রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

কাঞ্চন ফুল

“ ফাল্গুনে বিকশিত
কাঞ্চন ফুল ,
ডালে ডালে পুঞ্জিত
আম্রমুকুল ।
চঞ্চল মৌমাছি
গুঞ্জরি গায় ,
বেণুবনে মর্মরে
দক্ষিণবায় ”'

 



এই ফুলটার বাংলায় নাম কাঞ্চন। অন্যান্য নামের মধ্যে Dwarf White orchid tree, Dwarf white bauhinia ,Safed Kachnar ,Chingthrao angouba ,Vellai mandaarai , Mandaaram ,Kanchan , Mati-katota ,Sivamalli উল্লেখযোগ্য।
বৈজ্ঞানিক নামঃ Bauhinia acuminata এটি Caesalpiniaceae (Gulmohar family) পরিবারের অন্তর্গত একটি উদ্ভিদ ।

আমাদের দেশীয় ফুল কাঞ্চনের নাম জানে না বা শুনেনি এমন মানুষ হয়ত খুজে পাওয়া মুশকিল। দেবকাঞ্চন আর রক্তকাঞ্চন দেখতে প্রায় একই রকম হওয়ায় এদের আলাদা করতে বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়।
রক্তকাঞ্চন আর দেবকাঞ্চন ফুল আর গাছের পার্থক্য করা বেশ ঝামেলার। শুধু গাছ বা পাতা দেখে চেনা একটু মুশকিলই বটে। দুটি গাছে পাতা দেখতে প্রায় একই রকম। তারপরেও কিছু পার্থক্য গাছে আছে।আর এক প্রকার কাঞ্চন হলো শ্বেতকাঞ্চণ।

 


*দেবকাঞ্চন গাছের পাতা বড়, রক্তকাঞ্চনের পাতা তারচেয়ে ছোট।
*দেবকাঞ্চন গাছ রক্তকাঞ্চনের চেয়ে বড় হয়।
*রক্তকাঞ্চন গাছ বেশি দেখা যায়, দেবকাঞ্চন তেমন দেখা যায় না। নার্সারী বা রোড আইল্যান্ডে ছেঁটে ছোট করে রাখতে দেখা যায় রক্তকাঞ্চনকে কিন্তু দেবকাঞ্চন খুব বেশি চোখে পড়ে না।
*দেবকাঞ্চন ফুল ফোঁটে হেমন্তে আর রক্তকাঞ্চন বসন্তের ফুল।
*ফুলের পার্থক্য হচ্ছে- দেবকাঞ্চন ফুল অসমান, লম্বাটে পাপড়ির। আর রক্তকাঞ্চন ফুল পাপড়ি প্রশস্থ, ৫ পাপড়ির মধ্যে একটি বড় ও গাঢ় রঙের, তাতে কারুকাজ করা।
  নোটে দেবকাঞ্চন, রক্তকাঞ্চন আর শ্বেতকাঞ্চন ফুলের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়া হলো-ফুলের নাম- দেবকাঞ্চন
বৈজ্ঞানিক নাম- Bauhinia purpureaপরিবার- Casesalpinaceaeঅন্যান্য নাম- Butterfly tree, Pink butterfly tree, Purple bauhinia, Purple butterfly tree, Purple orchid tree দেবকাঞ্চনদেবকাঞ্চন
হিমালয়ের পাদদেশে ও আসামের পাহাড়ের প্রজাতি। মাঝারী আকারের অর্ধ-চিরসবুজ গাছ, ৮-১০মি উঁচু, মাথা ছড়ান। পাতা মাথার দিকে ২-বিভক্ত, লতির আগা চোখা বা ভোতা। ফুল ৬-৮ সেমি চওড়া, সুগন্ধি, সাদা বা বেগুনি। ফুল কয়েকটি একত্র, একটি ডাঁটায়, ফোটে হেমন্তে, সারা গাছ ভরে, অসমান ও লম্বাটে ৫ টি পাপড়ি, মুক্ত। শুঁটি ১০-৩০*২ সেমি, শিমের মতো। বীজ ১২-১৬ টি। চৈত্রমাসে নিষ্পত্রগাছে ঝুলন্ত ফলগুলি সশব্দে ফেটে বীজ ছড়ায়। বীজে চাষ। ফুলের নাম- রক্তকাঞ্চনবৈজ্ঞানিক নাম- Bauhinia variegataপরিবার- Casesalpinaceaeঅন্যান্য নাম- Orchid Tree, Varigated Bauhinia • হিন্দি: Kachnar कचनारরক্তকাঞ্চনরক্তকাঞ্চনভারতীয় প্রজাতি। দেবকাঞ্চনের চেয়ে আকারে ছোট, পাতার গড়ন তদ্রুপ, অর্থাৎ আগার দিকে ২-বিভক্ত, আকারে ছোট। বসন্তে প্রায় নিষ্পত্র গাছ বেগুনি রঙের সুগন্ধি ফুলে ছেয়ে থাকে। ৫ পাপড়ির মধ্যে একটি বড় ও গাঢ় রঙের, তাতে কারুকার্য। ফল শিমের মতো। একটি সাদা ফুলের প্রকারও আছে, ভারি সুন্দর। বীজে চাষ। কলমেও ধরে।

 

শ্বেতকাঞ্চন ( Dwarf White Bauhinia, White Orchid-tree and Snowy Orchid-tree) (বৈজ্ঞানিক নাম: Bauhinia acuminata) হচ্ছে Fabaceae পরিবারের একটি গুল্ম প্রজাতি। এদের বিস্তৃত চাষাবাদের জন্য আদি নিবাস বোঝা না গেলেও মনে করা হয় এরা মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া (জাভা, বোর্নিও, Kalimantan, Lesser Sunda Islands), এবং ফিলিপাইন থেকে এসেছে। শ্বেতকাঞ্চন ৩ মিটার পর্যন্ত উচু পত্রমোচী গাছ। পাতা ১০-১৫ সেমি দীর্ঘ এবং ৭-১২ সেমি প্রস্থ। পাতার আগা দুই ভাগে বিভক্ত, মসৃণ, নিচের শিরা সামান্য রোমশ। বসন্তের শেষ থেকে শরত পর্যন্ত ফুল হয়। পাতার কক্ষের একটি থোকায় কয়েকটি ফোটে, সাদা, গন্ধহীন, ৫ সেমি চওড়া, পাপড়ি সংখ্যা পাঁচটি এবং পাপড়ি মুক্ত। শুঁটি শিমের মতো চ্যাপ্টা, বিদারী ও ধুসর। বীজ কয়েকটি। বীজে চাষ। ছেঁটে ছেঁটে রাখা যায়।

 

এই প্রজাতির কাঞ্চন সাদা ছাড়াও ঘিয়ে রঙের হয়ে থাকে। ওঙ্কার ধামে এই দুই প্রজাতিরই  কাঞ্চন আছে। 

তথ্যসূত্র ও ছবি :-গুগল সৌজন্যে

 

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন