"দেখেছিল : বেহুলাও একদিন গাঙুড়ের জলে ভেলা নিয়ে-
কৃষ্ণা দ্বাদশীর জ্যোস্না যখন মরিয়া গেছে নদীর চড়ায়-
সোনালি ধানের পাশে অসংখ্য অশ্বথ বট দেখেছিল, হায়,
শ্যামার নরম গান শুনেছিল- একদিন অমরায় গিয়ে
ছিন্ন খঞ্জনার মতো যখন সে নেচেছিল ইন্দ্রের সভায়
বাংলার নদী মাঠ ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতো তার কেঁদেছিল পায়।"
-------- জীবনানন্দ দাশ
ভাঁটফুল দেখলে অনেকেরই ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে যায়। বিশেষ করে গ্রাম-বাংলায় যাদের বেড়ে ওঠা। ভাঁটফুল বসন্তের ফুল হলেও চৈত্রমাসে এর আধিক্য দেখা যায়, কেউ কেউ একে ঘেঁটুফুলও বলে। এটি মূলত বুনোফুল। যদিও ভাঁটফুলের সৌন্দর্য ও সৌরভ মানুষকে আকৃষ্ট করে। গ্রামে রাস্তার ধারে, টিলা পাহাড়ের গায়ে ব্যাপক ভাঁটফুলের দেখা মেলে। বৈজ্ঞানিক নাম clerodendrum viscosum. পরিবার Verbenaceae.
অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা এ ফুলটি প্রাকৃতিক মধু জোগানে অন্যতম উৎস। গাছের উপরিভাগ পুরোটাই ফুলে ফুলে পূর্ণ থাকে। আকৃতিতে বেলীফুল থেকে কিছুটা ছোট তবে পাঁপড়ি সাধারণত ছয়টি হয়ে থাকে। ফুলের মধ্যভাগে লাল ও পাপড়ির বেশির ভাগ অংশ সাদা রঙের হয়ে থাকে। প্রতিটি ফুলে পাঁচটি পুংকেশর থাকে। পাতার আকৃতি অনেকটা তামাক পাতার মতো। লম্বায় সাধারণত চার থেকে সাত ইঞ্চি। ক্ষুদি জামের মতো জ্যৈষ্ঠ মাসে ফল পাকে। এ ফল থেকে চারা হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন