আর এক সুন্দরীর কথা বলি ,স্বর্গের এই অপ্সরীর নাম 'অ্যাডেনিয়াম' , আফ্রিকান এই সুন্দরী বেশ দাম্ভিক ও , অবশ্য সুন্দরী কিন্নরীর দাম্ভিক হওয়াটা ই স্বাভাবিক।
প্রাকৃতিক বনসাই 'অ্যাডেনিয়াম' যাকে আমরা সাধারণত 'মরুভূমির গোলাপ' বলে জানি, যা Adenium obesum. কিন্তু পুরো ল্যাটিন নাম Adenium obesum var obesum। পুরোনো তথ্যে এই মরুভূমির গোলাপটি Adenium arabicum নামে পরিচিত।
অ্যাডেনিয়াম নামটি আরবিতে ওডাইন, যার অর্থ অ্যাডেন অর্থাৎ ইয়েমেনের পূর্ব নাম।কলকাতার ফুলবিজ্ঞানী সুবিল চন্দ্র দে তাঁর ফুলের চাষ বইয়ে এ ফুলের নাম দিয়েছেন ‘কিন্নরী’।
তিনি বইয়ে উল্লেখ করেছেন, ফুলটি সমতল বাংলায় যেকোনো মাটিতে সহজেই চাষ করা যায়। এটি টবে চাষের জন্য উপযুক্ত। বীজ থেকে এবং কাটিংয়ের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করা যায়। কয়েক রংয়ের অ্যাডেনিয়ামের কাটিং জোড় কলমের সাহায্যে এক গাছে অনেক রংঙের ফুল ফোটানো সম্ভব।
অ্যাডেনিয়ামের আদি মাতৃভূমি দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার মরুভূমি, সুদান, কেনিয়া, সেনেগালের পশ্চিমাঞ্চল, ইয়েমেন পর্যন্ত বিস্তৃত। এ ছাড়া উদ্ভিদটি প্রাকৃতিকভাবেই শ্রীলঙ্কাতেও আছে। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হচ্ছে থাইল্যান্ডে—এ ফুলের কদর ও সৌন্দর্যের কারণে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ফিলিপাইন, জাপান থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্য, এমনকি যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ও কানাডাতেও এর চাষ হচ্ছে। আমাদের দেশেও ও এর চাষ শুরু হয়েছে, তবে সব জায়গায় নয়।
অ্যাডেনিয়ামের আদি মাতৃভূমি দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার মরুভূমি। এপোচাইনেসি পরিবারভুক্ত গাছটি সাধারণত শীতের পর থেকে শীতের আগ পর্যন্ত অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অবিরাম ফুল দিয়ে থাকে। ফুলের রং সাধারণত গোলাপি থেকে লাল ও সাদা বর্ণের।
অ্যাডেনিয়াম গাছটি খুবই খরা-সহনশীল। এটি কাণ্ড ও শাখা-প্রশাখায় প্রচুর পরিমাণ জল ধারণ করে রাখতে পারে, যা খুব অল্প বৃষ্টিপাত ও খরার সময় ব্যবহার করে প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পারে। এর বৈশিষ্ট্য ও এর বাহ্যিক গঠনপ্রকৃতি অত্যন্ত আকর্ষণীয় এবং প্রাকৃতিকভাবেই এটি বনসাই প্রকৃতির বলে খরাপ্রবণ এলাকায় টবে চাষ করার জন্য খুবই উপযুক্ত একটি গাছ। সাত-আট দিন পর টবে অল্প কিছু জল দেওয়া ছাড়া আর তেমন পরিচর্যা লাগে না। একটি গাছ বাঁচতে পারে ৫০-৬০ বছর থেকে ১০০ বছর পর্যন্ত।
কিন্নরী আমার বড়ো প্রিয় ফুল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন