শাকের চেয়ে ৫ গুণ বেশি শক্তিশালী।
২. এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি : সজিনার পাতাকে এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি বলা যায়। এর মধ্যে ভিটামিন সি, বেটা-কেরোটিন, কিউরেকটিন এবং ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড বিদ্যমান। উল্লেখ্য, এসব উপাদানই মানবদেহের জন্য উপকারী। বিশেষ করে, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড রক্তের চাপ ও শর্করা কমাতে বিশেষ কাজে দেয়। এশিয়ান প্যাসিফিক জার্নাল অব ক্যানসার প্রিভেনশন দারি করছে, সজিনার পাতায় বিদ্যমান এন্টি-অক্সিডেন্ট ক্যানসার কোষ সৃষ্টিতে বাধা দেয়।
৩. ডায়েবেটিস প্রতিরোধক : এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং আইসোথিয়োকাইনেটস নামের উপাদানগুলো নিয়মিত গ্রহণে ডায়েবেটিস কমে যায়। প্রতিদিন মাত্র ৫০ গ্রাম সজিনার পাতা খেয়ে ডায়বেটিস ২১ শতাংশ হ্রাস পায়। তিন মাস এক চা চামচ করে সজিনার পাতার গুড়া খেয়ে ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
৪. তেলেসমাতি : সজিনার বীজের তৈরি তেলে সত্যিই তেলেসমাতি আছে। অন্য যেকোনো ভেজিটেবেল অয়েল-এর চেয়ে এর গুণাগুণ বেশি। দীর্ঘদিনের লিভারের রোগীর জন্য এ তেল খুব উপকারী। সজিনা গ্রহণে খাদ্যের গুণগত মান অটুট থাকে। পচনশীল খাবারকে দীর্ঘস্থায়ীত্ব দিতেও সজিনার তেলের তুলনা নেই। বাতের ব্যথা-বেদনায় যেমন ব্যবহার করা যায়, তেমনি শীতের আর্দ্রতা থেকে ত্বককে রক্ষা করা, রূপচর্চাতেও এই তেল কাজে লাগে।
৫. কোলেস্টেরল কিলার : ঘাতক কোলেস্টেরলকে হত্যা করে সজিনা আপনার হৃদপি-ের বন্ধু হয়ে উঠতে পারে। থাইল্যান্ডে বহু বছর ধরে সজিনাকে হৃদরোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ৩ মাসের ব্যবহারে এটি কোলেস্টেরল লেভেল অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে।
৬. আর্সেনিক দূষণ আর নয় : পানিতে আর্সেনিক দূষণ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এই সমস্যা নিরোধে সজিনার বীজ কিংবা পাতা ভূমিকা রাখে। এমনকি আর্সেনিক দূষণে আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করতে সজিনা বীজ বা পাতা ব্যবহার কার্যকরী।
এত উপকারী এবং সহজে প্রাপ্য সজিনার ব্যবহার এখনো আমাদের কাছে সীমিত পরিসরেই রয়ে গেছে। সজিনার ডাল আর তরকারির পাশাপাশি খুব সহজেই এর কচিপাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়। পালং, মূলা শাকের মতোই এটিকে রান্না করা যায়। এমনকি সালাদে টমেটো, শসার সঙ্গে সজনে পাতা ব্যবহার করা যায়। যেকোনো স্যুপেও কয়েকটি সজিনা পাতা বাড়তি স্বাদ আর পুষ্টি এনে দেবে। পাতা গুঁড়া বা বীজের তেল অবশ্য আমাদের দেশে সেভাবে ব্যবহৃত হয় না। সজিনার তেল অবশ্য বেশ দামি, অলিভ অয়েলের চেয়েও। আমরা চাইলে সজিনার তেল ও গুঁড়াকে বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত করার কথা ভাবতে পারি। ইউনানী ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বহু বছর ধরেই এর ব্যবহার চলে আসছে। আমরা নতুন করে এই সুপার ফুড আর বিস্ময়কর বৃক্ষের কথা ভাবতে পারি।
- See more at: http://bangladeshshomoy.com/news.php?id=33514#sthash.NAQG9OIo.dpufএই গাছের প্রতি গ্রাম পাতায় গাজরের চারগুন বেশি ভিটামিন এ, দুধের চেয়ে ৪ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কলার চেয়ে ৩ গুণ বেশি পটাসিয়াম, কমলালেবুর চেয়ে সাতগুণ বেশি ভিটামিন, দইয়ের চেয়ে ২ গুণ বেশি প্রোটিন আছে।
চার হাজার বছর ধরে রন্ধন এবং নানা চিকিৎসায় এ গাছের ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রায় ৩০০ রকমের অসুখের চিকিৎসা হয় এই গাছ দিয়ে। দক্ষিণ এশিয়ায় বহু বছর ধরে বাড়ির আনাচে-কানাচে, বনে-জঙ্গলে, পুকুরের ধারে এই গাছ দেখা যায়।
সম্প্রতি সেনেগাল, মালির মতো আফ্রিকান দেশগুলোতে এর চাষ হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। চাষও খুব সহজ। গাছের একটা ডাল পুতে দিলেই হলো। এই গাছ বাড়েও খুব দ্রুত। দুই তিন বছরে ফুল দেয়। এর ফুল, পাতা, ফল সব কিছুই সুস্বাদু।
এতক্ষণ যে বিস্ময়গাছটির গুণগান করা হলো তার বাংলা নামটা চেনেন না, এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম। চেনা জিনিসের মূল্য হয়তো আমরা কম দেই, কিন্তু সারা বিশ্বই আজ এই গাছ নিয়ে গবেষণা করছে, এই গাছের জয় জয়কার চারদিকে। এই বিস্ময়বৃক্ষটি আমাদের সবার পরিচিত সজিনা বা সজনে গাছ।
আমরা হয়তো কম-বেশি সবাই সজিনার ডাল বা তরকারি খেয়েছি। কিন্তু সজনে পাতাও যে শাক হিসেবে খাওয়া যায়, এটা সবাই জানি না। তেল-রসুন দিয়ে রান্না সজিনে খেতে শুধু সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিকরও। সজিনা পাতা ও সজিনাতে প্রচুর আঁশ আছে, যা খাদ্যনালী ও অন্ত্রের পরিপাক তন্ত্রকে পরিষ্কার করে। বিশেষ করে তৈলাক্ত অনেক খাবার আমরা খাই, যার তেল রক্তনালীতে আটকে থাকে। সেগুলো বের করতে সজিনা সাহায্য করে। সজিনার মধ্যে আইসোথিয়োকাইনেটস নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আছে, যা গ্যাস্ট্রিক, আলসার এবং গ্যাস্ট্রিকজনিত ক্যানসার ঠেকাতে সহায়তা করে।
পানি বিশুদ্ধ করতে আমরা প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম নানা পদ্ধতি ব্যবহার করি। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সজিনার দানা পানি বিশুদ্ধকরণে সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক উপায়। উপস্যুলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণা সন্দর্ভে বলা হয়েছে, সজিনার দানা পানি দূষণ রোধ করে, পানিতে কোনো রকম দূষণীয় ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো অণুজীব উপদান দ্রবীভূত হতে দেয় না। আমেরিকা, নামিবিয়া, ফ্রান্স ও বতসোয়ানার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সজিনার আণবিক্ষণিক প্রোটিন উপাদান পানি বিশুদ্ধকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। একইভাবে সজিনা শরীরকে বিশুদ্ধ রাখে। সজিনাকে আজকের বিশ্বে ‘সুপার ফুড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এই সুপার ফুডের অন্তত ছয়টি গুণ আছে, যা একে তারকাখ্যাতি দিয়েছে-
১. পুষ্টির ভান্ডার : লেখার শুরুতেই সজিনার পুষ্টি গুণের কথা বলা হয়েছে। প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি এতে আয়রনও আছে। আয়রনের দিক থেকে এটি পালং শাকের চেয়ে ৫ গুণ বেশি শক্তিশালী।
২. এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি : সজিনার পাতাকে এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি বলা যায়। এর মধ্যে ভিটামিন সি, বেটা-কেরোটিন, কিউরেকটিন এবং ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড বিদ্যমান। উল্লেখ্য, এসব উপাদানই মানবদেহের জন্য উপকারী। বিশেষ করে, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড রক্তের চাপ ও শর্করা কমাতে বিশেষ কাজে দেয়। এশিয়ান প্যাসিফিক জার্নাল অব ক্যানসার প্রিভেনশন দারি করছে, সজিনার পাতায় বিদ্যমান এন্টি-অক্সিডেন্ট ক্যানসার কোষ সৃষ্টিতে বাধা দেয়।
৩. ডায়েবেটিস প্রতিরোধক : এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং আইসোথিয়োকাইনেটস নামের উপাদানগুলো নিয়মিত গ্রহণে ডায়েবেটিস কমে যায়। প্রতিদিন মাত্র ৫০ গ্রাম সজিনার পাতা খেয়ে ডায়বেটিস ২১ শতাংশ হ্রাস পায়। তিন মাস এক চা চামচ করে সজিনার পাতার গুড়া খেয়ে ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
৪. তেলেসমাতি : সজিনার বীজের তৈরি তেলে সত্যিই তেলেসমাতি আছে। অন্য যেকোনো ভেজিটেবেল অয়েল-এর চেয়ে এর গুণাগুণ বেশি। দীর্ঘদিনের লিভারের রোগীর জন্য এ তেল খুব উপকারী। সজিনা গ্রহণে খাদ্যের গুণগত মান অটুট থাকে। পচনশীল খাবারকে দীর্ঘস্থায়ীত্ব দিতেও সজিনার তেলের তুলনা নেই। বাতের ব্যথা-বেদনায় যেমন ব্যবহার করা যায়, তেমনি শীতের আর্দ্রতা থেকে ত্বককে রক্ষা করা, রূপচর্চাতেও এই তেল কাজে লাগে।
৫. কোলেস্টেরল কিলার : ঘাতক কোলেস্টেরলকে হত্যা করে সজিনা আপনার হৃদপি-ের বন্ধু হয়ে উঠতে পারে। থাইল্যান্ডে বহু বছর ধরে সজিনাকে হৃদরোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ৩ মাসের ব্যবহারে এটি কোলেস্টেরল লেভেল অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে।
৬. আর্সেনিক দূষণ আর নয় : পানিতে আর্সেনিক দূষণ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এই সমস্যা নিরোধে সজিনার বীজ কিংবা পাতা ভূমিকা রাখে। এমনকি আর্সেনিক দূষণে আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করতে সজিনা বীজ বা পাতা ব্যবহার কার্যকরী।
এত উপকারী এবং সহজে প্রাপ্য সজিনার ব্যবহার এখনো আমাদের কাছে সীমিত পরিসরেই রয়ে গেছে। সজিনার ডাল আর তরকারির পাশাপাশি খুব সহজেই এর কচিপাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়। পালং, মূলা শাকের মতোই এটিকে রান্না করা যায়। এমনকি সালাদে টমেটো, শসার সঙ্গে সজনে পাতা ব্যবহার করা যায়। যেকোনো স্যুপেও কয়েকটি সজিনা পাতা বাড়তি স্বাদ আর পুষ্টি এনে দেবে। পাতা গুঁড়া বা বীজের তেল অবশ্য আমাদের দেশে সেভাবে ব্যবহৃত হয় না। সজিনার তেল অবশ্য বেশ দামি, অলিভ অয়েলের চেয়েও। আমরা চাইলে সজিনার তেল ও গুঁড়াকে বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত করার কথা ভাবতে পারি। ইউনানী ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বহু বছর ধরেই এর ব্যবহার চলে আসছে। আমরা নতুন করে এই সুপার ফুড আর বিস্ময়কর বৃক্ষের কথা ভাবতে পারি।
বিস্ময়কর বৃক্ষ সজনে
গাছটার
বৈজ্ঞানিক নাম মরিংগা ওলেইফেরা। ইংরেজিতে গাছটিকে বলে মিরাকল ট্রি বা
অলৌকিক গাছ। ইংরেজি এর আরো দুটি নাম আছে- ড্রামস্টিক ও হর্সর্যাডিশ ট্রি।
এই গাছের প্রতি গ্রাম পাতায় গাজরের চারগুন বেশি ভিটামিন এ, দুধের চেয়ে ৪ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কলার চেয়ে ৩ গুণ বেশি পটাসিয়াম, কমলালেবুর চেয়ে সাতগুণ বেশি ভিটামিন, দইয়ের চেয়ে ২ গুণ বেশি প্রোটিন আছে।
চার হাজার বছর ধরে রন্ধন এবং নানা চিকিৎসায় এ গাছের ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রায় ৩০০ রকমের অসুখের চিকিৎসা হয় এই গাছ দিয়ে। দক্ষিণ এশিয়ায় বহু বছর ধরে বাড়ির আনাচে-কানাচে, বনে-জঙ্গলে, পুকুরের ধারে এই গাছ দেখা যায়।
সম্প্রতি সেনেগাল, মালির মতো আফ্রিকান দেশগুলোতে এর চাষ হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। চাষও খুব সহজ। গাছের একটা ডাল পুতে দিলেই হলো। এই গাছ বাড়েও খুব দ্রুত। দুই তিন বছরে ফুল দেয়। এর ফুল, পাতা, ফল সব কিছুই সুস্বাদু।
এতক্ষণ যে বিস্ময়গাছটির গুণগান করা হলো তার বাংলা নামটা চেনেন না, এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম। চেনা জিনিসের মূল্য হয়তো আমরা কম দেই, কিন্তু সারা বিশ্বই আজ এই গাছ নিয়ে গবেষণা করছে, এই গাছের জয় জয়কার চারদিকে। এই বিস্ময়বৃক্ষটি আমাদের সবার পরিচিত সজিনা বা সজনে গাছ।
আমরা হয়তো কম-বেশি সবাই সজিনার ডাল বা তরকারি খেয়েছি। কিন্তু সজনে পাতাও যে শাক হিসেবে খাওয়া যায়, এটা সবাই জানি না। তেল-রসুন দিয়ে রান্না সজিনে খেতে শুধু সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিকরও। সজিনা পাতা ও সজিনাতে প্রচুর আঁশ আছে, যা খাদ্যনালী ও অন্ত্রের পরিপাক তন্ত্রকে পরিষ্কার করে। বিশেষ করে তৈলাক্ত অনেক খাবার আমরা খাই, যার তেল রক্তনালীতে আটকে থাকে। সেগুলো বের করতে সজিনা সাহায্য করে। সজিনার মধ্যে আইসোথিয়োকাইনেটস নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আছে, যা গ্যাস্ট্রিক, আলসার এবং গ্যাস্ট্রিকজনিত ক্যানসার ঠেকাতে সহায়তা করে।
পানি বিশুদ্ধ করতে আমরা প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম নানা পদ্ধতি ব্যবহার করি। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সজিনার দানা পানি বিশুদ্ধকরণে সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক উপায়। উপস্যুলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণা সন্দর্ভে বলা হয়েছে, সজিনার দানা পানি দূষণ রোধ করে, পানিতে কোনো রকম দূষণীয় ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো অণুজীব উপদান দ্রবীভূত হতে দেয় না। আমেরিকা, নামিবিয়া, ফ্রান্স ও বতসোয়ানার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সজিনার আণবিক্ষণিক প্রোটিন উপাদান পানি বিশুদ্ধকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। একইভাবে সজিনা শরীরকে বিশুদ্ধ রাখে। সজিনাকে আজকের বিশ্বে ‘সুপার ফুড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এই সুপার ফুডের অন্তত ছয়টি গুণ আছে, যা একে তারকাখ্যাতি দিয়েছে-
১. পুষ্টির ভান্ডার : লেখার শুরুতেই সজিনার পুষ্টি গুণের কথা বলা হয়েছে। প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি এতে আয়রনও আছে। আয়রনের দিক থেকে এটি পালং শাকের চেয়ে ৫ গুণ বেশি শক্তিশালী।
২. এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি : সজিনার পাতাকে এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি বলা যায়। এর মধ্যে ভিটামিন সি, বেটা-কেরোটিন, কিউরেকটিন এবং ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড বিদ্যমান। উল্লেখ্য, এসব উপাদানই মানবদেহের জন্য উপকারী। বিশেষ করে, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড রক্তের চাপ ও শর্করা কমাতে বিশেষ কাজে দেয়। এশিয়ান প্যাসিফিক জার্নাল অব ক্যানসার প্রিভেনশন দারি করছে, সজিনার পাতায় বিদ্যমান এন্টি-অক্সিডেন্ট ক্যানসার কোষ সৃষ্টিতে বাধা দেয়।
৩. ডায়েবেটিস প্রতিরোধক : এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং আইসোথিয়োকাইনেটস নামের উপাদানগুলো নিয়মিত গ্রহণে ডায়েবেটিস কমে যায়। প্রতিদিন মাত্র ৫০ গ্রাম সজিনার পাতা খেয়ে ডায়বেটিস ২১ শতাংশ হ্রাস পায়। তিন মাস এক চা চামচ করে সজিনার পাতার গুড়া খেয়ে ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
৪. তেলেসমাতি : সজিনার বীজের তৈরি তেলে সত্যিই তেলেসমাতি আছে। অন্য যেকোনো ভেজিটেবেল অয়েল-এর চেয়ে এর গুণাগুণ বেশি। দীর্ঘদিনের লিভারের রোগীর জন্য এ তেল খুব উপকারী। সজিনা গ্রহণে খাদ্যের গুণগত মান অটুট থাকে। পচনশীল খাবারকে দীর্ঘস্থায়ীত্ব দিতেও সজিনার তেলের তুলনা নেই। বাতের ব্যথা-বেদনায় যেমন ব্যবহার করা যায়, তেমনি শীতের আর্দ্রতা থেকে ত্বককে রক্ষা করা, রূপচর্চাতেও এই তেল কাজে লাগে।
৫. কোলেস্টেরল কিলার : ঘাতক কোলেস্টেরলকে হত্যা করে সজিনা আপনার হৃদপি-ের বন্ধু হয়ে উঠতে পারে। থাইল্যান্ডে বহু বছর ধরে সজিনাকে হৃদরোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ৩ মাসের ব্যবহারে এটি কোলেস্টেরল লেভেল অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে।
৬. আর্সেনিক দূষণ আর নয় : পানিতে আর্সেনিক দূষণ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এই সমস্যা নিরোধে সজিনার বীজ কিংবা পাতা ভূমিকা রাখে। এমনকি আর্সেনিক দূষণে আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করতে সজিনা বীজ বা পাতা ব্যবহার কার্যকরী।
এত উপকারী এবং সহজে প্রাপ্য সজিনার ব্যবহার এখনো আমাদের কাছে সীমিত পরিসরেই রয়ে গেছে। সজিনার ডাল আর তরকারির পাশাপাশি খুব সহজেই এর কচিপাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়। পালং, মূলা শাকের মতোই এটিকে রান্না করা যায়। এমনকি সালাদে টমেটো, শসার সঙ্গে সজনে পাতা ব্যবহার করা যায়। যেকোনো স্যুপেও কয়েকটি সজিনা পাতা বাড়তি স্বাদ আর পুষ্টি এনে দেবে। পাতা গুঁড়া বা বীজের তেল অবশ্য আমাদের দেশে সেভাবে ব্যবহৃত হয় না। সজিনার তেল অবশ্য বেশ দামি, অলিভ অয়েলের চেয়েও। আমরা চাইলে সজিনার তেল ও গুঁড়াকে বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত করার কথা ভাবতে পারি। ইউনানী ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বহু বছর ধরেই এর ব্যবহার চলে আসছে। আমরা নতুন করে এই সুপার ফুড আর বিস্ময়কর বৃক্ষের কথা ভাবতে পারি।
- See more at: http://bangladeshshomoy.com/news.php?id=33514#sthash.NAQG9OIo.dpufএই গাছের প্রতি গ্রাম পাতায় গাজরের চারগুন বেশি ভিটামিন এ, দুধের চেয়ে ৪ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কলার চেয়ে ৩ গুণ বেশি পটাসিয়াম, কমলালেবুর চেয়ে সাতগুণ বেশি ভিটামিন, দইয়ের চেয়ে ২ গুণ বেশি প্রোটিন আছে।
চার হাজার বছর ধরে রন্ধন এবং নানা চিকিৎসায় এ গাছের ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রায় ৩০০ রকমের অসুখের চিকিৎসা হয় এই গাছ দিয়ে। দক্ষিণ এশিয়ায় বহু বছর ধরে বাড়ির আনাচে-কানাচে, বনে-জঙ্গলে, পুকুরের ধারে এই গাছ দেখা যায়।
সম্প্রতি সেনেগাল, মালির মতো আফ্রিকান দেশগুলোতে এর চাষ হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। চাষও খুব সহজ। গাছের একটা ডাল পুতে দিলেই হলো। এই গাছ বাড়েও খুব দ্রুত। দুই তিন বছরে ফুল দেয়। এর ফুল, পাতা, ফল সব কিছুই সুস্বাদু।
এতক্ষণ যে বিস্ময়গাছটির গুণগান করা হলো তার বাংলা নামটা চেনেন না, এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম। চেনা জিনিসের মূল্য হয়তো আমরা কম দেই, কিন্তু সারা বিশ্বই আজ এই গাছ নিয়ে গবেষণা করছে, এই গাছের জয় জয়কার চারদিকে। এই বিস্ময়বৃক্ষটি আমাদের সবার পরিচিত সজিনা বা সজনে গাছ।
আমরা হয়তো কম-বেশি সবাই সজিনার ডাল বা তরকারি খেয়েছি। কিন্তু সজনে পাতাও যে শাক হিসেবে খাওয়া যায়, এটা সবাই জানি না। তেল-রসুন দিয়ে রান্না সজিনে খেতে শুধু সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিকরও। সজিনা পাতা ও সজিনাতে প্রচুর আঁশ আছে, যা খাদ্যনালী ও অন্ত্রের পরিপাক তন্ত্রকে পরিষ্কার করে। বিশেষ করে তৈলাক্ত অনেক খাবার আমরা খাই, যার তেল রক্তনালীতে আটকে থাকে। সেগুলো বের করতে সজিনা সাহায্য করে। সজিনার মধ্যে আইসোথিয়োকাইনেটস নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আছে, যা গ্যাস্ট্রিক, আলসার এবং গ্যাস্ট্রিকজনিত ক্যানসার ঠেকাতে সহায়তা করে।
পানি বিশুদ্ধ করতে আমরা প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম নানা পদ্ধতি ব্যবহার করি। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সজিনার দানা পানি বিশুদ্ধকরণে সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক উপায়। উপস্যুলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণা সন্দর্ভে বলা হয়েছে, সজিনার দানা পানি দূষণ রোধ করে, পানিতে কোনো রকম দূষণীয় ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো অণুজীব উপদান দ্রবীভূত হতে দেয় না। আমেরিকা, নামিবিয়া, ফ্রান্স ও বতসোয়ানার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সজিনার আণবিক্ষণিক প্রোটিন উপাদান পানি বিশুদ্ধকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। একইভাবে সজিনা শরীরকে বিশুদ্ধ রাখে। সজিনাকে আজকের বিশ্বে ‘সুপার ফুড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এই সুপার ফুডের অন্তত ছয়টি গুণ আছে, যা একে তারকাখ্যাতি দিয়েছে-
১. পুষ্টির ভান্ডার : লেখার শুরুতেই সজিনার পুষ্টি গুণের কথা বলা হয়েছে। প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি এতে আয়রনও আছে। আয়রনের দিক থেকে এটি পালং শাকের চেয়ে ৫ গুণ বেশি শক্তিশালী।
২. এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি : সজিনার পাতাকে এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি বলা যায়। এর মধ্যে ভিটামিন সি, বেটা-কেরোটিন, কিউরেকটিন এবং ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড বিদ্যমান। উল্লেখ্য, এসব উপাদানই মানবদেহের জন্য উপকারী। বিশেষ করে, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড রক্তের চাপ ও শর্করা কমাতে বিশেষ কাজে দেয়। এশিয়ান প্যাসিফিক জার্নাল অব ক্যানসার প্রিভেনশন দারি করছে, সজিনার পাতায় বিদ্যমান এন্টি-অক্সিডেন্ট ক্যানসার কোষ সৃষ্টিতে বাধা দেয়।
৩. ডায়েবেটিস প্রতিরোধক : এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং আইসোথিয়োকাইনেটস নামের উপাদানগুলো নিয়মিত গ্রহণে ডায়েবেটিস কমে যায়। প্রতিদিন মাত্র ৫০ গ্রাম সজিনার পাতা খেয়ে ডায়বেটিস ২১ শতাংশ হ্রাস পায়। তিন মাস এক চা চামচ করে সজিনার পাতার গুড়া খেয়ে ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
৪. তেলেসমাতি : সজিনার বীজের তৈরি তেলে সত্যিই তেলেসমাতি আছে। অন্য যেকোনো ভেজিটেবেল অয়েল-এর চেয়ে এর গুণাগুণ বেশি। দীর্ঘদিনের লিভারের রোগীর জন্য এ তেল খুব উপকারী। সজিনা গ্রহণে খাদ্যের গুণগত মান অটুট থাকে। পচনশীল খাবারকে দীর্ঘস্থায়ীত্ব দিতেও সজিনার তেলের তুলনা নেই। বাতের ব্যথা-বেদনায় যেমন ব্যবহার করা যায়, তেমনি শীতের আর্দ্রতা থেকে ত্বককে রক্ষা করা, রূপচর্চাতেও এই তেল কাজে লাগে।
৫. কোলেস্টেরল কিলার : ঘাতক কোলেস্টেরলকে হত্যা করে সজিনা আপনার হৃদপি-ের বন্ধু হয়ে উঠতে পারে। থাইল্যান্ডে বহু বছর ধরে সজিনাকে হৃদরোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ৩ মাসের ব্যবহারে এটি কোলেস্টেরল লেভেল অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে।
৬. আর্সেনিক দূষণ আর নয় : পানিতে আর্সেনিক দূষণ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এই সমস্যা নিরোধে সজিনার বীজ কিংবা পাতা ভূমিকা রাখে। এমনকি আর্সেনিক দূষণে আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করতে সজিনা বীজ বা পাতা ব্যবহার কার্যকরী।
এত উপকারী এবং সহজে প্রাপ্য সজিনার ব্যবহার এখনো আমাদের কাছে সীমিত পরিসরেই রয়ে গেছে। সজিনার ডাল আর তরকারির পাশাপাশি খুব সহজেই এর কচিপাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়। পালং, মূলা শাকের মতোই এটিকে রান্না করা যায়। এমনকি সালাদে টমেটো, শসার সঙ্গে সজনে পাতা ব্যবহার করা যায়। যেকোনো স্যুপেও কয়েকটি সজিনা পাতা বাড়তি স্বাদ আর পুষ্টি এনে দেবে। পাতা গুঁড়া বা বীজের তেল অবশ্য আমাদের দেশে সেভাবে ব্যবহৃত হয় না। সজিনার তেল অবশ্য বেশ দামি, অলিভ অয়েলের চেয়েও। আমরা চাইলে সজিনার তেল ও গুঁড়াকে বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত করার কথা ভাবতে পারি। ইউনানী ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বহু বছর ধরেই এর ব্যবহার চলে আসছে। আমরা নতুন করে এই সুপার ফুড আর বিস্ময়কর বৃক্ষের কথা ভাবতে পারি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন